গোমুখ হয়ে কালিন্দী খাল পেরিয়ে বদ্রীনাথ – ফিরে দেখা <br />অরুণ ভট্টাচার্য

গোমুখ হয়ে কালিন্দী খাল পেরিয়ে বদ্রীনাথ – ফিরে দেখা
অরুণ ভট্টাচার্য

পর্ব-এক

পটভূমি

হিমালয় ভ্রমণকে একটু ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বোঝা যাবে যে হিমালয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে যাওয়ার মানে সীমান্তবর্তী অঞ্চলে গমন। এবং আরো দূরবর্তী এলাকায় ভ্রমণ করা মানে ভারত ও তৎকালীন তিব্বত বা এখনকার চিন সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যাওয়া। ১৯৬২ সালে ভারত ও ্রচিনের মধ্যে যুদ্ধের পরে ঐ সকল স্থানে হিমালয় ভ্রমণ আগের মতো সহজ ছিল না। সহজ বলতে এই যুদ্ধের আগে হিমালয়ের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে যাওয়ার ক্ষেত্রে সরকারী বিধিনিষেধ তেমন কঠোর ছিল  না। আর যুদ্ধের পরে বহুকাল সীমান্তবর্তী অনেক জায়গার ধারে-কাছে যাওয়াও নিষিদ্ধ ছিল। এই রকমই একটি স্থান হল কালিন্দী খাল অতিক্রম করে বদ্রীনাথ ভ্রমণ। গঙ্গোত্রী থেকে গোমুখ হয়ে কালিন্দী খাল অবধি যাওয়ার অনুমতি মিলত, কিন্তু ওখানেই থামতে হতো, আর এগোনো যেত না। অর্থাৎ, কালিন্দী খাল থেকে পুরোনো পথে গোমুখ – গঙ্গোত্রী হয়ে ফিরতে হতো।

 

১৯৮৪ সালে প্রথম ভারতীয় মহিলা এভারেস্ট বিজয়ী বাচেন্দ্রী পালের নেতৃত্বে একটি দল কালিন্দী খাল অতিক্রম করে। যতদূর সম্ভব, ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পর এটিই প্রথম সিভিলিয়ান দল যাঁরা কালিন্দী খাল অতিক্রম করে বদ্রীনাথ যাবার সরকারী অনুমতি পান। ১৯৯০ সালে রকস অ্যান্ড ট্রেকস নামে একটি কলকাতার দল অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে কালিন্দী খাল অতিক্রম করে বদ্রীনাথ যাবার সরকারী অনুমতি পায় আর বোধহয় এটিই দ্বিতীয় সিভিলিয়ান দল। তবে এই অনুমতিই যথেষ্ট নয়, দলের সদস্যদের উপর নানান বিধিনিষেধের শর্তাবলী মেনে চলার ফরমান জারী করা হয়। দলের জন্য একটি ক্যামেরা বরাদ্দ ছিল।

 

বলাবাহুল্য, সে সময় ইন্টারনেট নামক শব্দটি ভারতবাসীর কাছে অপরিচিত, তার ব্যবহার তো দূর-অস্ত। অথেনটিক কনট্যোর মানচিত্র জোগাড় করা রীতিমত এক লড়াই। ছিলনা আজকের মতো অসংখ্য বিশ্বাস্য-অবিশ্বাস্য অ্যাডভেঞ্চার এজেন্সী। যাত্রাপথের পরিকাঠামোর কোনো রেডিমেড ইন্তেজাম ছিল না। ভাল গাইড়কে খুঁজে পাওয়া আরেক প্রস্থ লড়াই। তাঁবু থেকে শুরু করে খাবার-দাবার পর্যন্ত সবকিছুই সংগ্রহ করা অভিযাত্রী দলের দায়িত্ব। অনেক দিনের অনেক পরিকল্পনার সার্থক রূপায়ণ করলে তখনকার এই ধরনের হিমালয় অভিযান সফল হতো।

 

তবে তৎকালীন হিমালয় পর্বতাভিযানের সেইসব অসুবিধাগুলি সেসময় অসুবিধা বলে মনেও আসত না। যেমন ধরা যাক, যার বাড়ি থেকে বাস-রাস্তা তিন কিলোমিটার বা আরো দূরে, তার কাছে এই দূরত্ব একটি সংখ্যা মাত্র, কারণ সে অভ্যস্ত এই পথ যাতায়াত করতে। আর এই সব অসুবিধাগুলির মোকাবিলা করতে গিয়ে অনেক কিছু শেখা যেত। যেমন, শেখা যেত কনট্যোর মানচিত্র রিডিং। যা সাধারণ মানচিত্র থেকে আলাদা। শেখা যেত, যাত্রাপথের চারপাশের পরিচয়, পর্বতশৃঙ্গগুলির অবস্থান সম্বন্ধে সম্যক ধারণা। ট্রেকপথে কী ধরণের সামগ্রী একটি দলকে সঙ্গে নিতে হয়, প্রতিটি সদস্যকে কোন কোন দরকারী জিনিস সঙ্গে নিতে হবে। আর নিজ মালপত্র বহন করার রূকস্যাক, স্লিপিং ব্যাগ ইত্যাদি। আর দলের জন্য পাহাডিয়া সামগ্রী যেমন আইস-অ্যাক্স, ক্লাইম্বিং রোপ, ক্যারাবাইনার ইত্যাদি। অভিযানের চার-পাঁচ মাস আগে থেকে প্রস্তুতি শুরু। সহস্যদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা। আজকাল গুগল-এর সাহায্যে যে কোন না-যাওয়া জায়গার ছবি দেখা যায়, ফলে চাক্ষুষ দর্শনের সময় তেমন চমক থাকে না। অথচ গুগলের সৃষ্টির আগে না-যাওয়া জায়গা সম্বন্ধে এক ধরনের রহস্য ও আকর্ষণ বিরাজ করত।

 

 

 

 

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes