‘প্রজাপতি’ ও জেন-সাধকের গল্প  <br /> পার্থজিৎ চন্দ

‘প্রজাপতি’ ও জেন-সাধকের গল্প
পার্থজিৎ চন্দ

আজ তেইশ বৈশাখ, চোদ্দ’শো একত্রিশ বঙ্গাব্দের সন্ধ্যায় ১০ মার্চ, ১৯৩৯-এ তাঁর লেখা একটি কবিতার সামনে বসে জীবনের সহজতম একটি সত্য ধীরে-ধীরে উন্মোচিত হয়ে চলেছে। ক্রমশ সুস্পষ্ট হয়ে ধরা দিচ্ছে জেন-দর্শন থেকে তাঁর দিকে ছুটে আসা একটি প্রজাপতি; অথবা আরও হাজার হাজার বছর আগে উপনিষদের ছায়াপথ থেকে তার দিকে ধেয়ে আসা একটি শান্ত ঢেউ।
এখানে এ-প্রশ্ন তোলা নিরর্থক যে রবীন্দ্রনাথ তাও-দার্শনিক চুয়াং ৎসু’র সেই অভিজ্ঞতার কথা জানতেন কি না। এই কবিতাটির সামনে বসে মনে হয় উপনিষদ, জেন, রবীন্দ্রনাথ- অন্তর্নিহিত মহান সত্যের রুদ্ধ-দুয়ার খুলতে গিয়ে সবাই একটি মূল প্রশ্নের কাছেই ঘুরেফিরে এসেছেন।
অন্বেষী মনন থেকে চৈতন্য-বিকাশের পথে বারবার এবং সম্ভবত সমস্ত প্রশ্নকে অতিক্রম করে যে প্রশ্নটি মুখ্য হয়ে ওঠে তা হল- সত্যবস্তু ও পূর্ণত্বের সন্ধানের পথে এই ‘আমি’র বোধ, ধারণা ও অস্বিত্ব কোথা থেকে উৎপন্ন হয়! পৃথকত্বের থেকে একত্বের দিকে যাবার দিনে ‘আমি’র ভেতর শুধু এক ‘আমি’ই নয়, বহু ‘আমি’কে অতিক্রম করে যেতে হয়। কিন্তু প্রত্যক্ষবাদের দিনেও একটি প্রজাপতির স্বপ্নের ভেতর কি ঘুরে বেড়াচ্ছে আমার সত্তা? অথবা, ‘আমি’ই কি সে প্রজাপতি যে অনবরত দেখে চলেছি ও স্বপ্নেই নির্মাণ করে চলেছি ‘মানুষের বাস্তবতা’কে?
চুয়াং ৎসু’র কাহিনিটির সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের ‘প্রজাপতি’ কবিতাটির আশ্চর্য ভাবগত মিল রয়েছে; যদিও রবীন্দ্রনাথ আরও কয়েকটি বিষয়কে তাঁর সন্ধান-প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছিলেন। ৎসু’র কাহিনিটি ছিল এরকম-
মহান তাও-দার্শনিক ৎসু একদিন স্বপ্নে দেখলেন তিনি প্রজাপতি হয়ে এখানে-ওখানে উড়ে বেড়াচ্ছেন। ঘুমের মধ্যে তার মানবসত্তার কোনও অস্তিস্ব ছিল না। তখন তিনি একটি প্রজাপতিমাত্র। হঠাৎ’ই ঘুম ভেঙে গেলে তিনি নিজেকে ‘অবিষ্কার’ করলেন, নিজেকেই প্রশ্ন করলেন, ‘আমি কি পূর্বে (ঘুমের মধ্যে) একজন মানুষ ছিলাম, যে স্বপ্নে প্রজাপতি হয়েছিল? না কি, আমি এখন প্রজাপতি, যে জাগরিত এক মানুষের স্বপ্ন দেখছে?’
