গৌতম চৌধুরীর কবিতা  ।। স্মৃতিধ্বংসের দিন, আত্মধ্বংসের রাত্রি ।।

গৌতম চৌধুরীর কবিতা ।। স্মৃতিধ্বংসের দিন, আত্মধ্বংসের রাত্রি ।।

গৌতম চৌধুরী
।। স্মৃতিধ্বংসের দিন, আত্মধ্বংসের রাত্রি ।।

যুদ্ধে প্রতিটি মুহূর্তই মূল্যবান। প্রতিটি মুহূর্তই যুদ্ধ
প্রতিটি মুহূর্তের উন্মোচন একটি উদ্গীরণ
যেন রণলিপি। সাংকেতিক। রহস্যভেদমাত্র শুরুয়াত
আলোর শানিত নিনাদ। শব্দের খরস্রোত ধ্বজা
পাহাড় ও উচ্চণ্ড পাথরখণ্ড। নদী ও ছত্রাকার ধূম
যুদ্ধের দিগ্‌বিদিক। মুহূর্তের অঙ্কুর
আকাশের নিচে টলটল একটি পত্রালির নয়ন। মায়াকাতর
স্বপ্ন ও স্বপ্নের অবসান। পত্রপাঠ মুহূর্তের ১

রক্তের তরঙ্গে এই সংগীত। কান্নার বাষ্পে অবরুদ্ধ
তবু নাছোড় নৌকা। জলের মর্মরে ছপাং ছপাং দাঁড়
ঘূর্ণির করালে সামাল সামাল। তবু হেঁইয়া হো, হেঁইয়া হো
ঘামের মুক্তায় রৌদ্রকণা। বা, রুক্ষ টানা স্থলপথ
শ্যামশ্রীহীন বন্দিশ সেও। তপ্ত বালির স্তূপে বাতাসি নখর
মোচড়ে মোচড়ে কোমল আর কড়ি। রাগ, রাগান্তর
হালকা হলকা অগ্নিকণিকার। জলধরপটলের স্তব্ধতা
জ্যোৎস্নার উড়ন্ত ওড়নার হাহা তারাদের দিকে
যেন কোন্‌ ভিনগ্রহের ছায়া। নৃত্যরত সামান্য নদীচর ২

একটি ক্ষীণ বিন্দুর রহস্য দীর্ঘতম সাংকেতিক শৃঙ্খলে
পাঠে পাঠান্তরে বিন্দুর ভ্রমণ। আত্মায়, নিরাত্মায়
নকশিকাঁথার সূচিবদ্ধ কাহিনিতে প্রহর পার
গুহার প্রতিটি দেওয়াল আয়নামসৃণ। প্রতিটি ছবিই আত্মজন
মৃত্যুর ধারাবাহিক হননের স্ফূর্তিতে পাখিডাক
সতর্কতা ও মুগ্ধতা পায়ের ছাপ আঁকে পাশাপাশি
বিন্দু তখন ফড়িং ও প্রজাপতি। ফসলশীর্ষের হাওয়া
এলোচুল চারুকেশী। দিগন্তের তূর্যনিনাদ, তুরি ভেরি
সকলই গ্রথিত। গ্রন্থিত। বিন্দুর আঁকাবাঁকা পাঠ ৩

অবধারিত এক পতন। রথের চাকা চুরমার
কয়েকটি স্ফুলিঙ্গ মাত্র সাক্ষ্য। প্রতিরোধের জোনাকমর্মর
রাত্রি আরও বিস্তারিত। রাত্রি আরও স্থাপত্যের শিলা
তবু সেই সামান্য স্পন্দন। স্ফটিকের। আলোতরঙ্গের
বিশ্বরূপের। লক্ষ কোটি অমেয় বিস্ফোরণের
জ্যোতির্পুঞ্জের সামান্য কণা। কণারও কণিকা
এই পিপীলিকা প্রাণ। এই পতঙ্গ প্রাণ
এক অনর্গল সংগীত তরঙ্গ। প্রান্তরহীন। দিগন্তহীন
অবধারিতের সাথে যুদ্ধ অনর্গল। যুগনদ্ধ অনিল ও অনল ৪

