ঔরশীষ–এর কবিতাগুচ্ছ
একটি রাষ্ট্র শাসিত প্রেমের কবিতা
১!
একটা দুর্দান্ত সন্ধ্যা থমকে আছে কলার বোনের নিচে
এসময়ে ডাক আসে মৃতের শহর থেকে-
আমার কোথাও যেতে ইচ্ছে করে না
বোবা সাজবার প্রাকটিস করছি-চায়ের কাপে ভেসে থাকা
মৃত মাছির সহস্র চোখে দেখে নিচ্ছি নশ্বর বিষাদ,
শূন্যের পল্বলে ক্লান্ত এক ফুলের মূর্ছনা ছুঁয়ে
পাঠ করছি তোমার শরীর বা স্বাধীন ভারতের সংবিধান
২!
শিকারী কুকুর নেমে আসছে নক্ষত্রলোকের থেকে;
ক্যালেন্ডার জুড়ে কালো রং ছেদরে দিয়ে,
মিশে যাচ্ছে প্রজাপতির জঙ্গলে
নিরুপায় আমি… কবেকার যৌনাবেশ আঁকড়ে
পিকাসোর ব্রাশ ঘষছি আয়নায়, কিংবা গিটারের তারে
ফাঁস বেঁধে লটকে দিচ্ছি ভর দুপুরের স্বপ্নগুলো
বর্তমান সরকার ও পুরোনো সম্পর্কে ভরসা হারিয়েছি
৩!
আকাশ-নদীর ব্যবধানে
ক্ষীণ এক অরণ্য রেখায় ছুটে যাচ্ছি,
জীবনের পরিহার্য গ্রহণ করেছি নতজানু হয়ে
বিষাদ মেদুর নয় মোটে
আমার বিষন্নতার রঙও গোলাপি.. ভূতগ্রস্ত
একটি বদরাগী গাধার মত অর্থহীন
দেশের কানুন আর নারীর হৃদয়, এখনো অপাঠ্য
৪!
কিভাবে নিজের দুঃখ আঁকতে হয়?
অপমান, অভিমান,অস্বীকার- সবার নিজের রং আছে,
মৃত্যুর অপূর্ব শাদা তাই ছুঁয়ে আছে কবির আঙুল!
অর্থহীন বিলাপের মধ্যে দিয়ে রোদ ঢলে যায়,
আলোখেকো পোকার মিছিল ফিরেফিরে আসে প্রতিদিন-
হে আমার রাত্রি, তুমি কৃষ্ণবর্ণা রাধা হয়ে এসো
এই শতাব্দীর রাজনীতি আর প্রেম, গদীর মোরামে হিরন্ময়
৫!
এত সাহস যে কোথায় পেলাম শ্যামা!
বেশ তো কাটছিল বাউন্ডুলে দিন,
শহরের সব ভুষণ্ডিতে জারি ছিল প্রেমের ফতোয়া
আজ তুমি কিসের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা বল?
জন্ম ভিক্ষুকের কাছে, কী ভিক্ষা চাইছো প্রিয়?
যে প্রেম নিষিদ্ধ, তাকে ছুঁয়ে কাটাচ্ছি জীবন
নারী হোক কিংবা রাষ্ট্র, প্রেমে, মানুষ উন্মাদ হয়ে যায়
৬!
আমার প্রেমের কোনও যতিচিহ্ন নেই
সমস্ত উড়ুক্কু আর সমস্ত স্থবির
কাগজে দোয়াত উল্টে চলে যাওয়া বেড়ালের পদচিহ্ন
তবু বিচ্ছেদের আবীর মেখেছে সূর্য আজ,
ভীষণ বেহায়া এক শোক, ছুঁয়ে যাচ্ছে মনের গান্ধার,
তখন আরক্ত মুখে মেখে নিচ্ছি তোমার উৎসব
তোমাকে ভারতবর্ষ ভেবে, আনত হয়েছি কতবার