রবীন্দ্রনাথের উক্ত কবিতাটি শুরু হচ্ছে এভাবে,
‘সকালে উঠেই দেখি,
প্রজাপতি একি
আমার লেখার ঘরে
শেল্‌ফের ‘পরে
মেলেছে নিষ্পন্দ দুটি ডানা-
রেশমি সবুজ রঙ, তার ‘পরে সাদা রেখা টানা’।
-এর প্রায় এক-বছর পরে, লিখিত হয়েছিল, ‘রাতের গাড়ি’। সে-কবিতাটিরও নির্মাণ প্রায় এই কবিতাটির কাছাকাছি,
‘এ প্রাণ রাতের রেলগাড়ি
দিল পাড়ি-
কামরায় গাড়ি-ভরা ঘুম,
রজনী নিঝুম।
অসীম আঁধারে
কালি-লেপা কিছু-নয় মনে হয় যারে
নিদ্রার পারে রয়েছে সে
পরিচয়হারা দেশে’।
-এ-কবিতাটির উল্লেখ করা হল শুধুমাত্র নির্মাণের সাদৃশ্য বা ‘ঘুম-জগতের’ উল্লেখ রয়েছে বলে নয়; আরও কয়েকটি বিষয় আছে। সে প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে।
উৎ সু’র মতো রবীন্দ্রনাথের কবিতাটিও শুরু হচ্ছে ‘ঘুম’ থেমে জাগরণের ভেতর ‘জেগে’ ওঠার মধ্যে।
কিন্তু সে তো একটি প্রক্রিয়া মাত্র; জৈবিক। আসল দ্বন্দ্ব’তো ঘনিয়ে উঠেছে অন্য জায়গায়, কেন-উপনিষদের ‘কেনেষিতং পততী প্রেষিতং’ শ্লোকে সে প্রশ্ন ও দ্বন্দ্বের আভাস পাওয়া যাচ্ছে, ‘আমাদের মন কার ইচ্ছার দ্বারা প্রণোদিত হয়ে নিজের বিষয়ের প্রতি গমন করে অথবা কার দ্বারা প্রেরিত হয়ে মন অভিলষিত বিষয়ের প্রতি গমন করে?’
ইন্দ্রিয়ের প্রত্যক্ষতাকে অতিক্রম করে এখানে একটি ধ্রুবকের সাহায্য নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছিল, সে ধ্রুবকের মান ‘আত্মা’। চৈতন্যের স্বরূপ বহনকরা আত্মার কাছে এসে দাঁড়িয়েছিল ডিসকোর্স’টি। এবং সর্বগত ও সর্বাতীত পরমাত্মার ধারণাটিও এই পথ ধরেই উদ্ভুত।
রবীন্দ্রনাথের কবিতাটির কাছে ফিরে আসা যাক, তিনি আমাদের মৃদু অস্বস্তিতে ফেলে দিচ্ছেন, তিনি লিখছেন, ‘সন্ধ্যাবেলা বাতির আলোয় অকস্মাৎ / ঘরে ঢুকে সারা রাত / কী ভেবেছে কে জানে তা- / কোনোখানে হেথা / অরণ্যের বর্ণ গন্ধ নাই, / গৃহসজ্জা ওর কাছে সমস্ত বৃথাই।।’
কবি এখানে প্রজাপতির ভাবনা-প্রক্রিয়ার মধ্যে প্রবেশ করতে চাইছেন, ব্যর্থ হচ্ছেন এবং ধারণা-পোষণ করছেন- এ-গৃহসজ্জার কোনও অর্থ নেই প্রজাপতিটির কাছে।
কিন্তু এই একমাত্রিক, সরলরৈখিক, মনোলিথিক ‘ধারণা’ এক-মুহূর্তে ছারখার হয়ে যায়। ঘনিয়ে ওঠে বিপর্যাস, তিনিই ঘনিয়ে তোলেন, বস্তুসত্তার ভেতর আদি-প্রণোদনাটির কাছে পৌঁছে যাবার কথাই তো ছিল তাঁর-
‘বিচিত্র বোধের এই ভুবন;
