স্রোত <br /> পর্ব ৫ <br />   যশোধরা রায়চৌধুরী

স্রোত
পর্ব ৫
যশোধরা রায়চৌধুরী

কয়েক বছর আগে আরম্ভ পত্রিকায় কিস্তিতে কিস্তিতে প্রকাশিত হয়েছিল যশোধরা রায়চৌধুরীর অন্য নামে একটি উপন্যাস, যার উপজীব্য হল, সমসাময়িক কালখন্ড আর কিছু তরুণ তরুণীর লড়াই । গ্রন্থাকারে 'স্রোত' নাম দিয়ে একটি অতি সীমিত প্রকাশনা প্রচেষ্টাও হয়েছিল। তবে প্রকাশক সব কপিশুদ্ধু গায়েব হয়ে যাওয়াতে, স্রোতকে পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত আকারে এবার আবহমানের পাঠকদের কাছে ধারাবাহিকভাবে হাজির করার প্রচেষ্টা । "সম্পূর্ণ ভাবে নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা এমন উপন্যাস আমি আগে পড়িনি। নারীবাদী লেখকের লেখা উপন্যাস পড়েছি। কিন্তু তাতে পুরুষের লোলুপতা কে কাঠগড়ায় দাঁড়করানো আর নারীকে শিকার প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় প্রায়শই অবজেকট্ভিটি থাকেনি। এই উপন্যাসের শিকড় গেছে নারী জীবন যাপনের নানা স্তরে । এর মধ্যে আছে যে ভাষায় পুরুষতন্ত্র জীবনের ন্যারেটিভ এমনকি সাহিত্য ও রচনা করে , তার ইন্টারপ্রিটেশন। এতে স্পষ্ট কথা আছে, অভিমান আছে, হাস্যরস এবং অসহায়তাও আছে । এবং সর্বোপরি পুরুষকে নিজের জীবনে জড়িয়ে নেওয়ার আকাঙ্খা।..এখনকার ছেলে মেয়ে দের হাতে ই তুলে দেওয়া কাহিনীর ব্যাটন, এদের স্পষ্ট করে দেখা, বলতে পারা ও অতীতের বোঝা নামিয়ে রেখে পথ চলার সাহস কে কুর্ণিশ জানিয়েছেন যশোধরা। মুক্তি এরাই আনবে। যৌনতার রহস্যময়তার আবরণ উন্মোচন করে তথ্যের নিরপেক্ষতার মধ্যে উত্তরণ।যশোধরার Clarity of perspective অতি তীক্ষ্ণ। সবমিলিয়ে উপন্যাস টি মনোভংগি ভাষা ও কাহিনী সর্ব অর্থে আধুনিক। একে বারে রিয়েল টাইমে দাঁড়িয়ে লেখা। দেশ কাল সময় ও ব্যক্তি সত্ত্বার বিশাল ব্যাপ্তিকে বিন্দুতে এনে কিভাবে প্রতিবাদের ভাষা নির্মান করেছেন যশোধরা। নির্য্যাস হয়ে মনে রয়ে যায়, পুরুষকে বিযুক্ত করার অভিপ্রায় নয়, তার সংগে আবার প্রথম থেকে পড়া জীবনের পাঠ।" ( অনিতা অগ্নিহোত্রী) "লেখক যশোধরা রায়চৌধুরী, তাঁর চাকুরি প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তরের, তাঁর গল্পের ভুবন প্রচলিত ভাবনাচিন্তার একেবারেই বাইরে। তিনি তাঁর লেখায় অণুবীক্ষণ দিয়ে মানুষের জীবনযাপনকে দেখতে চান, তাঁর গল্পে সেন্টিমেন্ট কম, বাস্তবতা বেশি। যেমন তাঁর গল্পে এক চাকুরে তরুণী মেল ট্রেনের নাইটজার্নি করে উপরের সিটের কাউকে অনুরোধ করে বার্থ বদলাবদলি করে পট করে উঠে যায় ও ঘুমিয়ে পড়ে। ...তাঁর শেষ উপন্যাস স্রোত -এ নারীস্বাধীনতার চূড়ান্ত ছবি। প্রতিটি নারীচরিত্র স্রোতের বাইরে গিয়ে কথা বলে। পুরনো ধ্যানধারণা ভেঙেচুরে ফেলতে চায়। সাম্প্রতিক কালে কলকাতার কোনও এক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েরা প্রতিবাদ করেছিল তাদের অন্তর্বাসের ওপর প্রতিবাদের কথাগুলো লিখে তা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে একের পর এক টাঙিয়ে দিয়ে। স্রোত এমন আধুনিক সব বিষয়ে আলোকপাত করেছে যা কিছুকাল আগেও কল্পনা করা যেত না। এ যুগের নারীসত্তার এক অনন্য প্রতিফলন। " ( তপন বন্দ্যোপাধ্যায়-এর "ইদানীঙ কার বাংলা গল্প উপন্যাসে লেখিকাদের নারীসত্তার উপস্থিতি" প্রবন্ধ থেকে, প্রকাশিত আরাত্রিক পত্রিকা ২০২১)। পঞ্চম পর্ব।


মানসীর ঘরতোলা

মানসী রোজ পাঁচটায় বেরোয়। গোবরডাঙা থেকে লোকাল ট্রেনে তিনঘন্টা জার্নি করে কলকাতা পৌঁছয় আটটায়। বিধাননগরে নেমে সল্ট লেকে ঢুকতে ঢুকতে সাড়ে আটটা পার। রোজ স্বস্তিকা বৌদি আড় চোখে দেখে আর বলে, আজও আধঘন্টা পরে ঢুকলে মানসী। নাকি এটাই সিস্টেম করে নিলে?
তবে বৌদি লোক খারাপ নয়। না, শুধু মাঝে মাঝেই পুরনো শাড়ি দেয় তার জন্য নয়। মানসীর কথা জানতেও চায়।

প্রথম দিকে ভারি ক্যাবলা আর আনাড়ি টাইপের ছিল মানসী। ঘরের যে কেউ যা ফরমাশ করত সে করে দিত। এখন সেয়ানা হয়ে গিয়েছে। অনেক কায়দা শিখে ফেলেছে । যতটুকু কাজ তার করার বরাদ্দ, তার বাইরে সে করবেই না।
বৌদি হয়ত তাকে বলছে, একটু চায়ের কাপগুলো দিয়ে যাও না মানসী!
সেটা তো তার কাজ না। কাজ তো প্রাংশু হাজরার দেখভাল দলাইমলাই, ্পেচ্ছাপ পায়খানা পরিষ্কার, খাওয়ানো দাওয়ানো, ওঁর খাবারটুকুনি গরম করে দেওয়া। তা সত্ত্বেও কত বাড়তি কাজ যে করতে হয়। মাসিমা বললে অন্য খাবারগুলোও গরম করে নেওয়া, এটা ওটা সেটা।
তারপর বউদি চায়ের কাপ বলবে, নিজেরা নড়ে না বসে ওকে বলবে বাথরুম থেকে কাচার কাপড়গুলো একটু বার করে নিয়ে যাবে, গো?
ও কেন করবে?