অক্ষর আর অনক্ষর। শূন্য ক্যানভাস আর রঙরেখার উল্লাস
বিপরীত প্রান্তে রচিত ব্যূহ। নিরপেক্ষতার স্বস্তি অলীক
গুহামুখে কঠোর আচ্ছাদন। তিমির ধাতব এক নির্বাসন
কবজার সামান্য মোচড় আর আকাশের অফুরন্ত ছোঁয়া
কে বলে : পক্ষ বিপক্ষ অবান্তর?
মাটির বিপক্ষে লাঙল, পরিণতি ফসল
কে বলে : সকল পরিণতিই একাকার?
চুল্লির পক্ষে আগুন, পরিণতি ভস্ম
কুলুঙ্গির খোপে খোপে সারি সারি রূপসজ্জা
অধিকারী হাস্যরত। পাত্রপাত্রীর ভূমিকা অগাধ ৫

নিদ্রার কোটরে পাখিডিম। আখ্যানের ঘুমন্ত পৃষ্ঠা
লোলুপ অনেকে। সাপ, শিয়াল, ডানপিটে বালক
মা-মরা বাপে-খেদানো। প্রত্যেকেই পৃষ্ঠা একেকটি
আর ডালপালাপাতা। আর অন্ধকার
অন্ধকারের পারে নক্ষত্রঢেউ। রশ্মির সূত্রপথে যাওয়া-আসা
পথ অমসৃণ, ঝরকাকাটা। বৃত্তের ইতি নাই
ইতিবৃত্ত নাই সেই নিরুপায় গতির
তবু কাহিনি, কীটদষ্ট পঙ্‌ক্তির। হরফের আঁকাবাঁকা উল্লাস
বিমর্ষতা। রক্তস্রাব। অগ্নি-উদ্গীরণ
ছেনি-হাতুড়ি-পাথরখণ্ডের অফুরন্ত শৃঙ্গার
অশ্মীভূত পাখিডিম। রহস্যলিপি ডিএনএ-শৃঙ্খল ৬

অঙ্গপ্রত্যঙ্গ যেন অস্ত্রাগার। এক বাহু তরবারি। অন্য, বর্শা
ত্বক বর্ম। চোখদুটি আলোগতিবেগে-ছোটা ক্ষেপণাস্ত্র যেন
কেশরাশি বজ্রবিদ্যুৎ-ভরা মেঘপুঞ্জ
কিন্তু সকল অস্ত্র মৃতবৎ, বস্তাবন্দি। শমিগাছে মগডালে বাঁধা
গাছই শেষ আত্মজন। শেষতম স্মৃতি
আজ স্মৃতিধ্বংসের দিন। আত্মধ্বংসের রাত্রি
নক্ষত্রচাঁদোয়ার নিচে ওই গাছ মর্মরিত হেমন্তবাতাসে
অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলি বহুযুগের ব্যথায় কাতর। ঘুমে মগ্ন ৭

মেঘ নানাবর্ণ। ছায়া অনুরূপ। বৃষ্টিও রংবেরঙের
কখনও বালি ও ধূলি মাত্র। কখনও ছাইভস্ম, অশ্বডিম
মানুষটির কী দশা!
ম্যাঘ দে পানি দে গানের বেদনা লোপাট। বা, দেশান্তরী
ধুতুরার শরবতে ছয়লাপ কাণ্ড-কারখানা। কে ফিরাবে?
পথের শোভা তো পথিক। পথিকের বাঁশি
সুর রেণু রেণু। আন, ধূলি আন ৮

সূর্য, উদয় আর অস্ত। প্রতি মুহূর্তে। দিন আর রাত্রি। প্রতি স্থানাঙ্কে
অনন্য প্রত্যেকে। ছবি তাই অফুরন্ত, নিত্যনোতুন
মহাগগনের প্রান্তরগুলি অফুরন্ত। মুহূর্তগুলি স্যন্দমান বিন্দুতে বিন্দুতে
অস্থিরতা সামান্য শব্দ। সে-গতির প্রচণ্ডতা নাদান মানুষের অগম্য
সে যদি গতির দ্রষ্টা, নিজের অস্তিত্ব লোপাট
যদি সে অস্তিত্ববান, গতিহীন জগতের বাসিন্দা তবে
দৌড়ায়। একশো মিটার দৌড়ের সময় কমায় কেবলই
উৎক্ষেপণ কেন্দ্র স্থির। বিপরীতক্রমে বাজে ঘড়ির অমোঘ নির্দেশ
নভোযান ওড়ে নিশ্চিত দূরত্বের গ্রহে-উপগ্রহে
সব গতি মানুষ-তাড়িত। মানুষ অস্তিত্ববান তবে
অথচ জগৎ গতিময়। মুহূর্তের জন্মান্তর বিন্দুতে বিন্দুতে ৯

ভ্রমণ সংক্ষিপ্ত যদি, গতি টের পাওয়া যায় সহজেই।
যেমন রেলগাড়ি। দৃশ্যপট ঝোড়ো হাওয়া, কেবলই বদলায়
কামরার ভিতরে মাছি যদিও কিছুই মালুম পায় না
তবুও প্রতিটি মুহূর্ত অন্য অন্য জমিনের বুকে
তাই বিচিত্র সকলে। কোনও পৌনঃপুনিকতা নাই
ছবিগুলি অফুরন্ত। ছবিগুলি বিচিত্র সকলে
মৃত্যু কেবলই ঝরে, লুপ্ত হয়, প্রাচীন কোষের ঝরাপাতা
প্রতিটি বিন্দুর জন্ম পথপ্রান্তে কেবলই নীরবে
কোলাহলহীন মহামৌনে বিন্দু বিন্দু জন্ম
যেন জন্মের বুদবুদ হিমায়িত তুষারবলয় ছিন্নভিন্নতায়
প্রতিটি দৃশ্যই স্তব্ধ, প্রতিটি দৃশ্যই সম্প্রপাতে উন্মুখ ১০

কৃষিবিদ্যা উদয়াস্ত। পটুয়ারও ঘাম ঝরে
পট সিক্ত। রঙের লবণে ঢালে সন্ত্রাস
সে-ও রিক্ত কৃষিজীবী। উদয়াস্ত শস্যের ঘ্রাণ
পেশির স্ফুলিঙ্গে মেঘের গোপন বার্তা ভৌগোলিক
চিহ্নই সহায়। তবু চিহ্ন অসহায়
কাগজকুণ্ডলী ভুঞে গড়াগড়ি নৃমুণ্ডবিলাসে
উফ্‌ সুর, উফ্‌ তান। অসহ্য গণিত
বিস্মৃতির কাঁথাকানি তবু, শীতরৌদ্র। ওগো, অবিলাস
নদীভাঙনের পিছনে স্তম্ভ-খিলানের মূর্খ বর্বরতা ১১

এ-সুরঙ্গ মন্থর। মাটির স্বাদ নানান। বিবিধ
এই গর্ভে কোমলতা যদিও প্রায়শ বিপর্যয়ের
কেতাবকীটের ভাষ্য পুঞ্জমেঘের অট্টহাসিতে মিলায়
মেঘ ও বজ্র বিনা আকাশের সৌন্দর্য কী!
নক্ষত্রেরা অপার্থিব। জ্যোৎস্না চাঁদের রৌদ্র মাত্র
তেরো পার্বণের মতো নানাবিধ রোদ্দুরে রোদ্দুরে এ-সুড়ঙ্গ
মন্থর অন্ধকারে তবু আকাশের একতলা-দোতলায়
সাত আসমানে সতের রকম স্বাদে
গাঁইতি-শাবলে, নানা ছন্দে, ক্রেঙ্কারে গর্জনে
চাঁদিফাটা চিৎকারে, সভ্যতার ক্লান্তিহীন হননে জননে
ক্লান্তিহীন তবু। এ-সুরঙ্গ মন্থর ভাষাতীত তবু ১২

দরোজা বন্ধ-করা বিনা অপ্রস্তুত দ্বারগুলি রুদ্ধ
আলো নির্বাপণ ছাড়া মুলতুবি অপ্রস্তুত আলোর স্ফুরণ
ভাষাধর্ম অনুরূপ। আঘাতে আঘাতে রুধিরস্রোতে
ওষ্ঠাধরে মৃদুহাস্য যেন। এ-হিংস্রতা কৃষকের
লাঙলের ফালের ফুলকি বেপরোয়া
বেপরোয়া মৃত্তিকার কম্পিত অস্তিত্বমেখলা
ন্যায়শাস্ত্র অন্যায়শাস্ত্র জানিনে জানিনে
বুঝিবা আপাত নৈরাজ্যবাদী। বুঝিবা বয়ঃসন্ধিকাল
আসলে সুরঙ্গগর্ভে মনপ্রাণ মুমুক্ষু। অহোরাত্রি মত্ততা নিষ্ক্রমণে
বিপন্ন মন্থর এক ঘামেভেজা আত্মার আত্মলুণ্ঠ্ন, আত্ম-উদ্‌যাপন ১৩