লক্ষকোটি মন
একই বিশ্ব লক্ষকোটি করে জানে
রূপে রসে নানা অনুমানে।
লক্ষকোটি কেন্দ্র তারা জগতের;
সংখ্যাহীন স্বতন্ত্র পথের
জীবনযাত্রার যাত্রী,
দিনরাত্রি
নিজের স্বাতন্ত্র্যরক্ষা-কাজে
একান্ত রয়েছে বিশ্ব-মাঝে।।’
-অজ্ঞেয়বাদের ধূসর জগৎ থেকে এখানেই শিল্পের মুক্তি। এবং, শিল্পের এই মুক্তি ব্যতীত সৃষ্টির নাভিবিন্দুর কাছে পৌঁছানো অসম্ভব। সসীমত্বের বাইরে অবস্থান করা গূঢ়তম প্রশ্নটি শিল্প-নির্মিত; লক্ষ্য করার, বিশ্বচৈতন্যের অস্তিত্ব স্বীকার করে নিয়েও তিনি খণ্ড-অস্তিত্বের ‘একত্ব’কে অনুভব করছেন। প্রতিটি ‘এককের’ মধ্যে প্রবেশ করে দেখতে চাইছেন বিশ্বচৈতন্যের প্রবাহ এবং ছুঁতে চাইছেন সেই ‘এককের’ পূর্ণতাকে।
নিখিল-চৈতন্যের সাধক রবীন্দ্রনাথের লেখায় এভাবে এককের পূর্ণতাকে বরণ করে নেওয়ার উদাহরণ বেশি নেই। সঙ্গে-সঙ্গে এটি পরাপাঠের দরজাও খুলে দিচ্ছে।
ৎসু’র কাছে প্রজাপতি ও মানবসত্তার পৃথক অবস্থান ছিল না; আবার ভিন্ন অবস্থান থেক দেখলে এটিও সত্য যে তিনি দুটি অবস্থানের কোনও একটিকেও ‘অস্বীকার’ করেননি। দুটি অ্যভেনিউ খোলা, সেটি প্রজাপতি বা মানুষ- দুটি’র কোনও একটি হতে পারে। ৎসু’র সে জগত-ধারণা, সত্তার ধারণা রবীন্দ্রনাথের এ-কবিতায় লক্ষকোটি হয়ে ধরা দিয়েছে। ঘুম ও জাগরণের রূপক-অর্থের ভিতর উপনিষদের সেই শ্লোকটির কাছে আমাদের ফিরে আসতেই হয়, যেখানে বলা হচ্ছে- ‘যে এষ সুপ্তেষু…’; অর্থাৎ- সমস্ত প্রাণী নিদ্রিত হইলে যে পুরুষ (আত্মা) কাম্যবস্তু, পরম্পরা নির্মাণ করিতে করিতে জাগ্রত থাকেন তিনিই শুদ্ধ, তিনিই ব্রহ্ম, তিনি অমৃত বলিয়া কথিত হন’। রবীন্দ্রনাথের কবিতাটি এর খুব কাছাকাছি ঘুরতে-ঘুরতে পৃথক এক ঘূর্ণন তৈরি করে, কারণ, এখানে দ্বিতীয় একটি অবস্থার কথা তিনি বলছেন, ‘লক্ষকোটি কেন্দ্র তারা জগতের’।
যে মুহূর্তে তিনি এ-কথাগুলি লিখছেন সে মুহূর্তে এই ইউনিভার্সের মধ্যে তৈরি হয়ে যাচ্ছে কোটি-কোটি মাল্টিভার্স। এককের মধ্যে কোটি-কোটি ‘সম্পূর্ণ’; পৃথক-শর্তে একক।
এখানে আরও একটি শব্দ লক্ষ্য করার, ‘স্বাতন্ত্র্যরক্ষা’। বিপর্যাস সৃষ্টি হবার মুহূর্তে যে প্রশ্নটি আমাদের কাছে সব থেকে আগে ধরা দেবে তা হল- এই স্বাতন্ত্র্যরক্ষার শর্তেই কি তারা পৃথক? এই স্বাতন্ত্র্য ব্যতীত কি ‘বিশ্ব’ও পূর্ণতার কাছে পৌঁছাতে পারে না?
কিন্তু যুক্তি ও চিন্তার এই ধারাটিকেও ভেঙে দেবেন রবীন্দ্রনাথ কিছুটা পরেই; কারণ, তিনি লিখবেন,
‘প্রজাপতি বসে আছে কাব্যপুঁথির ‘পরে
স্পর্শে তারে করে,
চক্ষে দেখে তারে;
তার বেশি সত্য যাহা তাহা একেবারে
তার কাছে সত্য নয়,
অন্ধকারময়।’
-এখানে এসে ব্যক্তি-পাঠকের দ্বন্দ্ব শুরু- যে ‘একক’কে কবি জগতের কেন্দ্রে স্থাপন করলেন এখানে এসে সে-সত্তা’ই শুধুমাত্র স্পর্শ ও দর্শনের বাস্তবতার বাইরে বৃহত্তর ও মহত্তর বাস্তবতাকে চিহ্নিত করতে পারছে না।
পাঠক ধীরে-ধীরে প্রস্তুত হতে শুরু করেন প্রজাপতির অবস্থান থেকে সীমাবন্ধতা ও অসীমের ব্যবধানটুকু পার হয়ে যাবার জন্য। তাঁর কাছে ধরা দেয়, ‘লোভের অতীত যাহা। সুন্দর যা, অনির্বচনীয়, / যাহা প্রিয়- / সেই বোধ সীমাহীন দূরে আছে / তার কাছে।।’
তা হলে কি শুধুমাত্র সংখ্যাহীন স্বতন্ত্র পথের যাত্রী হওয়াই শেষ কথা নয়? তার থেকেও বৃহত্তর ও মহত্তর- অনিবর্চনীয় সুন্দরের স্পর্শ।
রবীন্দ্রনাথ স্পষ্টভাবে ঘোষণা করছেন তা এক ‘বোধ’। কবিতাটির শেষে এসে প্রজাপতির জগৎ থেকে কবি ‘ব্যক্তি-আমি’র জগতের দিকে দৃষ্টি দিচ্ছেন। ঘনিয়ে উঠছে রহস্য ও বহুমাত্রিক ব্যাখ্যার সম্ভাবনা। ‘বাস্তবতা’ নামক যে ফ্রেম ও ধারণাটিকে আমরা চূড়ান্ত সত্য বলে মেনে নিই তার দিকেই ছুটে যায় সন্দেহ।
এমনকি সত্য’ও যে এক ধরণের গৃহিত বাস্তবতার সামনে বা ভিতরে দাঁড়িয়ে অবাক নির্মাণ তারও ইঙ্গিত পাওয়া যায়, ‘আমি যেথা আছি / মন যে আপন টানে তাহা হতে সত্য লয় বাছি’।
এই যে মহা-প্রাচীর, একে অতিক্রম করে যাওয়া কি সম্ভব? কোনওদিন কি চৈতন্যের শেষ সীমাটুকু অতিক্রম করে গভীরতম বিন্দুতে পৌঁছানো সম্ভব? না কি এও সেই অন্তিমতত্ত্বকে ঘিরে থাকা প্যারাডক্সের মতই সত্য, যেখানে বলা হচ্ছে যদি কোনওদিন অন্তিমতত্ত্ব মানুষ ‘আবিষ্কার’ও করে উঠতে পারে তবু তারপর আরেকটি প্রশ্ন থেকে যাবে। থেকে যাবে আরেক জিজ্ঞাসা- যার উত্তর খুঁজতে নিজের পরিসীমাটিকে আবার প্রসারিত করতে হবে অন্তিমতত্ত্ব’কে- কে বা কী শর্ত বা তত্ত্ব নিয়ন্ত্রণ করছে এই অন্তিমতত্ত্বকে?
