বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের গল্প : এক দুরারোগ্য আঙুলের ভাষা
সুদীপ বসু

পঞ্চাশটি গল্প : বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়; আত্মজা পাবলিশার্স; মূল্য ৪৫০ টাকা

বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের গল্প : এক দুরারোগ্য আঙুলের ভাষা <br />সুদীপ  বসু

Doty, if I confess that I do not love you,
Will you let me alone? I burn for my own lies.
The nights electrocute my fugitive
My mind. I run like a bewildered mad
At St. Claire Sanitarium, who lurk,
Arch and cunning, under the Maple trees,
Pleased to be playing guilty after dark.
Starting to bed, they croon self-lullabies.
Doty, you make me sick. I am not dead,
I croon my tears at fifty cents per line?
-James Wright
(At the Executed Murderer’s Grave)

‘যারা মিথ্যে কথা বলে তাদের সঙ্গে খেলিনা, ঠোঁট না ফুলিয়ে, খেলা ছেড়ে চলে যাচ্ছিল রুমা। আর তাকে এক হাতে থামাতে চেষ্টা করে যাচ্ছিল রশিদ। রশিদের বাগান বাড়িতে ওরা পাঁচজন এসেছে আজ সকালে। উপলক্ষ্য রশিদের মেয়ে টিয়ার জন্মদিন। টিয়ার সবে তিন বছর হবে। দুপুর সাড়ে বারোটায় আজ বেশ গরম পড়েছে। সেবার মেঘ করেছিল, মানে যেদিন টিয়া প্রথম পৃথিবীর মুখ দেখবে পার্ক সার্কাসের এক নার্সিং হোমের দোতলার লেবার রুমে।…’
গল্পটা শুরু হচ্ছে এইভাবে। শেষ হচ্ছে – ‘তখন হঠাৎ বাচ্চা ট্যা ট্যা করে কেঁদে উঠেছিল। সবাই এ ওর মুখের দিকে তাকিয়ে।… সেদিন থেকেই ওর নাম নিয়ে কোন সমস্যাই হয়নি। ওর ডাকনাম অন্য কিছু হতেই পারে না। তাই ওর নাম টিয়াই থেকে গেছে।’
গল্পের মাঝখানে শুধু টিয়ানাম্নী মেয়েটির জন্মদিনটির বিবরণ। খবর পেয়ে কে কে নার্সিংহোমে এসেছিলেন, কী বললেন ওঁরা, নার্সের সঙ্গে কথপোকথন ইত্যাদি। শেষও হয়েছে শিশুটির কান্না ও নামকরণের ভেতর দিয়ে। তাহলে প্রশ্ন হল গল্পের শুরুর ওই রুমা কে? কেন সে ঠোঁট ফুলিয়ে খেলা ছেড়ে চলে যাচ্ছিল? রশিদ তো বুঝলাম, কিন্তু রুমার সঙ্গে তার সম্পর্ক কী? কেন রশিদ তাকে থামাতে চেষ্টা করছিল। অর্থাৎ গল্প শুরু হল একভাবে এবং সেখানে বিশেষ এক বিন্দুতে পৌঁছে অন্য ঠিকানায় ঘুরে গেল। আর সেখানে ফিরে এল না। ‘নামে কী আসে যায়’ গল্পটিতে রুমা ও আরও চারজন চিরতরে হারিয়ে গেল।
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পূর্ণ ঘটনাবিহীন অনাড়ম্বর এই গল্পটি তার স্ট্রাকচার ও ট্রিটমেন্টের জায়গা থেকে আমাকে আশ্চর্য করেছে।
‘ফ্রক ছাড়ার পর’ – এই পাতা দেড়েকের গল্পটি শুধুমাত্র মুহূর্তের স্মৃতিরোমন্থন। একটা ফ্ল্যাশ। ম্যাজেন্টা রঙের একটা বাতাস। কে স্মৃতিরোমন্থন করছে? অদিতি? না অদিতির হয়ে কনক নিজে? অথবা দুজনের বাইরে তৃতীয় কেউ? কৃষ্ণা হোমটাস্কের খাতায় গোপনে অদিতিকে (ডাকনাম রিন্টু) উদ্দেশ্য করে লিখে রাখছে ‘মাই লাভ, মাই ফেভারিট’। এদিকে অদিতি দেবাশিসদার সাইকেলে চেপে উড়ে যাচ্ছে পুরনো গির্জার দিকে। এদিকে এখন ঘণ্টা বাজিয়ে অ্যাম্বুলেন্স যাচ্ছে আর আসছে। দেবাশিসদা ঝড়ের উল্টোদিকে ছুটে যাচ্ছে। ছোট্ট গল্প। কিন্তু প্রশ্ন তোলে আদৌ গল্প হল কি? শুরু হল কি? শেষ হল কি? গল্পের মোড়কে পাঠক স্বস্তি পেল কি? নাকি এলোমেলো কয়েকটা লাইন এসে তাকে স্বস্তিপ্রদেশের বাইরে উড়িয়ে নিয়ে গেল। সেখানে গিয়ে পড়লে সে বাঁচবে তো? জলছাড়া মাছ।
অস্ট্রিয়ান ঔপন্যাসিক ও নাট্যকার টমাস বেনহার্ডের ছোটগল্পের বই ‘দ্য ভয়েস ইমিটেটর’ সম্বন্ধে বলতে গিয়ে সমালোচক টোবি পার্কার রিজ লিখেছিলেন ‘In each story something happens, the universe shrugs and everything goes back to normal. To be more specific though, something terrible happens, the universe shrugs and a new story begins.’ আর লেখক নিজে চিত্রপরিচালক ফেরি রাডাক্সকে একটি তথ্যচিত্রে সরাসরি জানিয়েছেন – ‘I am hardly a cherry author, no storyteller. I basically detest stories. I am a story destroyer.’
অনেকদিন বাদে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের ‘পঞ্চাশটি গল্প’-এর মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে এই কথাগুলো ফের মনে পড়ল।
যেমন ‘রহমানের পাখি’ গল্পটি। ট্যাক্সি ড্রাইভার রহমানের মা মরে যাবার সাতদিনের মাথায় তার টালির ঘরের জানলায় একটা সবুজ ল্যাজঝোলা টিয়া এসে বসে। রহমান স্পষ্ট শুনতে পায় পাখিটা রহমানকে তার ভাষায় বলছে, ‘পুষবি পাখি পুষবি।‘ রহমান পোষে না। কিন্তু বহুদিন পাখিটার চোখদুটো ভুলতে পারে না। যেমন মায়ের কান্না। আব্বার ফেলে যাওয়া চটিজুতো। পরে সে রথের মেলা থেকে একটি পাখি কেনে। আর তাকে নিয়েই থাকে। এই পাখিটা দিনে তিন চারবার ডাকে। বিকেলে আজান গায়। কিন্তু আচমকা পাখিটা ডাকা বন্ধ করে দেয়। রহমান উন্মাদ হয়ে যায়। পাখি আর কোনোদিন ডাকে না। কিছু কিছু লোক এখনও বিশ্বাস করে তারা গভীর রাতে অদ্ভুত কিছু শব্দ শুনতে পায়। পাখিটা কি তবে সত্যি ডেকেছিল?
গল্পের নাম ‘সুলেমান ও আমি’। ৫ ফুট ১১, ফর্সা, গালে চাপ দাড়ি, মাথায় বাহারি টুপি। চরিত্রের নাম সুলেমান। বয়স তিরিশও পেরোয়নি। মাতৃহীন। বাবা ফেরার। ইস্তানবুলের বাজারে ফলবিক্রেতা পিসির কাছে মানুষ। হঠাৎ পিসি মারা গেল। সেই থেকে সুলেমান ইস্তানবুল বাজারের তরমুজ বিক্রেতা। দাসির মেয়ে ষোল বছরের অপরূপা নাসিমের সঙ্গে ওর শাদি হয়ে গেল। এদিকে দেশের রানি রূপবান সুলেমানের রূপের খুব ভক্ত। তার সঙ্গে অনেকটা সময় নির্জনে কাটান। নাসিম সব টের পায় আর তার চোখের মণিদুটো বেড়ালের চোখের মত সবুজ হয়ে যায়। একদিন সুলেমানের পৌরুষের আর বীরত্বের পরীক্ষা নিতে, রানি তাকে পাঠালেন সিংহশিকারে। কেবল একটা বর্শা আর একটা উট নিয়ে সুলেমান গেল গভীর জঙ্গলে সিংহনিধনে এবং বলাবাহুল্য দুটি হিংস্র সিংহের হাতে প্রাণ দিল। ইস্তানবুলের রানি নিস্পৃহ রইলেন, নাসিম গোপনে পালিয়ে গেল। সুলেমানের প্রতি এই দুই নারীর আধিপত্যের আড়াআড়ি ভাবে রাখা দুটি তরবারির মাঝখানে রয়ে গেল নিহত সুলেমানের অস্পষ্ট অভিমানী মুখ।
‘রোহিণী ও সাবমেরিন’-এর গল্পেও কোনো মোড় নেই, নেই কোনো চমক। অবিনাশ ওরফে নন্দবাবু, স্বপনের ন’পিসি রোহিণী, রোহিণীর সাবমেরিন, ডিনামাইট ক্লাবের ছেলেরা, জাহাজী ছেলে শিশির, অপঘাতে মৃতা রোহিণীর অপচ্ছায়া, রাধা ঠাকুমা, এসবের ভেতর দিয়ে খুব স্বচ্ছন্দেই কলমচালনা করেন বিশ্বজিৎ। কিছু কিছু টুকরো টুকরো ছিন্ন মুহূর্ত তৈরি করেন। এবং ট্রিটমেন্টের গুণেই পাঠক নিটফল কিছু না পেয়েও আচ্ছন্ন হয়ে যায়। ট্রিটমেন্ট আর আবহরচনা— গা ছমছমে রহস্যঘন একটা আধিভৌতিক পরিস্থিতিকে কত অনুত্তেজিত নির্লিপ্তভাবে ব্যবহার করেন লেখক।
‘এক মানবীর কাহিনী’ গল্পে নতুন কাজের বুয়া ভোররাতের নির্জনে দরজায় এসে দাঁড়ায়, লম্বা দোহারা গড়ন, একটু চাপা রঙ, নখ ছোট, ডান নাকে নাকফুল… এবং সেইদিন রাতেই কাজ ছেড়ে চলে যায়— ঘোর লাগে সে কি সত্যিই মানুষ, নাকি মানুষের চেহারায় ‘মানবী’, নাকি একটি বিশেষ সন্ধ্যার চোখের ভুল? পরিপ্রেক্ষিতকে অস্পষ্ট রেখে, গল্প অসমাপ্ত রেখে লেখক মাঝপথে গল্পের হাত ছেড়ে দেন। গল্পকে ছেড়ে বেরিয়ে যায় চরিত্র। গল্পের ঠাণ্ডা অমীমাংসিত কাঠামো পড়ে থাকে শুধু।
আর একটি অদ্ভুত গল্প ‘এক সকালের গল্প’। প্রায় অকারণে, অথবা সামান্য কারণে, অস্পষ্ট অজুহাতে গল্পকথককে ছেড়ে চলে গেছে রুমা, তার স্ত্রী। সেই থেকে সে নিঃসঙ্গ। এই একাকীত্বের জার্নালই এই গল্প। নিঃসঙ্গতা আর স্মৃতির। আয়োজনহীন, সাদামাটা সামান্য কাহিনী। একদিন কাকভোরে, মেঘলা আকাশের নিচে একটা নীল স্কুলবাসে উঠে যাওয়া একটা বাচ্চা ছেলের মুখ, চোখের চাউনি, ঘাড় ঘোরাবার ভঙ্গীর মধ্যে কথক অবিকল রুমাকে খুঁজে পায়। নীল বাস অতি দ্রুত অজানা ভবিষ্যতের দিকে হারিয়ে যায়।
আরেকটি গল্প ‘পাশের দরজা’। মলি মারা গেছে। অপঘাতে মৃত্যু। ফুড পয়জনিং অথবা আত্মহত্যা। আর একটা অচেনা লোক পাশের দরজা খুলে কথককে প্রশ্ন করছে ‘মলিদিকে দেখেছেন?… উনি রুমাল ফেলে রেখে কোথায় গেলেন? নিচে তো নামেননি, তাই ভাবলাম আপনি হয়তো…’ কথক বলল, ‘ও চলে গেছে। আর আসবে না… আর হ্যাঁ, আমি কোন মলিদিকে চিনি না।’ অথচ মলির বান্ধবী সুজাতা ফোনে কথককে দোষী করে মলির রহস্যময় মৃত্যুর জন্য। এমনই তালগোলপাকানো একটা বাস্তবতা ধরা পড়ে এই গল্পে।
‘একটি হলুদ গল্প’ আসলে বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের মার্জিনে এনে পাঠককে বিপদ সংকেত জানায়। যে বিপদ সংকেত সেক্টর ফাইভে কর্মরতা তরুণী ঋতুপর্ণা সেনকে জানিয়েছিল ফেসবুক ফ্রেন্ড অভিমন্যু রায়, মোবাইলে, একদিন গভীর রাতে বাড়ী ফেরবার সময়। বিপদ সংকেত না মেনে সত্যিকারের বিপদেই পড়েছিল ঋতুপর্ণা, পড়েছিল এক অকালমৃত ট্যাক্সিড্রাইভারের রোষের খপ্পরে।
এই বইয়ে ‘মোবাইল, মায়ের অসুখ, শ্যামলীর বিয়ে’ নামে একটি গল্প পাই, যেখানে নদীর স্রোতের মত পর পর অবিচ্ছেদ্যভাবে কয়েকটা ঘটনাক্রমকে ধরা হয়েছে। তাতে কোন গল্প তৈরি হল কিনা পরের কথা। যেটা অবাক করে তা হল কথকের এই মর্মান্তিক নির্লিপ্ততা, নিস্পৃহতা, নন-অ্যাটাচমেন্ট। সত্য-মিথ্যা, সুখ-দুঃখ, অপমান-অনুশোচনা মেশানো বাস্তবের হাড়হিম রিপোর্টাজ। আত্মহননকেরী বন্ধু ও ডাক্তার চয়নকে নিয়ে আরেকটি গল্প ‘কাল সোমবার’। ছাত্রাবস্থায় চয়ন ছিল ড্রাগ অ্যাডিক্ট। ওষুধের দোকানের কাউন্টার তোলপাড় করে সে হিপ্টো আর মেথাকুয়ালনের খোঁজ করত। রয়ে গেছে চয়নের একটা ছবি, কয়েক টুকরো কবিতা, চিরকুটে কালি দিয়ে কাটা কয়েকটা নাম আর ফরেন্সিক ডিপার্টমেন্টের বাথরুমের দেওয়ালে লিখে রাখা কয়েকটা আবছা শব্দ। গল্পের শেষ লাইনটা পড়ে আমরা শিউরে উঠি— ‘কাল সোমবার। চয়ন নেই। তবু সবাই সতর্ক থাকবেন।’
এমনই নির্লিপ্ত ও টানটান গদ্যভাষা বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের। নির্মোহ, নির্মেদ। এই লিখনশৈলীর সম্ভবতঃ সবচেয়ে প্রকট উদাহরণ ‘রতিযুদ্ধ’ গল্পটি। ‘বেলা কিংবা বেলা নয়’ এমন নামের একটি যুবতীর, উল্টোদিকের দোতলা বাড়ির একটি নিঃসঙ্গ লোকের প্রতি তীব্র যৌনটান এই গল্পের বিষয়। লোকটি মেয়েটির বাবার বয়সী। পেটানো স্বাস্থ্য, কাঁচাপাকা চুল-দাড়ি-গোঁফ। লোকটি পেশায় কুমীরশিকারী। মধ্যে মধ্যে মদ্যপায়ী ও যৌনশীতল। লোকটিকে উত্তেজিত করতে মেয়েটি মাঝে মাঝে লোকটির বাড়িতে হানা দেয়। অকারণে ঝগড়া বাধায়, মারে, মার খায়, উপভোগ করে, ভাব করে আবার রেগে যায়। লোকটা মেয়েটিকে মকফাইট শেখায়। মার খেতে খেতে মেয়েটি তীব্র যৌনসুখ অনুভব করে। গল্পের শেষাংশে মেয়েটি বলে ‘আমার কোনও গল্প নেই তীব্র রতিবোধ ছাড়া। যতদিন বাঁচব এইভাবে লড়ে যাবো। আমি লোকটার কাছে যাচ্ছি। বাবার বয়সী, রূপবান সেই পাগলটার কাছে। আজ হয় আমি মরব, নয় ও মরবে। একটু পরেই রতিযুদ্ধ শুরু হবে। আপাততঃ বিজ্ঞাপনের বিরতি। ততক্ষণ অপেক্ষা করুন। চ্যানেল ছেড়ে কেউ কোথাও যাবেন না।‘ ‘মেঘা ও বড়বাবু’ গল্পে বিভীষণ ঘোষ মেঘার দিক থেকে যে আঘাত পায় তা এতটাই বায়বীয় ও শাট্ল যে তা বিভীষণের পক্ষেও অনুভব করা কঠিন হয়ে পড়ে, লেখক তো কোন ছার। মেঘা বিদেশ চলে যাচ্ছে কোন এক অদৃশ্য সোমনাথের কাছে, একথা ভেবে বিভীষণের বুকটা চিনচিন করে ওঠে— মানে লেখা আসছে, লেখা আসছে।
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের গদ্য আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একটা বিপজ্জনক বাঁক। ‘সেইসব দিনরাত্রি’, ‘জীবন স্টেশন নয়’, ‘সুড়ঙ্গ’, ‘ঘোড়া ও কৃষক’, বাদুড়বাগানে রাত্রি’, ‘একটি হলুদ গল্প’, ‘এক রাত্রির গল্প’, ‘একটি অ-সাধারণ গ্রন্থাগার’ গল্পগুলি বহুদিন মনে থাকবে।
কিন্তু এই গল্পগুলোকে কোন খাঁচায় পুরবো আমরা? বাস্তবতা? পরাবাস্তবতা? অধিবাস্তবতা? নাকি ওই নব্যবাস্তবতা অথবা উত্তর আধুনিক? বাঙালি পাঠকের এটাই সমস্যা যে কোন টেক্সট পড়ামাত্রই দুশ্চিন্তা জাগে, এটা কী হল? এটা কোন জাতের রচনা? কোন খাঁচার? কোন ধাঁচের? আসলে সে তার বোধের ও চেতনার ক্ষমতাবলয়কে আরেকবার ঝালিয়ে নিতে চায়। তার বোঝার বাইরে মানে তার ক্ষমতাবলয়ের বাইরে। এটা তার পক্ষে মেনে নেওয়া কঠিন। তাই সে নতুন নতুন তত্ত্ব খাড়া করে তার ক্ষমতার বাজার বাড়িয়ে নিতে চায়। এটা একধরণের মনস্তাত্ত্বিক সাম্রাজ্যবাদ।
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়-এর গদ্য ইশারাময়। ইশারাই তার প্রথম ও শেষ অস্ত্র। যেমন ‘একটি অ-সাধারণ গ্রন্থাগার’ গল্পটি। পার্কসার্কাস অঞ্চলে একটি ছোট পাড়ায় এক হেমন্তর বিকেলে গল্পকার গিয়েছিলেন একটা হারিয়ে যাওয়া লাইব্রেরীর খোঁজে। লাইব্রেরীটা তিনি খুঁজে পাননি। ফিরে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ একজন আনজানা লোক কোত্থেকে এসে মোবাইলে গোপনে তাঁর ছবি তুলে নিয়ে চলে গেল। কেন হঠাৎ ছবি তুলল? এখানেই গোটা গল্পের ইশারা।
এখন প্রশ্ন হল বাঙালী পাঠক এই চকিত ইশারা ধরতে পারবেন তো? নাকি অবান্তর পাগলামো বলে এসব লেখা দূরে ঠেলে দেবেন? ভয় করে।
অরুণাভ চট্টোপাধ্যায়ের নস্টালজিক প্রচ্ছদ বেশ নজর কাড়ে।

CATEGORIES
Share This

COMMENTS Wordpress (0)

demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes
Checking your browser before accessing...