তখন অদ্ভুত না বোঝার চাহনি দেয় মানসী। ন্যাকামি করে। বলে, কোন বালতিটা? কোন কাপটা? দু তিনবার ভুল কাপটা তুলে নিয়ে আসে।
বৌদি বুঝে গেছে। স্পষ্ট মেসেজ পেয়ে গেছে, মানসী বুঝিয়ে দিচ্ছে তোমাদের কাপ চেনা আমার কাজ না। দুটো সরু পেট, ফাঁদালো মুখ কাপে চা খায় বৌদিরা। সে কাপদুটো দাদা বৌদির, লক্ষ লক্ষ বার দেখেছে তাদের সে কাপে চা খেতে। তবু না জেনে বাদামি , একটা কোণা ভাঙা কাপ এনে মানসী তাদের বুঝিয়ে দেবে, এগুলো জানা আমার কাজ নয়। আমি তাই জানব না, যাও।
**
মানসী প্রথম কাজে নেমেছিল ১৬-১৭ বছর বয়সে। সে সময়ে সে হাতিবাগানের মোড়ে এসে একটা ব্লাউজের দোকান থেকে এক ডজন ব্লাউজ তুলত, আর সায়া। সব কাটিং করা। শুধু সেলাইটুকুনি করা। হপ্তায় দুদিন জিনিস তুলত। হাটের দিনের আগের দিনে এসে মাল ডেলিভারি দিত। পাঁচ টাকা ছটা সায়া সেলাইতে পেত।
ট্রেনে বিনা টিকিটে যাতায়াত করলে সে পাঁচটা টাকাই বা কম কি ছিল। তারপর হাতিবাগানের দিকেই আয়ার কাজ পেল, দিনে ১৮ টাকা। আজ ২৫০ টাকা পায় যে কাজে তার দাম ছিল ১৮ টাকা । ভাবলে হাসিই পায়। সেই কুড়িবাইশ বছরের মেয়ে আয়ার কাজ করে করে আজ এসে দাঁড়িয়েছে পয়ঁতাল্লিশের পাকা আয়ামাসির জীবনে। অভিজ্ঞতায় ঝুনো হয়েছে।
ফাঁকা বাড়িতে পুরুষমানুষের কাজ নেবেনা, নেবেনা অকাজের চাকরিও। এক বাড়িতে বলেছিল সব টাকাই দেবে কিন্তু কাজ নেই , শুধু বসে থাকা কাজ। তিনদিন চারদিন করেই মন কু গেয়েছিল, কী জানি বাবা এদের মতলব। সকাল নটা অব্দি ঘুমোয় বাড়ির বউ , বর, ওকে বলে তুমি ঘরে এসে এবার ঘুমোও সোফায় শুয়ে। এ কেমন ধারা কথা।
সে কাজ করেনি । খাটনি ছাড়া পয়সা রোজকার করতে কেমন ছ্যাঁক ছ্যাঁক করে উঠেছিল গা।

মানসীর একটাই ছেলে। বর অনেকদিন বাড়ি বসা। আগে যে চাকরিটা করত, সেটা পাকা ছিল না কখনো কিন্তু কেউ জানত না। একটা দোকানের চাকরি। সেটা চলে গেল নিজেরই দোষে। চাকরির পাশাপাশি ব্যবসা করতে শুরু করেছিল বিধান, কিন্তু সেরকম বৈষয়িক বুদ্ধি টুদ্ধি ছিল না লোকটার। খুব ভাল রান্না করে বলে এখনো গৌড়ীয় কীর্তন সংঘ থেকে ওকে ডাকে, উৎসবের সময় খিচুড়ি আলুরদম বোঁদে রেঁধে দিয়ে আসে। বছরে পুজোটা আসটায় রান্নার কাজ করে, পরদিনের জন্য অনেকটা খাবার নিয়ে পোঁটলায় বেঁধে আসে বিধান। কিন্তু পাকাপাকি রান্নার কেটারিং খুলতে গিয়ে পয়সা জলে দিয়ে হেরে বসে থাকল।
মানসী, বাবার খাবারটা দিয়েছ?
সকালে ইনসুলিন নেন প্রাংশু হাজরা। সঙ্গে সঙ্গে খাবারটা দিতে হয়। দেরি হলে সুগার ফল করে যাবে। আটটা থেকে সাড়ে আটটা মালিশ। নটায় ইনসুলিন, সোয়া নটার মধ্যে একটা মাখন ছাড়া পাউঁরুটির স্লাইস আর ডিমের সাদাটা কায়দা করে খোলা থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে পোচ। ডিমের হলুদ থেকে যাবে খোলাতেই। সেই হলুদ পরে পেয়াঁজ দিয়ে ভেজে খাবে মানসী। পাঁউরুটির পিঠের স্লাইস দিয়ে। শক্ত কড়কড়ে করে ভেজে নেয় পিঠটা। বিস্কুটের মত লাগে। একটু তেল ছিটে দিয়ে ঐরকম। ভাজাভাজা, দিব্যি।
ছেলের জন্য মন খারাপ করে মানসীর। এরই মধ্যে হাত পুড়িয়ে রেঁধে খায় ছেলে। বাবাটা বাউন্ডুলে আদ্ধেক দিন ঘরে থাকে না। ছেলে বি এ পাস পড়ছে। তিনটে টিউশন করে এরই মধ্যে।
রাত করে ঘরে ফিরে দুটো সুখদুঃখের কথা বলবে ছেলের সঙ্গে ভাবে। ভাবতে ভাবতেই ঘুম এসে যায়। সারাদিনের খাটুনি।
সারাদিনে অবিশ্যি মোবাইলে কথা বলে। ছেলেকে দুপুরে বলে, কী রাঁধলি বাবু?
বৌদিরা বলে সেলোফোন। ওদের সব যন্ত্রে হয়। ঘরে গড়াগড়ি খায় সেলোফোন, কম্পুটার। মাঝে মাঝেই মাসিমা ওয়াশিং মেশিং চালায়। বেশি কাপড় পড়লে, কাচাকাচির মেয়েটা না এলে। আবার বৌদি খাবার গরম করে মাইকোভেব মেশিং এ। কী সব খায়, একটু গরম করে খানিকটা সস ঢেলে নিয়ে। খুব কম একটু আধটু রাঁধে বৌদি। তবে একদিন চাউ করেছিল বেশ ভাল খেতে হয়েছিল সেটা।
মানসী ছেলের খবর নিতে নিতে ভাবে, ওর একটা নতুন ফোন কিনতে হবে। অনেকদিন ধরে বলছে ছেলে । মা, স্মাটফোন চাই। আঙুলে ছুঁইয়ে বাঁদিক থেকে ডানদিকে হুশ হুশ করে পাখি তাড়ানোর মত করে ছবি দেখে সবাই। ট্রেনে দেখে। ওই ফোন।
এই তেরো বছর আয়ার কাজ করে অনেকটা সংসার গুছিয়ে এনেছে মানসী। দেড় লাখ টাকায় ঘর পাকা করেছে। প্রথমে মেঝে ঢেলেছে। অনেক ঘেঁষ কম দামে পেয়ে গেছিল স্টেশনের ওপারের একটা ট্রাক ড্রাইভারের কাছ থেকে। কাদের বাড়ি ভাঙা হচ্ছিল সেই রাবিশ তুলছিল স্বপন। ওর সঙ্গে স্টেশনেই আলাপ।
মেঝে পাকা করেছে কত কষ্টে। ঘেঁষ ঢেলেছে। তার ওপর ইঁট পেতেছে এক থাক। সিমেন্ট দিয়ে জমিয়েছে। তারপর দেওয়াল দিয়েছে। একটার পর একটা ধাপ পেরোতে ধার নিতে হয়েছে। অনেকটা রাস্তা । কষ্ট হয়েছে। নিজের শখ আহ্লাদ ছেড়ে দাঁতে দাঁত চেপে ও টাকা জমিয়েছে। মাসে তখন আড়াইহাজার পেত। এখন প্রায় সাড়ে ছ হাজার।
খরচও তো বেড়ে যাচ্ছে। অটো বাস কিছু একটা নিতেই হয় বিধাননগরে নেমে। স্টেশন চত্বরে খিদে পেলেও খিদে চেপে থাকে মানসী। চা খাওয়ার জন্যও থামে না। অন্যেরা অনেকেই চা লেড়ো বিস্কুট খেয়ে নেয়, চাঙা হবার জন্য। একটা জিলিপি খেতে সন্ধেবেলা ট্রেন লেট থাকলে ইচ্ছে করে। যদিও বেরোবার আগে মাসিমাদের জন্য চা করে, চা করার পর ঢেলে নেয় এক কাপ নিজের জন্য। মাসিমাই বিস্কুট দেয়, অনেক সময় পড়ে থাকা তলানি চানাচুর বা ছোলাভাজা ঢেলে দেয়। সেসব খেয়েই বেরোয়।
আজ বৌদি বেশ মজা করেছে। হঠাৎ ওর মোবাইলটার দিকে তাকিয়ে বলে কি, আচ্ছা মানসী , আমরা যে শুনি, মোবাইলে অনেকরকমের ফোন আসে, কত মেয়েরা খারাপ লোকের পাল্লায় পড়ে যায় মোবাইলে কথা বলতে বলতে অচেনা লোকের সঙ্গে, তোমার কখনো সেরকম হয়েছে?
মানসী ফিক করে হেসে ফেলেছে। বলেছে, না না বৌদি ওসবে আমি খুব ভয় পাই। হ্যাঁ, মিথ্যে বলব না, অনেকে এসব করে । আমার ট্রেনেই আসে আর একটা মেয়ে রত্না, আয়ার কাজ করে , ওকে একবার একটা ছেলে ধরেছিল। ছেলেটা ওর বরের ভাই হয় দূর সম্পর্কের। কিন্তু পরে বোঝা গেল খুব খারাপ ছেলে, একদম সকাল থেকে রাত্তির ফোণ করে করে বিরক্ত করত। ভালবাসার কথা বলত…
মুখ টিপে হেসে চুপ করে গেল মানসী।
তারপর কথা ঘুরিয়ে নিল। বলল, আমি এসব খুব ভয় পাই। আসলে গোবরড্যাঙায় আমার শ্বশুরবাড়ির লোক ভর্তি। দুতিন পাড়া জুড়ে আমার স্বামীর আত্মীয়রা থাকে। অনেক ভাশুর দেওর জা আমার। কে কোতায় দেকে নেবে। আমার খুব ভয়। আমার স্বামী যত খুশি জ্বালাক আমায়, সংসারে টাকা না ঢালুক, অন্য মেয়ে টেয়ে নিয়ে থাকে না তো। আমিই বা কেন অন্যদিকে মন দেব।
বৌদি চুপ করে শুনেছিল। তারপর নিজের কাজ নিয়ে বসে গেছিল। এক কাপ চা করে দেবে মানসী?
ল্যাপটপ খুলে বসেছিল স্বস্তিকা। ভাবছিল। একটু আগেই ফেসবুকে বাছা বাছা সামাজিক বক্তব্য দিয়ে স্ট্যাটাস পেশ করেছিল প্রথমা। সেইটা পড়ে কিছু একটা জুতসই লোকদেখানো কমেন্ট লিখতে হবে তাকে।
কত তো নারিবাদী পেপার লেখে প্রথমারা। ফেমিনিস্ট প্রবন্ধ লেখে কাগজে। হিন্দু অথবা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে ওর সারগর্ভ বক্তব্য বেরোয়। প্রথমার মত বান্ধবীরা, যারা সর্বক্ষণ এ সি ঘরে বসে মেয়েদের অবস্থা ও অবস্থান নিয়ে লড়ে যাচ্ছে, তাদের কাছে মানসীর মত পিসরা একটা করে অবজেক্ট । অবজার্ভেশনের ল্যাব। তার বেশি কিছু না।
স্বস্তিকা ভাবছিল, প্রথমাকে বলবে, সমাজ পরিবর্তন ভাগ্যিস হল না রে। হলে, বাড়িতে কাজ করার লোক পেতাম ? পেতাম না। সব কাজ নিজেদের করতে হত।
মানসী চা করল, তারপর খাবার গরম করে প্রাংশুকে সেবার দীর্ঘ কর্মপ্রক্রিয়ায় জড়িয়ে গেল। তেল মাখানো চান করানো খাওয়ানো। ধরে ধরে তোলা, বসানো , শোয়ানো । প্রাংশুর ঠিক দু থেকে তিনদিন লেগেছিল, মানসীর স্পর্শ চিনে নিতে । মানসী যখন কাজে আসে, তার আগের আয়া সুমতির চলে যাওয়ার ঠিক দু তিনদিন পর, সে সময়ে খুব ভায়োলেন্ট হয়ে গিয়েছিলেন প্রাংশু। অ্যালজাইমারের পেশেন্ট।
অপরিচিত হাত তাঁকে সেবা করতে চাইছে, নাকি আঘাত করতে, শরীরের প্রতিটি অণুপরমাণু দিয়ে বুঝতে চাইছিলেন প্রাংশু। মগজ দিয়ে নয়। কারণ মগজে অনেকটাই অসাড়তা ভর করেছে।
মানসীর নারীসুলভ নরম, যত্নশীল হাতদুটিকে বিশ্বাস করতে সময় লাগেনি, অশীতিপর প্রাংশুর প্রতিটি দেহকোষের।

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS Wordpress (0)

demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes