বর্ণালী কোলে-র কবিতা
মণিকর্ণিকা
(১)
তোমার মুখ কেবলি আকাশে ভাসছে।তোমার মৃত্যুবার্ষিকী আসন্ন।আবর্তিত হয়ে সবকিছু
মনে পড়ছে।আমি জানালার কাছে আকুল দাঁড়িয়ে। তোমার আসতে দেরি সেদিন খুব।সব
ছবির মতো সাজানো।
মৃত্যু আগের মুহূর্ত পর্যন্ত নিটোল।
তারপর সেই রক্তক্ষরণ।একবছর পরও সেই বিস্ফোরণের ফুলকি প্রবাহিত।গণৎকার
বলেছেন, আমার হৃদয়ে প্রচণ্ড দাহ হবে।
আমৃত্যু দগ্ধ করবে আমায় ।তোমাকে দাউদাউ জ্বালিয়ে অগ্নি গ্রাস করেছে আমায়..
(২)
চুল্লির ভিতরের আগুনের গল্প শুনেছি। শায়ের বলেছিল,সে কী লকলকে হলকা !
আমি শুধু ভাবি তুমি তো একটু গরম সহ্য করতে পারতে না।গোটা গ্রীষ্ম
আমাকে গরম গরম করে পাগল করে দিতে।বলেছিলে,এসি লাগাতে।চুল্লির
অত আগুন কী করে সহ্য করেছিলে,ভাবলে স্তব্ধ লাগে।আমি মূক হয়ে
আছি।মনেমনে চুল্লির মধ্যে প্রবেশ করি।তোমার পাশে বসি।বড় মমতায় তোমার
কপালে হাতে রাখি।একটুও পোড়ো নি তো তুমি।আগুন আমাকে দেখে
তোমাকে ছেড়ে চুল্লির একপাশে গুটিসুটি বসে।
অগ্নি, ভাবো,অগ্নি.. তাকে সাক্ষী রেখে,তুমি-আমি চুল্লির মধ্যে কত
শান্ত..
(৩)
ভয় করে,জানো, খুব ভয় করে।তুমি নেই,ভাবতে পারি না আমি।ভাবো,
তুমি নেই,আমি এখনও বেঁচে। এটা হতে পারে,এটা কী করে হয়!
তোমার কথার কাছে ফিরি না আমি।একটিও অডিও রেকর্ড শুনি না।কেবলমাত্র
ভয়ে।ভাবো,তোমাকে ছাড়া আমি কীভাবে বেঁচে ।
মাথা নীচু করে আছি।চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে অবিরাম জল।নতুন এক জাহ্নবীর
সৃষ্টিপথ জেনো রেখো আমার দুই আঁখি..যেখানে তুমি রেখে গেছ আমার জন্য অনন্ত হিমশৈল।
যতবার দগ্ধ হই,ততবার তাপ,ততবার নদীজন্ম..