স্রোত পর্ব -৯
যশোধরা রায়চৌধুরী
২০১৩-১৪। কলকাতার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছেলেমেয়ে তৈরি করে একটা নতুন প্রবণতা। কয়েকটি মেয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনকে পোস্টার হিসেবে ব্যবহার করে তোলপাড় তুলে দেয়৷ এরা সব কেমন মেয়ে? কী চাইছে এরা? এই সব নিয়ে ও বাঙালি মধ্যবিত্তের ভুবনায়িত মূল্যবোধ নিয়েই "স্রোত"৷ গ্রন্থাকারে 'স্রোত' নাম দিয়ে একটি অতি সীমিত প্রকাশনা প্রচেষ্টাও হয়েছিল। তবে প্রকাশক সব কপিশুদ্ধু গায়েব হয়ে যাওয়াতে, স্রোতকে পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত আকারে এবার আবহমানের পাঠকদের কাছে ধারাবাহিকভাবে হাজির করার প্রচেষ্টা । "সম্পূর্ণ ভাবে নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা এমন উপন্যাস আমি আগে পড়িনি। নারীবাদী লেখকের লেখা উপন্যাস পড়েছি। কিন্তু তাতে পুরুষের লোলুপতা কে কাঠগড়ায় দাঁড়করানো আর নারীকে শিকার প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় প্রায়শই অবজেকট্ভিটি থাকেনি। এই উপন্যাসের শিকড় গেছে নারী জীবন যাপনের নানা স্তরে । এর মধ্যে আছে যে ভাষায় পুরুষতন্ত্র জীবনের ন্যারেটিভ এমনকি সাহিত্য ও রচনা করে , তার ইন্টারপ্রিটেশন। এতে স্পষ্ট কথা আছে, অভিমান আছে, হাস্যরস এবং অসহায়তাও আছে । এবং সর্বোপরি পুরুষকে নিজের জীবনে জড়িয়ে নেওয়ার আকাঙ্খা।..এখনকার ছেলে মেয়ে দের হাতে ই তুলে দেওয়া কাহিনীর ব্যাটন, এদের স্পস্ট করে দেখা, বলতে পারা ও অতীতের বোঝা নামিয়ে রেখে পথ চলার সাহস কে কুর্ণিশ জানিয়েছেন যশোধরা। মুক্তি এরাই আনবে। যৌনতার রহস্যময়তার আবরণ উন্মোচন করে তথ্যের নিরপেক্ষতার মধ্যে উত্তরণ।যশোধরার Clarity of perspective অতি তীক্ষ্ণ। সবমিলিয়ে উপন্যাস টি মনোভংগি ভাষা ও কাহিনী সর্ব অর্থে আধুনিক। একে বারে রিয়েল টাইমে দাঁড়িয়ে লেখা। দেশ কাল সময় ও ব্যক্তি সত্ত্বার বিশাল ব্যাপ্তিকে বিন্দুতে এনে কিভাবে প্রতিবাদের ভাষা নির্মান করেছেন যশোধরা। নির্য্যাস হয়ে মনে রয়ে যায়, পুরুষকে বিযুক্ত করার অভিপ্রায় নয়, তার সংগে আবার প্রথম থেকে পড়া জীবনের পাঠ।" ( অনিতা অগ্নিহোত্রী)
৯
পুরুষের মাসিক উত্তরণ