রবীন্দ্রনাথের কথায় আমরা পাচ্ছি,
‘জানে না যা, যার কাছে স্পষ্ট তাহা, হয়তো বা কাছে
এখনি সে এখানেই আছে
আমার চৈতন্যসীমা অতিক্রম করে বহুদূরে
রূপের অন্তরদেশে অপরূপপুরে।’
-এখান থেকে উঠে আসতে পারে আরেকটি প্রশ্ন’ও, বাস্তবতা ও সময়ের যে ‘নদী-সদৃশ’ ধারণাটিকে আমরা পুষ্টতা দিই তার বাইরেও কি রয়েছে আরও সম্ভাবনা? আমরা কি প্রত্যেকে ব্যক্তিগত সময়-ধারণা, বাস্তবতার ফ্রেম ও পৃথক-পৃথক ডায়ামেনশন নিয়ে অবস্থান করছি? অথবা, একটি মহাস্রোতের ভেতর দিয়ে ছুটে যাওয়া আরও কোটি-কোটি উপ-স্রোত সৃষ্টি হচ্ছে আমাদের চৈতন্যে-সৃষ্টির সঙ্গে-সঙ্গে? অথবা, সেই উপ-স্রোতই এককের চৈতন্য, যা ছুঁয়ে রয়েছে মহাস্রোতটিকে? না-হলে তিনি কেন লিখবেন, ‘সে আলোকে তার ঘর / যে আলো আমার অগোচর।।’
-১০ মার্চ, ১৯৩৯- বড় হাহাকারের মতো নিশ্চয় শান্তিনিকেতনে বেজে উঠেছিল তাঁর ব্যথা।
জীবনের প্রান্তে দাঁড়িয়ে এই হাহাকারই মহত্তম শিল্পের ইশারা ও প্রকাশ, ‘সে আলো’ আমার… ‘ব্যক্তি-আমার’… অগোচরেই থাকবে। তার ইশারা পাওয়া যাবে নিশ্চিত; তা না-হলে ‘তার ঘর’ ও ‘সে-আলো’কে চিহ্নিত করা যায় না। অর্থাৎ, ‘আমার’ কাছে তার ইশারা রয়েছে, থাকবে। কিন্তু সে অগোচর।
এখানে আরেকটি প্যারাডক্স, হঠাৎ, ব্যক্তি-পাঠককে বিমূঢ় করে দেবেই। একই সঙ্গে তার ঘরের আলোটিকে চেনা যাচ্ছে এবং স্বীকার করে নেওয়া হচ্ছে ‘অগোচর’ হিসাবে।
এক-বছর অতিক্রম করে ‘রাতের গাড়ি’তে তিনি লিখেছিলেন, ‘পরিচয়হারা দেশে’র কথা।
পরিচয়হারা দেশেই ‘তার’ ঘর। সে আলোও অগোচর; এই’ই শিল্প ও আদি-বেদনা। এই বেদনার বোধ ছাড়া সৃষ্টি অসম্পূর্ণ। খণ্ড ও পূর্ণের মধ্যে এই বেদনাই প্রজাপতির মতো ঘুরে বেড়ায়; হয়তো এই বেদনা আনন্দের’ও রূপ।
এই রূপ প্রথমে আমাদের কাছে টেনে আনে, তারপর ছায়াপথ থেকে ছায়াপথে ছুটিয়ে বেড়ায়। অন্তত তাঁকে ছুটিয়ে বেড়িয়েছিল। বড় হাহাকারময় সে ছুটে বেড়ানো।
অবশ্য তিনি এই ছায়াপথের নন; সেটি ভিন্ন প্রশ্ন ও বিষয়।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS Wordpress (0)

demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes
Checking your browser before accessing...