কে ডাকে? কেউ না। বা, অনেকেই।
অদৃশ্য অতৃপ্ত শতশত। বা, তৃপ্তও, নিছক অনুকম্পাভরে
বাতাসে স্পন্দ্যমান দীর্ঘ গাছেরা মাথা নাড়ে
সমগ্র উপত্যকা যেন দীর্ঘ শ্যামল শীর্ষগুলি নাড়ে
করতালি বাজে গম্ভীর ঝমঝম। ও কি তৃষ্ণা-উপত্যকা?
কালস্রোতবাহিত তৃষ্ণা প্রত্যেক ছায়ামূর্তির আঁখিপটে?
কাল অগম্য। স্রোত কোন দিকে, কে জানে!
এই অজ্ঞানতা, লোভ ও ভয়ের মধ্যবর্তী ক্ষণেক স্থিরতার নাভি
নাভিমূলে উৎসমুখ, ধ্বনিময় ধ্বনিহীন সকল আহ্বানের
সে-ডাক আছে বা নাই, স্থিরতার প্রত্যয়লিপ্সা আছে
যেন ঘুম-শতাব্দীর মুঠিতে প্রতীক্ষিত থির বিজুরীকণা ১৪
স্বচ্ছদেহধারী, যেন বাতাসে লীন। তর্জনীসংকেত অস্পষ্ট
বা, অবিদ্যমানই হয়তো বা। ইচ্ছা-অনিচ্ছা আত্মগহ্বরে
মৃতের আর কী শাস্তি আছে? বিচারব্যবস্থার সকল নকশা জীবনের
আশ্চর্য শব্দরাশি উড়ন্ত কেবলই। ঝরে ও স্থান পায় মহাশূন্যে
যেমন, কালবিবেক। মস্তিষ্কহীনের মস্তিষ্কপীড়া যেরকম
তবু, অস্বীকার অসম্ভব। অদৃশ্য এত প্রসারিত
যেন করতল, আকাশপ্রান্তের। এ কি ছায়ার চিহ্ন, না বজ্রের?
দুই প্রান্তে বিভক্ত বিশ্বাস ও বাহাস
মধ্যবিন্দু দ্যাখে শুধু পারাপারহীন এক নির্বিকারতা
নিষ্ঠুর বলা যায়, তবে হিংস্র না। পৃথিবী এখনও প্রাণের বাসযোগ্য ১৫

বড় বড় পাথরের চাঁই। সে কি প্রান্তরে, না অন্তরে? দ্বৈত ও অদ্বৈত
এই দ্বিবিধতায়, বাড়ির ভিত ও কবরের গহ্বর, রসুইঘর ও চিতার ধোঁয়া
সত্য নিঃসঙ্গ। অনেক নিঃসঙ্গের একা পায়চারি
পায়রার ঝাঁক ভ্রূক্ষেপহীন। লিপ্ততা স্রেফ চত্বরে ছড়ানো শস্যদানা
গলার অদ্ভুত শব্দে সম্মতি ইহলগ্নে। প্রতিটি শস্যই যেন শেষ সত্য
বিন্দু বিন্দু প্রাণ। শৃঙ্খল সোপানে গাঁথা কত দূরতম মহালগ্ন
কত দূরতম আসমানে সাঁতার। কত ঘুরন্ত চুল্লি, অগ্নিপুচ্ছ অশ্মিভূত তেজ ১৬

স্নিগ্ধতার সামান্য স্পর্শ। সে কি অসম্ভব এই অমসৃণ সাঁতারে?
গোঙানিও এক রকম সুরসমন্বয় যদি। আর্তনাদও তো আর্তিরই প্রকাশ
প্যাঁ প্যাঁ করা নাসিক্য না-ই বা। বা, এক অবিমিশ্র তান :
ঢেউয়ের পর ঢেউয়ের লীন দিগন্ত? না, তেমনও হয়তো নয়
স্তম্ভ-ভাঙা রৌদ্রকরোজ্জ্বলতা। ত্রিশিরা কাচের নৃত্য
রশ্মি ব্যাহত, তাই এত রং। গরিমার উদ্ভাস
তবু প্রতিটি নির্মাণই তুচ্ছ। ভাসমান হালকা-ফুলকা খোলস
এতটা মায়াহীন! আত্মনিষ্ঠুরতাই ওষধি প্রাণের
জগৎ মায়া না। মায়া আত্মপ্রেম। সদরদুর্গে কামান তাই
সে-সংগীত কর্কশ। তবু মাধুর্যই সৃষ্টির নিয়তি ১৭