সেদিনই গ্লোরিয়া স্টেইনেমের একটা লেখা পড়ে জাস্ট বিন্দাস হয়ে গেল অলক্তিকা। পুরুষদের যদি মেনস্ট্রুয়েশন হত তাহলে কী কী হতে পারত। প্রথমত, বিষয়টা তাহলে লজ্জার বা লুকনো থাকত না আর। হত অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। যেরকম বড় বড় যুদ্ধে কে কত রক্তপাত ঘটিয়ে আসছে তা মধ্যযুগে বীরত্বের লক্ষণ ছিল, ঠিক তেমনি , পুরুষ গলার শিরা ফুলিয়ে দাপটের সঙ্গে দাবি করত, মাসিকে তার কত গ্যালন রক্ত ঝরেছে। বলত, এই কষ্ট করে সে পিতৃত্ব পেয়েছে, তাই এর দাম সন্তানদের চোকাতে হবে। নারী, যা যা প্রাকৃতিক শারীরবৃত্তীয় কারণের জন্য ভয়ে কুঁচকে থাকে, পুরুষের যদি সেই সব ঘটনা ঘটত, সে হত বিশালভাবে পূজ্য।
যে ক্ষমতার পাল্লাভারির দিকে, সেই তো নিজের সব কিছুকে সেলিব্রেট করে, ‘উল্লাস!’ বলে বুক বাজায়। শারীরিক ক্ষমতার জন্য পুরুষ নাকি নারীর ওপরে। কিন্তু তাই যদি হয়, তাহলে দাসপ্রথার সময়ে শারীরিক ক্ষমতা বেশি থাকাকে কালোচামড়ার মানুষদের ক্ষেত্রে “দাস হবার জন্য বিধাতার প্রাকৃতিক দান” বলে বিবেচনা করা হত কেন? বেশি খাটতে পারে, তাই ওদের দাস হতে হবে, সাদাচামড়ারা অতটা পরিশ্রম করতে পারেনা, এজন্যই তাদের প্রভুত্ব স্বাভাবিক, এমন যুক্তি যারা দিয়েছিল, তারাই আবার নারী পুরুষ অসঙ্গতির ক্ষেত্রে গপ্পোটাকে উলটে দিল, বলল, পুরুষ বেশি শক্তিশালী তাই সে হবে প্রভু।
যখন যেমন তখন তেমন যুক্তি। ক্ষমতার লোকেরা ঠিক এটাই করে। হ্যাঁ।
যাদবপুরে অন্ধকার এক সন্ধেতে, স্বাতীর সঙ্গে ব্যাপারটা ঘটেছে যেদিন, তার পরদিনই ওরা স্যানিটারি ন্যাপকিনের প্যাকেট কিনে এনে ব্ল্যাক মার্কার দিয়ে বড় বড় করে প্রতিবাদী স্লোগানগুলো লিখল। “আমাদের আঘাত করছ কিন্তু জেনো, আঘাতেরও আছে প্রত্যাঘাত”।
লিখল, এই শরীর তোমার যুদ্ধক্ষেত্র নয়, পুরুষ।
লিখল, লজ্জা দিয়ে আমাদের মুখ বন্ধ রাখা আর যাবেনা।
পরদিন থেকে ছিছিক্কার, পরদিন থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় আবার খবরের শীর্ষে। মিডিয়ায় ছয়লাপ এই দৃশ্য। সাদা স্যানিটারি প্যাডকে পোস্টারের মত করে ব্যবহার করে কিছু ছাত্র ( না , না, ছাত্রীই !) সর্বত্র দৃশ্যদূষণ ঘটিয়ে ফেলেছে।
লোকজন বলতে শুরু করে দিল, আরেব্বাস, এ যে দেখছি পড়াশুনোর ধারে কাটছে না। হুল্লোড় আর বেলেল্লাপনার ভারে কাটছে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় খবরের শীর্ষ থেকে কিছুতেই নামতে চাইছে না। সবই ভুল কারণের জন্য।
প্রথমে হোক ঝঞ্ঝা। তারপর হোক চুম্বন।
এখন স্যানিটারি ন্যাপকিন ক্যাম্পেন।
এই ঘুর্নিঝড়ের চোখের ভেতর থেকে উঠে এল অলক্তিকা নামের এক মেয়ে।
চাপা ঠোঁট, চাপা রঙ। পানপাতার মত মুখ। অদ্ভুত মনের জোর। যখন প্রথম ওখানে পড়তে যায়, পাড়ায় অনেক বন্ধু ছিল। পুরনো স্কুলের বন্ধুও।
