দেবাশিস তেওয়ারীর কবিতাগুচ্ছ
কষ্ট
ব্যতিহারে ভেসে যায় বেলা
সূর্য বসে আছে নবপাটে
কষ্টের যে অপচয়, তাকে ভেদ জ্ঞান করে
যে ছায়া শূন্যের দিকে উড়ে চলে যায়
সে-তো কুলকুণ্ডলিনী কুলীনের ঘরের বামনী
আকার-ইঙ্গিত বুঝে ত্রস্ত ধরাকাছা বুকে
লালপেড়ে আঁচলের যে-জল ছেটায়
ধারাঘুম ভেঙে গেলে কথা ওঠে পষ্ট
সরষের চালাকি নিয়ে ভূত খুঁজি, কষ্ট পাই,
কষ্ট ।
কণ্ঠযোগে
মাত্রা নিয়ে ব্যস্ত যে যার বিকেল
ত্রস্ত আগুন, ত্রস্ত মাত্রাছাড়া
গোল করছি ধস্ত, বাইসিকেল
NRC কর, পরে ওদের তাড়া
ওরা মানে আসাম আমজনতা
ওরা মানে খাওয়ার পাতে নুন
ওরা মানে ঘুরতে যাওয়ার সতা
ওরা মানে ত্রস্ত— আমআগুন
মাত্রা নিয়ে ব্যস্ত যে যার বিকেল
নিয়মগুলো শিকল হয়ে দোলে
তামার সাথে কোবাল্ট কিংবা নিকেল
কঠিন কড়া, কণ্ঠযোগে ঝোলে
বন্ধন
নিবে আসে রোদ্দুরের চড়া
রত অর্থে নিবে যায় ঘুম
বেদনার অনুভবে বড়া
ভাজা খাচ্ছি, ভেজে দিচ্ছে রুম
সে-তো নিরাময়, সে-তো কালী
পরার্থপরতা নিয়ে আছে
আস্বাদন দেয় হাততালি
ঝালেঝোলে ক’টা দিন বাঁচে
বাকি থাকা ডিমের কুসুম
বুদ্ধি করে ফেলে দিই হাটে
রতি নিয়ে নিবে আসে ঘুম
দ্রিমিদ্রিমি দিনগুলো কাটে
দ্রিমিদ্রিমি রাত তো কাটে না
সংশয়, হতাশা, গিলছে শুধু
দিনাতিদিনের মধ্যে দেনা
টেনে নিচ্ছে মাঠকে মাঠ ধূ ধূ
চোখে আর কিছুই দেখি না
ঝরে যাওয়া পল্লবিত আঁখি
সে কী দেখছে— কোটি কোটি তৃণা
কোটি হাতে বেঁধে দিচ্ছে রাখি
গোপন দেরাজ খুলে
ডাক্তারের ব্যক্তিমূল্য কিছুতেই বুঝতে পারি না। নৈরাশ্য আর নিরাশা আমার দুই সহচর।অনেকসময় লিখতে চেষ্টা করি। শব্দের হাতে প্রাণশক্তি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। ব্যধি থেকে জন্ম নেয় অধিসত্তা, আধিভৌতিক, আধিদৈবিক। প্রখর সন্তাপ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছে ক্রমশ। ম্যারাথন দৌড়ে এবার হয়তো হোঁচট খাব, নয়তো পিছিয়ে পড়ব আমি। আমার আড়ালে যে কুলুঙ্গি, যে গোপন কুঠুরি, যে অদৃশ্য ঘরের চাবি অহরহ খুঁজে যাচ্ছি, এতদিনে বুঝতে পারছি তাতে কোনও লাভ নেই। অন্যের উপস্থিতি আমাকে আরও বেশি নিঃসঙ্গ করে দেয়। আমার রাতের খেয়ালি পতঙ্গগুলো অন্ধকারে প্রাণ পায় আরও। এ যে কী ভীষণ যন্ত্রণা আমার শরীর থেকে মেখে নেয় লেখার শরীরে, তারপর, প্রাণে প্রাণে বেঁচে থাকে মায়াঘুম অন্ধ-চরাচর ! ডাক্তার নিত্যসঙ্গি,নিয়মিত ওষুধ, সন্দেহ, মানসিক প্রত্যাঘাত, ভয়। পিছতে পিছতে মন কোনঠাসা হয়ে যায়, গোপন দেরাজ খুলে ঘাপটি মেরে থাকি সবসময় !
আয়ুষ্মান গাছ
কষ্টের অলীকশয্যা পাতা আছে নীচে
সংশয় জানে না তার কথা
কেবল, দু’বাহু মেলে দৌড়বাজ পাখিদের মতো বেদনার ডানাটিকে আড়াল করতে গিয়ে যে-ক্ষতটি বেরিয়ে পড়েছে
তার নাম দগদগে ক্ষত
তীব্র তার নাচ
ক্রমে ক্রমে ধীরে ধীরে বিষিয়ে তুলেছে দেহ
পুরো একটা আয়ুষ্মান গাছ ।
ব্যর্থতার ঢেউ
ক্ষত ক্ষত যন্ত্রণার ক্ষত
লিখে যাই আমি অবিরত
লিখে যাই নির্নিমেষ আয়ু
ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে পড়ছে স্নায়ু
স্নায়ু থেকে আত্মার দেহটি
ক্রমে আলগা হতে হতে কোটি
অণু-পরমাণু নিয়ে রাগে
সূঁচ ঢুকলে যেভাবে এসে লাগে
হতাশার তীব্র এক শ্বাস
আত্মাগাছ— বেদনা, বিশ্বাস
বিশ্বাস, বোঝে না ওরে কেউ
ভেসে যায় ব্যর্থতার ঢেউ
আমকাকা
আমকাকাদের রামবাগানে
বুনোহনু শুনছে মানে
মানে বলতে নানান স্বর
মাথার উপর যাদের ঘর
ঘরের কাছে আমজনতা
ভাঙতে ভাঙতে জুড়ছে প্রথা
প্রথায় যখন বাগান ওড়ে
রাজা-মন্ত্রী-নৌকা-বোড়ে
সরেজমিন সাজায় আসর
ঘণ্টা থেকে সোজা কাঁসর
হুল ফোটাচ্ছে তবলা-গানে
আমকাকাদের রামবাগানে
অসাধারণ একগুচ্ছ কবিতা পড়লেম। দেবাশিস এ সময়ের একজন মৌলিক কবি । কবি দেবাশিস তেওয়ারীর জন্য অভিনন্দন ও শুভ কামনা । ধন্যবাদ জানাই আবহমান সম্পাদনা পর্ষদ কে।
অনেক ভালোবাসা আমার দাদা ফজলুল হককে।দাদার আশীর্বাদ মাথার উপরে তো আছেই। ভালো থাকবেন দাদা❤️🙏
নানা ভাব নানা ভাষা । কবির নিজস্ব ভাবভঙ্গি। কখনও ব্যক্তিক , কখনও নৈর্ব্যক্তিক। নানা স্বাদ। তবে অবশ্যই অনুভবে। কবির জয় হোক।
আপনিও ভালো থাকুন।আপনারও জয় হোক, জয় হোক, হোক জয়
এক ঝাঁক কবিতা। খুব ভালো লাগলো দেবাশীষ
শুভকামনা নিরন্ত……
Sir, ভালোবাসা জানবেন। ভালো থাকবেন। আনন্দবাজারের লেখা পড়ে জানাব স্যার
I feel this is among the such a lot important information for me.
And i’m glad reading your article. However should observation on few general things,
The website style is perfect, the articles is really excellent :
D. Just right task, cheers