
রাত দখলের রাতের কবিতা
আভা সরকার মণ্ডল
প্রতিবাদ থেমে গেলে
প্রতিবাদী কন্ঠ স্তিমিত হয়ে এলে —
হায়নার কদর্য ঠোঁটে ঝুলে পড়ে বিটকেল হাসি
লোলুপতা ঝকঝকে করে তার চোখের সীমানা
প্রতিবাদী কন্ঠ স্তিমিত হয়ে এলে —
দন্ত-নখে ধার দিতে দিতে নরকের কীটেরা
অন্ধকার গুহা থেকে বেরিয়ে আসে শিকারের খোঁজে
নির্জন পথ-প্রান্তর,বন-জঙ্গল, ট্রেনে-বাসে শুধু নয়
তাদের নৃশংস হিংস্রতা থাবা বসায়
গৃহস্থের ঘর-বারান্দায়,স্কুল-কলেজে, হোটেল-রেস্তোরায়
প্রতিবাদী কন্ঠ স্তিমিত হয়ে এলে —
কামদুনি থেকে আর.জি.কর সর্বত্র অবাধ হয় নরপশুদের পাশবিক বিচরণ
বিয়াল্লিশ বছর কোমায় থাকা অরুণা
অথবা হাজার হাজার নির্ভয়া অভয়া তিলোত্তমার উপর
নারকীয় নির্যাতনের বিরুদ্ধে
প্রতিবাদটুকুই প্রাথমিক হাতিয়ার !—
গর্জে ওঠো নারী
অতঃপর নিজের অস্তিত্ব রক্ষার্থে
খড়্গ হস্ত মা কালী হয়ে ওঠো…
লক্ষ্মী মেয়ের প্রয়োজন ফুরিয়েছে পৃথিবীর ….
মরতেই যখন হবে লড়াই করে মরাই শ্রেয়
থেমে যাওয়া চলবে না — প্রতিবাদ থেমে গেলে
—- লড়াই থেমে গেলে
বেড়ে যাবে নপুংসকদের সাহস ও সন্ত্রাস
বিসর্জনের বাজনা বাজতেই থাকবে বছর ধরে
জেগে ওঠো নারী—
জেগে ওঠো সত্যিকারের পুরুষও—
জন্ম নেয়ার জন্য হলেও একটি গর্ভ তো প্রয়োজন !
জেগে না উঠলে পৃথিবী থেকে ‘মা’ শব্দটি বিলুপ্ত হবে একদিন
বিভৎস ভয়ে জন্ম নেবে না কন্যা সন্তান
ভয়ংকর লজ্জা বাধা দেবে পুত্র সন্তান জন্ম দিতেও
প্রতিবাদী কন্ঠ স্তিমিত হয়ে এলে —
থেমে যাবে লড়াই—
মাটি বন্ধ্যা হবে স্বেচ্ছায়!