একটু একটু করে পাড়ার লোক ওকে এড়িয়ে চলতে শুরু করল। তারপর পুরনো বন্ধুরাও খসে পড়ল। একদিন নিজের মত করে থাকতে থাকতে অলক্তিকা একটা আলাদা পৃথিবীকে ছুঁয়ে ফেলল। নিজের একটা জায়গা। চিন্তার জায়গা। গুটি পাঁচ ছয় বন্ধু, যার মধ্যে তিনজন মেয়ে ওর বুকের পাঁজরের মত প্রিয়…
বাইরে অনেক শত্রু। বাবা মাও প্রথমে ওর পাশে দাঁড়ায়নি। পারবে কি করে। সিপিএম হলেও, ওদের চিন্তারও তো লিমিটেশন আছে।
মাঝে মাঝে ও বলে, তুমি কে হে, অলক্তিকা চক্রবর্তী। তোমাকে লোকে ভুল বোঝে । বুঝবেই। তোমার সোশ্যাল ক্লাস নিয়ে ঠেশ দেয় টীকা টিপ্পনী কাটে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এ তোমাদের কথা শুনতে শুনতে কত লোক তোমাদের মত মেনে নেয় কিন্তু তার থেকেও অনেক বেশি নিন্দেতে মুখর হয় আরো অনেকে। ট্রোল করে। সাংঘাতিক নোংরা, কুৎসিত ভাষায় ট্রোলড হয়েছে ওরা। রেপ করে দেব ধরে ধরে… মেয়েগুলো পেয়েছে কি? এসব লিখে চলেছে অনবরত কিছু অজানা মুখ… ফেক আইডির আড়ালের মানুষ। অথবা প্রকাশ্যেই লিখছে। ভার্চুয়ালে সব চলে। কজনকে ব্লক করবে তুমি। কজনকে রিপোর্ট এগেইন্সট করবে?
তবে আরো খারাপ হল নামহীন মুখহীন পাবলিক। ছিছিক্কার করছে তারা। জনগণ। ওদের দক্ষিণ ভারতীয় স্যার সুব্রহ্মণ্যম বলতেন “জেনেগেন” । ওরা হাসত। চোলছে চোলবে কালচার বলতেন। ওরা হাসত।
পাবলিক, সেই অদৃশ্য অথচ সর্বত্রগ্রামী জেনেগেন, ওদের বলে, এরা সব বড়লোকের বেটি। ছোট থেকে যা চেয়েছে পেয়েছে। আজ পশ্চিমি স্টাইলের গিমিক দিচ্ছে, চেষ্টা করছে সস্তা পাবলিসিটি পেতে যা খুশি তাই করতে। ছ্যা ছ্যা, দামি স্যানিটারি প্যাড সস্তা পেয়ে গেছে? জানো, ভারতের কত মেয়ে অ্যাফোর্ড করতে পারেনা প্যাড।
ঘরে বাচ্চারা থাকলে এরা স্যানিটারি ন্যাপকিনের অ্যাড শুরু হলে অস্বস্তি পায়। বন্ধ করে দেয় বা চ্যানেল ঘুরিয়ে দেয় টিভির।
হ্যাঁ হ্যাঁ, আমার মা বাবা দুজনেই শিক্ষিত। একজন অধ্যাপক, অন্যজন ইস্কুল দিদিমণি। মা আবার সি পি এম ও করে। একসময় কবিতা লিখত মা। সব কবিতার শেষে একটা লাল সূর্য উঠত পূর্ব দিগন্তে।
সেই অলক্তিকা খবরের শীর্ষে উঠে গেছে। ওর বাবা মা যা কোনদিন পারেনি। ভাবেনি। এবারও বাবা মা ভয় পেয়েছিল।
অলক্তিকার পরনে ওপরে ব্রাউন ঢোলা টি শার্ট, আর নিচে আরো বেশি ঢোলা, ছোট ছোট এথনিক প্রিন্টের পালাজো প্যান্ট। গুজরাতি কাপড়। ঝলমলে।
ওর চোখে কাজলের রেখা বাদ দিলে আর কোন প্রসাধন নেই। চুল চুড়ো করে বাঁধা রাবার ব্যান্ড দিয়ে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের “হোক ঝঞ্ঝা” আন্দোলন। সেই হোক ঝঞ্ঝা পুজো প্যান্ডেল থেকে শুরু করে মেলা, খেলার মাঠ অথবা যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল অথবা স্ট্রিট কর্নারিং করেছে। অদ্ভুত এক উন্মাদনা ছেয়েছে ছেলেমেয়েদের মন।
ছাত্রদের মধ্য থেকে “আমরা বিপন্ন” নামে একটা গ্রুপ উঠে এসেছে অতি সম্প্রতি। অ্যান্টি স্টেট তো বটেই। অ্যান্টি এস্টাবলিশমেন্ট। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর মহীতোষ চ্যাটার্জিকে কেস খাইয়ে দিয়েছে এই “আমরা বিপন্ন”। ভিসি জানে না, এমনকি আচার্য স্বয়ং গভর্নর জানেন না, অধ্যাপকরাও জানে না, কেউ জানে না, এদের কী করে কনট্রোল করতে হয়। কী ভাষায় বললে ছেলেমেয়েগুলো বুঝবে।
তারপরই আবার এই ন্যাপকিন কান্ড। সেটাই অলক্তিকাকে তুলে দিয়েছে কোথায়। টিভির সব চ্যাট শো-এর সামনের সারির মুখ এখন ও। অসম্ভব ফোকাসড মেয়ে। খুব সোজাসাপটা স্পষ্ট করে বলে আর ভাবে। দেখতে সাধারণ, গোলগাল মুখ, মিষ্টিই বলা যায়। আলাদা করে ফ্যাশনেবল নয়, কিন্তু আলগা শ্রীর সঙ্গে সামান্য কাজলটানা দুটো কালো চোখ আছে।
“হোক ঝঞ্ঝা”র কারণ যদি ছাত্রদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সমস্যা, যেটার শুরুও মেয়েদের জন্য টয়লেটের অপ্রতুলতার সমস্যা নিয়ে চেঁচামেচির থেকেই, তাহলে এই স্যানিটারি ন্যাপকিন কান্ড শুরু হয়েছিল দ্বিতীয় আরেকটা স্পেসিফিক ঘটনা থেকে।
হোক ঝঞ্ঝার শুরুটা এইরকম। বয়েজ হোস্টেলের কাছে একটা আন্তঃকলেজ ফেস্টিভ্যালের সময়ে একটি মেয়ে মলেস্টেড হয়েছিল। ইঞ্জিনিয়ারিং এর তিন চারটে ছেলে ওকে বাজেভাবে ছোঁয়। ও একা লেডিস টয়লেট গিয়েছিল… একটাই লেডিজ টয়লেট সেদিন খোলা ছিল। ছেলেগুলো জটলা করে বসেছিল হোস্টেলের সিঁড়িতে। একা মেয়ে দেখে তাদের প্রাণে লাড্ডু ফুটছিল , এখনকার ভাষায়। তারা ওকে ঘিরে ধরে। এবং বেশ খানিকক্ষণ পরে প্রাণপণ দৌড়ে মেয়েটি যখন ফিরে আসে নিজের বন্ধুদের বৃত্তে, তখন সে বিস্রস্ত, চুন্নি মাটিতে লুটোচ্ছে, চোখের কাজল লেপ্টে গেছে। মানসিক আঘাত আরো অনেক গভীর।
তারপর নালিশ জানানোর সেই দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক প্রক্রিয়া। ভিক্টিমের ওপর এ যেন দ্বিতীয় অত্যাচার। যা প্রায় মানসিক বলাৎকারের সমতুল।
উপাচার্য থেকে শুরু করে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট কমপ্লেন্টস কমিটি কেউ সঠিক স্টেপ নেয়নি। কোন অ্যাকশনই হয়নি প্রথমটা। পরে, যখন কমপ্লেন্টস কমিটি বসল, তারাও মেয়েটিকেই প্রথমে দুষল। ডাকসাইটে অধ্যাপিকা সঙ্ঘমিত্রা সরকার, ইংরেজি ডিপার্টমেন্টের হেড, কমিটির চেয়ার পার্সন , তিনি মেয়েটির বাড়ি গিয়ে বলে বসলেন, তুমি সেদিন কী জামাকাপড় পরে ছিলে? তুমি কি মদ্যপান করেছিলে? ওয়্যার ইউ আন্ডার দ্য ইনফ্লুয়েন্স অফ এনি কাইন্ড অফ ড্রাগস?
মেয়েটি, মেয়েটির পরিবার অপমানিত বোধ করে। ভিক্টিমের চরিত্র হনন করে, ভিক্টিম অ্যাবিউজ করে, অপরাধের গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়া পুরনো ট্যাকটিক্স। কলেজের ইঞ্জিনিয়ারিং এর ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রদের কেরিয়ার বাঁচাতেই , কমপ্লেন্টস কমিটি এভাবে মেয়েটির ওপর কিছুটা দায় চাপিয়ে একটা হালকাফুলকা অভিযোগ লিখিয়ে অল্প শাস্তির মধ্যে দিয়ে ছেলেগুলোকে ছাড় দিয়ে দিতে চাইছে। ছাত্রছাত্রীরা এটাই বুঝল। আর ফেটে পড়ল তারা। এইভাবেই শুরু “হোক ঝঞ্ঝা” আন্দোলনের। যেটা প্রায় এক রকমের অতিবিখ্যাত ঢেউ… যাদবপুরের ছেলেমেয়েদের নামে কিছু লোকের নাক শিঁটকে উঠত তখন… এমনকি , এইট বি বাস স্ট্যান্ডের সামনে পাবলিক প্লেসে পরস্পরকে চুম্বন করে এক জোড়া ছেলেমেয়ে তখন ট্রোলড হচ্ছে খুব… সেটাও নাকি “হোক চুম্বন” নামে একটা আন্দোলনের রূপ নেবে, গুজব রটেছে খুব। মানুষের গসিপ-রঞ্জিত মনের খোরাক হল আরেকটা। গভীর ও জটিল ইস্যু, সত্যিকারের অর্থপূর্ণ ইস্যু নিয়ে কেউ আর ভাবিত নয়।
দ্বিতীয়বারও প্রায় একই রকমের কান্ড। আবার কেন মোলস্টেড হল স্বাতী? ওর ডিপার্টমেন্টে যদি মেয়েদের টয়লেট থাকত, ওর ডিপার্টমেন্টে যদি একটা স্যানিটারি ন্যাপকিন ডিসপেনসার থাকত, ওকে বেরোতে হত না। সন্ধে সাড়ে সাতটায় লাইব্রেরি ওয়ার্ক কমপ্লিট করে তারপর মেল হোস্টেলের চত্ত্বর পেরিয়ে ও ড্রাগস্টোরে গেছিল স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনতে। ফিরে এসে বন্ধুদের সঙ্গে একসঙ্গে বেরোবে। এর ভেতরেই দুটো ছেলে বেরিয়ে এসে ওর সঙ্গে অদ্ভুত আচরণ শুরু করে, অদ্ভুত কথাবার্তা বলে। তারপর টেনে নিয়ে যেতে চায় সিঁড়ির নীচে।
নিজের ব্যাগ দিয়ে ওদের ঠেকিয়ে, কোনমতে পালিয়ে আসে স্বাতী। ফিরেই ডিপার্টমেন্টে ব্যাপারটা জানায়। ছেলেগুলোকে ও চেনেনা, কিন্তু আইডেন্টিফাই তো করানোই যেত। উলটে হেড ডিপ ব্যাপারটা চাপাচুপি দিয়ে দিতে ব্যস্ত হয়ে উঠলেন।
তদ্ভব চট্টোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এর বেশি আর কীই বা আশা করা যেতে পারে?