
বসত করার কাব্য / গৌরীশংকর দে
এসো তো বসত করি সব্যসাচী মজুমদার বান্ধবনগর প্রচ্ছদ-ধৃতিরূপা দাস মূল্য ১৫০ টাকা
একটি কবিতা সংকলন বান্ধবনগর থেকে কলকাতা বইমেলা ২০২৫ সালে প্রকাশিত প্রচ্ছদ ধৃতিরপা দাস।
৪০টি কবিতা দিয়ে সাজানো এই সংকলনটির উপর একটি সামগ্রিক আলোচনা করতে প্রণোদিত হলাম।
কিছু উদ্ধৃতি যার মাধ্যমে আলোচক কবিতা সংকলনটির ভিতর প্রবেশ করবেন সেগুলো আগে উদ্ধৃত করি:-
১) “এস তো বসত করি, ডালে ডালে পারুল ঘটুক…/
আকারে-প্রকারে ঘটে আমাদের সর্ববিধ সুখ!
…
প্রণামের বহু ছল, এস হে বসত করি দ্বীপে/
বাজারে যেও না তুমি, মানুষের মাছের সমীপে…”
(কবিতা: এস তো বসত করি)
এইভাবে গ্রন্থটি শুরু হচ্ছে।
২)”একটি আঁধার ও মলিনাঙ্গ দেবীর সম্পর্ক বিষয়ক/
নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধ রচনা করতে গিয়ে দেখি,/
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আপাতত অধীত জ্ঞানের সত্যকে/
আড়াল করে দেখা হচ্ছে।/
যেমন, একটা বেড়াল আজ গুড় আর দুধ খেল।/
এটা সত্য, আবার সে কালকে খেল, পরশু খেল।/
আস্তে আস্তে নেশাগ্রস্ত হয়ে গেলে পর
একদিন না পেলেই সে কী করতে পারে!/
এক, বিরক্ত হয়ে চাইতে পারে বারবার।/
দুই, অদ্ভুত কিছু…যেমন তরকারির আলু চিবিয়ে চিবিয়ে খেতে পারে।/
সঙ্ঘবদ্ধভাবেও এই ঘটনাগুলো ঘটতে পারে।/
একই সঙ্গে সে হয়তো তরকারির আলু আর গুড় মেশা দুধ খেতে পারে।
আর যদি ঘটনা বিচ্ছিন্নভাবে ঘটে তবে তার/
গুড়ের নেশাকে অল্টার করতে পারে না আলু কিংবা/
আলু অল্টার করল দুধকে।/
এগুলোও তেমনই সত্য।”
(প্রত্নদিনের লেখা)
এইভাবে লিখে আসতে আসতে কবি বলে ওঠেন ওই ‘প্রত্নদিনের লেখা’ কবিতারই দ্বিতীয় স্তবকে
“মোদ্দা কথা, একটা খটকা থেকে যায়।/
যদিও এটা আমার ভাববার বিষয় নয়।/
আমার ভাববার বিষয়, সে আর কত বছর পর/
মানুষের সমান্তরাল সমাজ গড়ে তুলবে?/
মানে, এই বেড়ালেরা!/
মানে, সম্ভাব্যতার, সূত্রখানি, বল, তোমার যোনির শ্রোডিংগার…”
সম্পূর্ণ কবিতাটা উদ্ধৃত করে কবির উদ্দেশ্য ধরার চেষ্টা করা যাক। অকস্মাৎ ‘যোনির’ শব্দটি কবি ব্যবহার করলেন কেন? এই আলোচনার উপসংহারে তার উত্তর খুঁজেছি।
৩) “উটেরর গ্রীবার মতো শিশু বিড়ালেরা ঢুকে পড়েছিল বলে/
তুমিও ছায়ার উল্টো দিকে বসে প্রত্যাশিত জমির দখলে/
….
পাহাড়ের ফুল দোলে, মেয়ে কাঁদে, ছেলে মোছে, পশুগন্ধ বয়…/
তুমি কি বুঝেছ প্রিয়, জঙ্গলের মতো ভাবলে সকলই প্রণয়!”
(কবিতা : উঠের গ্রীবার মতো)
এই কবিতাটির অন্তর্নিহিত মর্মার্থ কি? লক্ষ্য করা যাচ্ছে পরপর দুটি কবিতায় কবি বেড়ালের প্রতীক ব্যবহার করলেন। কেন করলেন? প্রশ্ন জাগে কবি কি Schroedinger’s Cat Paradox কে তার ভাবনায় জারিত করতে চান নাকি তার প্রতিস্পর্ধী কোনও বিনির্মাণ দাঁড় করাতে চাইছেন?
৪) “ধীরতম পৃথিবী চলে যায়।/
পুকুরে ঘটেছে মাছ।/
আকাশে ঘটল তারা।/
লোকেরাও আমাদের না দেখেই চলে যাচ্ছে।/
#
এ সমস্ত বনগাঁয় ঘটে। অথবা এ সমস্ত ঘটেনি”/
(কবিতা: ধীরতম পৃথিবী চলে যায়)
৫) “শীতের মধ্যে একটা টার্কির গলায় দড়ি বেঁধে বেঁধে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিড়ি খাচ্ছ।/
বড়টার দাম চারশো আর বাচ্চাগুলো সত্তর টকা পার পিস/
চাইলে। এই চাওয়ার শব্দটুকুর ভেতর দুই-তিন কিক মেরে মাছি/
দেখে ফেলল টার্কির সপ্তম এবং অষ্টম মাত্রা।/
#
রাস্তার দশম দিক থেকে গুড়ের গন্ধ বেরিয়ে/
বাতাস ভারি করে তুলতেই মাছি’টাও উড়ে গেল সেদিকে। যাওয়ার/
সময় বাম চোখ ঘুরিয়ে দেখল, টার্কি একবার তোমার দিকে তাকিয়ে/
ফের পেঁয়াজের দিকেই ঘুরছে। ঠিক তক্ষুনি মাছ সাইকেলে ধাক্কা/
খেতেই তার বুক ফুটো করে ঢুকে গেল একটা নি…/”
(কবিতা : শীতের মধ্যে একটা টার্কির)
এই কবিতাটির উপস্থিতি বিশেষভাবে আলোচনার দাবি রাখে। সেইদিকে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলি এটা জীবন নিয়ে একটা মস্করা নয় নিছকই । “রাস্তার দশম দিক থেকে গুড়ের গন্ধ…” প্রান্তিক মানুষদের হাহাকার বলে ধরে নিতে পারি। অথবা বিজ্ঞানের দৃষ্টি কোণ থেকে দশমাত্রিক Super String-এর ধারণাটিকে মনে মনে স্বীকৃতি দিই বই কী। কেননা বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই কবি তাঁর স্বকীয়তার সাক্ষর ইতিপূর্বে রেখেছেন।
৬) “পথপাশে বিমর্ষ প্রেতের চারুমুদ্রা দেখি/
দেখি সোৎসাহে চলেছে খরিস/
চলেছে ঘেউ আর মহৎ প্রাণ/
চলেছে আমারও দেহ বহুতল জলের ভেতর/
#
চলেছে শোণিতচ্ছটা অপরাহ্ন বরাবর/
দেখি, বাংলার সিনেমা ছায় গগনে/
আরও পিছনে ধায় পৌনঃপুনিক প্রতিমা/
আমারও বেবাক যায়…/
ও কান্না, ও পরবর্তী ঘটনা,/
#
একটি খোলা যোনি শুয়ে আছে বিগত স্টেশনে… /”
(কবিতা : পথপাশে বিমর্ষ প্রেতের)
এই যোনি শব্দটির ব্যবহার পাঠকের মসৃণ গন্ডদেশে এক চপেটাঘাতের মতো ধ্বনিত হয় বুঝিবা।
৭) “অপূর্ব সূর্যের মতো প্রতিটা দিনের সমাধান/
আমি খেলি গোলাকার। আমি খেলি বজ্রযান।
#
এই ছবি যজ্ঞে লাগে, এই ছবি হোমেও দরকার/
এই ছবি সত্যকাম-ছোট্ট মনোলগের আকার…/
#
অপূর্ব সূর্যের মতো প্রতিটা দিনের আচমন/
ছায়াছবি হয়ে আছে, যতদূর তারার শ্মশান…”
(কবিতা : অপূর্ব সূর্যের মতো)
অপূর্ব অক্ষরবৃত্তে লেখা এই কবিতার ভিতরে প্রবেশ করে সমগ্র কবিতা গ্রন্থটির সঙ্গে সাযুজ্যমন্ডিত করা ক্রমশ প্রতিষ্টিত করবেন। কবি কেন এমন কোমল হয়ে এলেন এইখানে? আসলে তাহলে কবি কি কবিতাগ্রন্থটিকে একমাত্রিকতায় আবদ্ধ না রেখে বহুমাত্রিকতার মধ্যে পদচারণয় বাধ্য করতে চেয়েছেন আর সেকারণে গ্রন্থের নাম রেখেছেন “এস তো বসত করি”?
৮) ” ভূতের জগৎ ছিল আনন্দের মতো/
সবই ছিল গলনাঙ্ক, অপরের ক্ষত…/
#
আসলে জবাব নয় স্তূপাকার ফুল —/
তোমার গবাদি পশু ছুঁয়েছে নেউল…/
ছুঁয়েছে কেননা তার জতুগৃহে শীত —
ভূতের জগৎ ছিল আমার ইঙ্গিত… ”
(কবিতা: ভূতের জগৎ ছিল)
লক্ষ্য করা যাচ্ছে কবিতার ভাষা ক্রমশ পেলব হয়ে আসছে
অক্ষরবৃত্তে অসমাপিকা চারুপদচালনায়।
এখানে ‘জতুগৃহে শীত’ এই বিরোধাভাস (oxymoron) অবশ্যই লক্ষ্যণীয়।
৯) “তাকিয়েছ মিশ্রবৃত্ত…তাকালে সটান —/
সকলই ধূসর অতি নয়নাভিরাম।/
এর মধ্যে মুছে যায় প্রেমে পড়া প্রাণী।/
তার জন্য উষ্ণ হই রূপকসন্ধানী…”
(কবিতা : তাকিয়েছ মিশ্রব্রত্ত)
বলাবাহুল্য ‘মিশ্রবৃত্ত’ ও ‘ ‘অক্ষরবৃত্ত’ ছন্দ একই নয়, যদিও এদের মধ্যে কিছু মিল রয়েছে। অক্ষরবৃত্ত ছন্দকে ‘মিশ্রকলাবৃত্ত’ ছন্দ নামেও ডাকা হয়। যাক ছন্দবিচার এক্ষেত্রে একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক কবিতা সংকলনটির স্বার্থে।
১০) “আগুন তুলেছি যদি অথচ দুজনে/
লিখেছি আবীর কালো… তোমার গুঞ্জনে/
তবে সে রাতের গান শরীরে জড়ায়/
ধ্বনির কোরাসে দাউ স্পষ্ট দেহ পায়,/
সুদূর জলায় ঘোরে চাকরিহারা লোক/
তার ঘরে কান্নাকাটি; যৌন মুখে জোঁক”
(কবিতা : আগুন তুলেছি)
‘কালো আবীর’ তবে কি চাকরিহারা লোকের বাসন্তিক হাহাকার?
১১) “ভেসে তো গিয়েছে মূর্তি ছেঁড়া হাত পায়/
লেগে আছে পরাঙ্মুখ আহা নিরুপায়/
আলো বিঁধে আছে তার শব্দভেদী বাণে/
— দৃশ্যটি পরমহংস দেহ-ধর্ম মানে”
(কবিতা : আমাকে দিয়েছ কার সন্মার্গ বিপণি)
এইভাবে ‘ মৃতেরার কেবল হাঁটে’, ‘এটকু ভাবতে পারিনি’, ‘সেইসব মানুষেরা’, ‘কতটা কুয়াশা তুমি’ এইসব অসামান্য কবিতাগুলি পেরতে পেরতে আবিষ্কার করি, কবি ক্রমশ এক বিজনের পথ ধরে আপাত প্রাথমিক দুরূহতাকে আক নিরভিমান সারল্যের দিকে চলেছেন অনায়সে ভঙ্গিতে।
১২) “বলো, কী দেখিনি তার! মানচিত্র? মেধা পাটেকর!/
প্রবেশক দেখি তার পিচ্ছিল, জলীয়, অকাতর…/
দেখি তার মনোরম, দেখি তার অকূল পাথার/
#
আমি সেই সহ্যশক্তি… ভাবি, তাকে নেবুলার মতো/
এসব বিষের জ্বালা — নেমে যেতে যতটা সম্মত…”
(কবিতা : গানের ভেতর আমি)
হঠাৎ মেধা পাটেকর! এক লহমায় কবি তাঁর রাজনৈতিক আত্মবিশ্বাসকে যেন ছুঁয়ে যান।
‘এত যে বিকেল’ কবিতায় “সন্তান তো কেউ নয়, অপর্যাপ্ত নদীর কিনার” এই উচ্চারণে কবিরইএকটি কবিতা গ্রন্থের নাম “আজন্ম ধানের গন্ধে”-এর কথা মনে এলো। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভালো ‘ধান’ কবির সন্তানের নাম। শেক্সপিয়ারের সনেটের ভিতরে যে উত্তরাধিকারকের প্রতি পিতৃ বাৎসল্য উদ্ভাসিত হয়, বুঝি এই রক্তমাংসের কবি সেই ধারার ব্যতিক্রম নন।
পরের কবিতা ‘সমাধানের পরে’র শেষ পংক্তিতে কবি উচ্চারণ করেন
” অতঃপর আখ্যানের মধ্যে গিয়ে বুঝলে/
ছেলের ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে বিফল হত্যার নেশা…”
আশাকরি পাঠক পিতৃবৎসল হৃদয়ের স্পর্শ টকু সহজেই উপলব্ধি করতে পারবেন।
ক্রমশঃ ‘জরুরি আদর’, ‘এই বিনীত মেঘ’ ‘বরষা আসছে —এরকম কবিতার পথ ধরে পৌছে যাই এই উচ্চারণে— কবিতাটি যেখানে সমস্তটা উদ্ধৃত না করলে এই প্রতিবেদকের খেদ থেকে যাবে
“একটা জন্তুর সামনে দাঁড়িয়ে আরেক জন্তুর ছবি আঁকলে কী হয়,/
জানতে পারিনি সেইসব সারসের দিনে…/
#
আজকে এই জগৎজননীর মতো তলপেটের সামনে দাঁড়িয়ে কেন/
মনে হচ্ছে জন্তুর প্রতিক্রিয়া জানাটা গুরুত্বপূর্ণ!/
#
নদীর জঙ্গল থেকে দেখতে পাচ্ছি বড়ো বড়ো দোকানের ভিড়। ওপারে/
অশ্বত্থ গাছে একটা প্যাচায় বাচ্চায় কামড়াচ্ছে ভাম।/
#
এই নির্দিষ্ট দিগন্তের ভেতরেই উপন্যাস এগিয়ে চলেছে।/
#
আমাদের যৌন জন্মের বাসন্তী পুজোরা…
(কবিতা : একটা জন্তুর সামনে)
এই কবিতাটা মনেহয় কবিতাগ্রন্থটির ভরকেন্দ্র নির্মাণ করে। এটি সম্বন্ধে সম্যকভাবে আলোকপাত করা দরকার। কিন্তু সেই পরিসর এখানে নেই বলে পাঠকের দরবারে রাখলাম।