বিশাল একটি ডানার আড়াল। কোনও আশ্রয় নয়। নীড়ের সান্ত্বনা নয়
দুর্ভেদ্য একটি প্রাকার। রোমশ প্রগাঢ় বলয়। ভিতরে ঘুমন্ত এক চিরশিশু
স্বপ্নগুলি আধাফোটা। স্বপ্নের জন্য ছবি। স্বপ্নের জন্য ভাষা। আছে কই!
সাঁতারের অছিলায় অন্ধকার ঘাটে ঘাটে আসনশয়ান। শানে মাথা ঠোকে
তবু নিদ্রাঘোর নাছোড়। ভাসন্ত প্রদীপগুলি ঢেউয়ে ঢেউয়ে সুদূর
ক্ষণিক স্পর্শে যদি ডানার পালকে আগুন। যদি পলকে জউঘর দাউদাউ
তবে বজ্র, ঝড়, উড়ন্তরুদ্র হারিকেন। স্বপ্নের বিড়বিড়
একটু কান পাতা যায়? জীবনের মধ্যেই এই মৃত্যু। ধারাবাহিক
মৃদু চরাঞ্চলে যেভাবে জলোচ্ছ্বাস। মাথার উপরে আঁধার দশতলা পানি
একটি ঘুমন্ত মই শুধু জেগে রয়, তারাছোঁয়া
মৃত্যুর গভীরে তার শৃঙ্গলীলা। অন্ধবীণ, যেভাবে বাজে ১৮

এত শৃঙ্খলিত কেন? উদাসীন আঙুলে কেন এত কাঁটা ছড়ানো?
রাধার মহড়া বুঝি মনে পড়ে! সেদিন গত, যখন রন্ধন আউলাইত
ভালোমন্দের বিচারের বাহিরে বহে সেই নদী। সময়
ভয়াবহ সেই নির্বিকারতা। হাওয়াবাতাস কে না চায়? আলো-ঝলমল পল্লব?
প্রতিটি সারল্যের পিছনে তবু কী জটিল যোগনিদ্রা, গর্ভবাস্তুতন্ত্রাভিসার
মোহময় বাষ্পের আঁচ। দংশন-জাদু। চলে দলে দলে হেঁটমুণ্ড, কিন্তু স্বেচ্ছায়
আউল কখনও জপে না আত্মস্মৃতি। গান জাগে না যদি, কান্না নীরব
কান্না জাগে যদি, ডানায় মোচড়। কিন্তু নিরুদ্দেশ। যে পায়, সে কুড়ায়
মূর্ছনা কুচি কুচি হিরে। তীক্ষ্ণ কাঁটার উপরে পড়া বালার্করাশি ১৯

দোস্তও দুশমন বনে। যেমন, মন। আত্মখাদক
এক প্রান্তের অনায়াস খাদ্য অন্য প্রান্ত
বিলকুল ফর্সা গ্রাম, জনপদ। কোষের পর কোষ
লাশের স্তূপ স্পর্শে শানযন্ত্রের অবিরাম ফুলকি
দুইপ্রান্তের মধ্যবিন্দুতে পতপত সাদা পতাকার বিবেক
চরিত্র পরিত্যক্ত। তবু অসংশোধিত পাণ্ডুলিপিতেই স্মৃতিধারকতা
ফলত, বস্তাপচা সংলাপ ও লক্ষ লক্ষ মাছির ভনভন
মিনিমাগনার আবহসংগীত। বধিরের কাছে ব্যর্থ অঙ্গভঙ্গিমাত্র
অতিভোজনে মনের খাদকপ্রান্ত যখন নিদ্রারত
ফাঁকতালে অন্যপ্রান্ত আবার গজায়। গোকুলে বাড়ে
স্বপ্নে দ্যাখে কংসবধপালা। বাতিল চরিত্রটি বলে : মা হিংসী ২০
১১ – ৩১। ১০।২০২৩

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes