রূপালী সরকারের কবিতা
কবিতা- প্রবেশ নিষিদ্ধ
আমার শোক সভা,
টাঙানো নোটিস বোর্ড,
মরণকালের জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করে ঝোলানো।
শুনেছি মৃত্যুর পর মানুষের সকল দোষ কেটে যায়,
দু’এক কথার মুখরিত জীবনের চলছে গুণকীর্তন।
টিক টিক সময়ের কাঁটা, খোঁচা দেওয়া শব্দ,
এক মিনিট নীরবতা পালিত হোক।
একটাই প্রস্তাব …
এ শোক সভায় তোমার প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হোক।
দেওয়া হোক নিষেধের বাঁধ,
আমার মৃত্যু শোক সইতে পারবে না,
এটাই তোমার অপরাধ।
কবিতা-প্রেমিক:মৃত্যুর ডাকনাম
ঘুম নেই
তোমার কাছে রেখেছি বন্দক,
এমন তো হবার কথা নয়,ছপ ছপ শব্দে ঘুম ভেঙে যায়।
উঠোনে রেখো না এক পা,
ঘেঁষে বসো না গৃহস্থের গা,
সদর দরজায় নারিও না কড়া,
তুমি কিন্তু কোনো কথা শুনছো না।
অবাধ্য…
এ কেমন গা-জোয়ারি?
কপালে ঠোঁট ছোঁয়াতেই ঘুমিয়ে পড়ি,
তোমার ছোঁয়ায় বড্ড ঘুম পায়।
আমি তোমাকে চিনতে পারিনি,আমার দায়,
কী বা এসে যায়;
তুমি অশ্লীল,নির্লজ্জ,
এখনো দাঁড়িয়ে আছো ঠায়!
দোষ কি করেছি বলো?
তোমার কৃপা,কেনো
আমাকে চায়।
তুমি মৃত্যু,তুমি যম,
তুমি প্রেম,তুমি বিভ্রম,
মরণ কে কাছে চায়?
মরতে আমার ভয়।
কবিতা – মেঘরাজ
_____
তোমার জীবন ভূমিকায় আমি নেই,
না আছি সূচীপত্রে,
প্রস্তাবনায় হয়নি ঠাই।
আমাকে নিয়ে না লিখেছো কোনো পরিচ্ছেদ,
না রেখেছো কোনো পর্বে,
লেখা হয়ে গেলো তোমার গোটা গবেষণাপত্র,
আমাকে ছাড়াই।
ভেবেছি হব তোমার উপসংহার,
সেখানে যদি নিজেকে খানিক দেখতে পাই,
সে আশাও হলো না পূরণ,
তোমার জীবন গ্রন্থে কোথাও আমার স্থান নাই।
এর পরও তুমি ভালবাসার দাবি করো,
এখনো হাসছ মেঘরাজ?
কী বললে?
তোমার যাবতীয় গ্রন্থপঞ্জি,
এই অবুঝ আমিটাই?
সত্যিই বোকা হলাম আজ।