এইভাবে ‘সেভাবে হয়তো’, ‘ অনেক বাদুড় মেরে’ পৌঁছে যাই
নিম্নোক্ত কবিতায়—
১৩) “কোনও শব্দ নেই আর কোনওখানে জলে কিংবা /
নদীর ও পারে গ্রামে… নেই খুনের খবর।/
কুণ্ঠিত দেহের মতো সবুজ রঙের ক্ষেত।/
তলায় ডিমের খোল ভেঙে বেরুচ্ছে হেমন্ত…/
(কবিতা : ধীর লয়ে শঙ্খ-ঘণ্টা)
এইখানে এসে মনে হয় জীবনানন্দ দাশের সেই বিখ্যাত পংক্তি— ‘কেমন আশার মতো মনে হয় রোদের পৃথিবী।’
তারপর একে একে ‘লবণ তোমার’, ‘দেবতা জন্মেছে খুব’ আরও আরও অনেক অনবদ্য লেখার সরণী বেয়ে উঠে আসি
একটি অমোঘ উচ্চারণে
১৪) “এই জনপদ… জান, আর কিছু দিন পর/
গাছ-টাছ মেরে ফেলে নদী হয়ে যাবে। তুমি/
মাছের মতন নিচূ খাতে বয়ে যাবে। শোন,/
একটা চলে যাওয়া মানে আর একটা শ্রোডিংগার”
(কবিতা : মোড়ের সম্মুখে দ্বিধাগ্রস্ত)
শ্রোডিঙ্গার তার মার্জারের ঝাঁপি তখনও খোলেন না।
পরন্তু কবি অনুভব করাতে চান পাঠককে যে না খোলা পর্যন্ত সে অস্তি ও নাস্তির দোলাচলে ঘুরপাক খাক। জীবন যেখানে কবিতার সমান্তরাল পথ বেয়ে চলে মৃত্যু অবধি।
১৫) “মানে, এই যে এগিয়ে যাচ্ছি/
মানে, এই যে এগিয়ে যাচ্ছি,
ফাঁকা আছে বলে — এমনটা নয়/
বরং এগচ্ছি বলেই ফাঁকা হচ্ছে”
(কবিতা : মানে, এই যে এগিয়ে যাচ্ছি)
এই ‘অসম্ভাব্যতার নন্দনতত্ত্ব’ই মানজীবন, কবির কাজ সেই সার সত্যটিকে পাঠকের সামনে তুলে ধরা
কবি সব্যসাচী মজুমদার-এর এই কাব্যগ্রন্থটি সেই অর্থে সার্থকভাবে বাংলা কবিতার পরিমন্ডলে একটি প্রশ্নের জন্ম দিয়ে গেল।
উপসংহার:
“এস তো বসত করি”-র কবিতাগ্রন্থটি শুধুমাত্র একটি সাহিত্যিক সৃষ্টি নয়; এটি বহুস্তরীয় নন্দনতত্ত্ব এবং অস্তিত্ববাদের স্বাক্ষর। কবিতাগুলি মানব সভ্যতার সীমা ও অসীমের প্রতীকায়ন, যেমন প্রথম কবিতা “এস তো বসত করি” অনুজ্জ্বল প্রত্যাশার মধ্যে এক অমূল্য প্রাণের সম্ভাবনা খোঁজে
Schrödinger’s Cat Paradox আধুনিক বিজ্ঞান ও দর্শনে একটি বিপ্লব এনেছিল। এই ধারণাটি সম্ভাবনা ও অস্তিত্বের মধ্যে এক ধরনের বিতর্ক তৈরি করে। “প্রত্নদিনের লেখা” এবং “উটের গ্রীবার মতো” কবিতায় বেড়ালের ব্যবহার, এবং বিশেষভাবে “তোমার যোনির শ্রোডিঙ্গার” পংক্তি, জীবনের এক অনিশ্চিত প্রেক্ষাপটে সাহসী প্রশ্ন তোলে—মানুষের মানসিক এবং সামাজিক কাঠামোর মধ্যেকার বিভাজন কীভাবে গড়ে ওঠে তার ভাষ্য শোনায়?
এলিয়ট-এর *”The Waste Land”* বা বোদলেয়ারের *” Fleurs du Mal”* এর মতো কবিতায় অস্তিত্ববাদী সংকট এবং সম্ভাবনার চিন্তার উপস্থিতি আমরা দেখতে পাই। সব্যসাচীর গ্রন্থটিতে সেই সংকট এবং, সম্ভাবনাকে শৈল্পিকভাবে প্রতিফলিত করা হয়েছে।