স্রোত
পর্ব-১০
যশোধরা রায়চৌধুরী
২০১৩-১৪। কলকাতার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছেলেমেয়ে তৈরি করে একটা নতুন প্রবণতা। কয়েকটি মেয়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনকে পোস্টার হিসেবে ব্যবহার করে তোলপাড় তুলে দেয়৷ এরা সব কেমন মেয়ে? কী চাইছে এরা? এই সব নিয়ে ও বাঙালি মধ্যবিত্তের ভুবনায়িত মূল্যবোধ নিয়েই "স্রোত"৷ গ্রন্থাকারে 'স্রোত' নাম দিয়ে একটি অতি সীমিত প্রকাশনা প্রচেষ্টাও হয়েছিল। তবে প্রকাশক সব কপিশুদ্ধু গায়েব হয়ে যাওয়াতে, স্রোতকে পরিবর্ধিত ও পরিমার্জিত আকারে এবার আবহমানের পাঠকদের কাছে ধারাবাহিকভাবে হাজির করার প্রচেষ্টা । "সম্পূর্ণ ভাবে নারীর দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা এমন উপন্যাস আমি আগে পড়িনি। নারীবাদী লেখকের লেখা উপন্যাস পড়েছি। কিন্তু তাতে পুরুষের লোলুপতা কে কাঠগড়ায় দাঁড়করানো আর নারীকে শিকার প্রতিপন্ন করার চেষ্টায় প্রায়শই অবজেকট্ভিটি থাকেনি। এই উপন্যাসের শিকড় গেছে নারী জীবন যাপনের নানা স্তরে । এর মধ্যে আছে যে ভাষায় পুরুষতন্ত্র জীবনের ন্যারেটিভ এমনকি সাহিত্য ও রচনা করে , তার ইন্টারপ্রিটেশন। এতে স্পষ্ট কথা আছে, অভিমান আছে, হাস্যরস এবং অসহায়তাও আছে । এবং সর্বোপরি পুরুষকে নিজের জীবনে জড়িয়ে নেওয়ার আকাঙ্খা।..এখনকার ছেলে মেয়ে দের হাতে ই তুলে দেওয়া কাহিনীর ব্যাটন, এদের স্পস্ট করে দেখা, বলতে পারা ও অতীতের বোঝা নামিয়ে রেখে পথ চলার সাহস কে কুর্ণিশ জানিয়েছেন যশোধরা। মুক্তি এরাই আনবে। যৌনতার রহস্যময়তার আবরণ উন্মোচন করে তথ্যের নিরপেক্ষতার মধ্যে উত্তরণ।যশোধরার Clarity of perspective অতি তীক্ষ্ণ। সবমিলিয়ে উপন্যাস টি মনোভংগি ভাষা ও কাহিনী সর্ব অর্থে আধুনিক। একে বারে রিয়েল টাইমে দাঁড়িয়ে লেখা। দেশ কাল সময় ও ব্যক্তি সত্ত্বার বিশাল ব্যাপ্তিকে বিন্দুতে এনে কিভাবে প্রতিবাদের ভাষা নির্মান করেছেন যশোধরা। নির্য্যাস হয়ে মনে রয়ে যায়, পুরুষকে বিযুক্ত করার অভিপ্রায় নয়, তার সংগে আবার প্রথম থেকে পড়া জীবনের পাঠ।" ( অনিতা অগ্নিহোত্রী)
১০ ইলাস্টিকের আনুগত্য
প্রিয়ব্রত এসেছিলেন, এবং আজ হঠাৎ প্রায় কেঁদে ফেলে স্বস্তিকার কাছে আত্মনিবেদন করেছেন। তারপর ওর গৌরবে গৌরবান্বিতও হয়েছেন।
মা, মাগো, আমার ডি এ র ব্যাপারটা তোমাকে দেখতেই হবে গো! আমার আট দশটা বন্ধু ধরেছে। একটা সরকারি চাকুরে কাউকে জোগাড় কর। আমি বললাম, আরে আমার হাতে এমন একজন আছে যে নিজেই এ জি বেঙ্গলে কাজ করে হাঃ হাঃ হাঃ। বুঝলেন বৌদি, আমরা আপনার বৌমার ভক্ত।
হাসতে হাসতে পেট ফেটে যাবে না রাগে ফেটে পড়বে, বুঝতে পারছে না স্বস্তিকা।
এর আগে আগে কী হচ্ছিল?
যখনি সে ব্রা বিহীন ম্যাক্সিতে আবির্ভূত হচ্ছে সোমদত্তের খাবার দিতে, টের পাচ্ছে শ্বশুরমশাইকে ফিজিওথেরাপি করতে আসা প্রিয়নাথবাবু নামের ওই গপ্পুরে বৃদ্ধের চোখ সেঁটে গেছে তার বুকে।
আবার স্বস্তিকা ভাবছে, ইলাস্টিকযুক্ত ব্রা পরে থাকলে তার সকালে ঘামাচি বাড়ত। সারাদিন তো এমনিতেই পরে থাকা বাধ্যতামূলক। যখন সে বেরোবে, অফিস যাবে। কিন্তু এখন বাড়িতে, সে ঢিলেঢালা থাকতে চায়। যে ঢিলেঢালা, পুরনো সাহিত্যে, মেয়েদের বর্ণনায়, বিস্রস্ত বেশবাশ অথবা মদির চাউনি অথবা যৌবনের উচ্ছলিত বন্ধনহীন তরঙ্গের সঙ্গে অনুষঙ্গ রাখে।
নাঃ কাল থেকে ব্রা পরেই সকালে শোবার ঘর থেকে বেরোবে সে, এবং রান্নাঘরে ঢুকবে। সকালে এই বাইরের ঘরে এত্তো লোকটোক বসে থাকাকে সে একেবারেই পছন্দ করে না, কিন্তু বাবা মায়ের মালিশ দরকার, সোমদত্তের ওই বুড়োর পেপটক, কথাবার্তা হাসি ঠাট্টা সব্বার দরকার, তাই মেনে নিতেই হয়েছে।
প্রিয়ব্রতর মত মানুষ বাড়িতে এলে বাড়িতে একটা আনন্দের হিল্লোল বয়। হাসি, গল্প, কথায় জীবন্ত হয়ে ওঠে বসবার ঘরটা। এই অসুস্থভর্তি বাড়িতে, আয়া আর চাকরবাকরের প্যানপ্যানানির ভেতর, অন্তত এই পরিবর্তনটুকুও দরকার। স্বস্তিকা নিজের কারণে সেটা বন্ধ করে দিতে পারেনা।
তাই চেপে রাখে নিজেকে। আর সকাল সকাল পরে নেয় শক্ত ইলাষ্টিক দেওয়া ভেতরজামা। কিছুদিন এরকম চলে। তারপর হঠাৎ একদিন তার ভীষণ গরম লাগবে। ম্যাক্সি পরেই সে বেডরুম থেকে বেরোবে। রান্নাঘরে ঢুকবে। এভাবে কাজ করা যায়? বাড়িতে অফিসে যাবার মত সেজেগুজে থাকতে কেনই বা হবে তাকে?
বেটা বুড়ো ভাম, তোমাকে দেখাচ্ছি আমি। তারপর নিজের ওপরেই কেমন হতাশা জাগে । রাগ আসে।
যুগযুগান্ত ধরে সব সংস্কৃতির মূল কথা মেয়েদের দিকে পুরুষের কামার্ত চাহনি। প্রিয়নাথ নিজের অজান্তেই সেই বোকামিটা করে ফেলেছেন। ওনাকে কি সত্যি দোষ দেওয়া যায়?
অবশ্য এখন উনি শুধুই পেনশান ভোগী আর স্বস্তিকার উপকারটুকু ওঁর দরকার।
মা, মা, আমাকে ডি এ রিভিশনটা পাইয়ে দে মা।
শক্ত ইলাষ্টিক, না ঢিলেঢালা জামায় আরাম পাওয়া? স্বস্তিকা মনে মনে দ্বিধা দীর্ণ হয়। জীবন দুই ভাগে বিভক্ত । একভাগ ইলাষ্টিক আবিষ্কারের পূর্ববর্তী । অন্যভাগ ইলাস্টিক পরবর্তী ।
ঠিক যে রকম পেনিসিলিন । পেনিসিলিন আবিষ্কারের আগে দীর্ঘজীবন কেমন প্রায় এক অবাস্তব ঘটনা ছিল ।
সূতিকাগারে সদ্য মায়েদের মৃত্যু, যুদ্ধক্ষেত্রে সৈনিকদের আহত হাত পায়ের ক্ষত পেকে ওঠা ও পরবর্তীকালে “গ্যাংগ্রিন হয়ে” বা “সেপটিক হয়ে” কাটা যাওয়া, এবং যে কোন লোকের পুঁজযুক্ত ঘায়ে সেপটিক হয়ে মৃত্যু-কেমন সহজ ও সহনীয়, গ্রাহ্য ও গ্রহণীয় ছিল ।
পেনিসিলিন নাকি আবিষ্কার হয়েছিল পাঁউরুটির ছত্রাক থেকে । এই কথা বলে, ছোটবেলায় স্বস্তিকার মা ভুজুং ভাজুং দিয়ে অনেক সবুজ ছাতাপড়া পাঁউরুটি খাইয়ে দিতেন ওদের ।
স্বস্তিকা এখন রান্নাঘরে কাজ করছে। সকাল আটটা থেকে সাড়ে আটটার চাপটা নিচ্ছে। ঘামছে কুল কুল। পরনে ম্যাক্সি। ঢোলা ম্যাক্সি। আমরা যাই নি মরে আজো । তবু কেবলি দৃশ্যের জন্ম হয় । এখন বাড়ীর ঠিকে পরিচারিকাকে ফ্রিজে রাখা দু দিনের পুরোনো বাসী পাঁউরুটি দিলে , সে পিঠটা ফেলে দেয়, আর বাকীটা না সেঁকে মুখে তোলে না ।
এখন আবিস্কৃত হয়েছে- পাঁউরুটির “ইউজ বিফোর ডেট” । ফরাসীদেশে রোজ যে পাঁউরুটি বানান হয়, তার ত্রিশ শতাংশ খাওয়া হয়, বাকীটা “ইউজ বিফোর ডেট” পেরিয়ে যাওয়ায় গাটারে ফেলে দেওয়া হয় ।
স্বস্তিকাদের ছোটবেলায় গাটার ছিল, গার্টার ছিল না । ওর একটিও ইজেরে গার্টার না থাকায়, প্রথম জীবনে স্বস্তিকার প্রতিটি জাঙ্গুর দড়ি হয় ভেতরে ঢুকে নয় আপৎকালে ঢিলে হয়ে গিয়ে তাকে বেদম অপদস্থ করেছে ।
অন্তত দশ বছর বয়স পর্যন্ত স্বস্তিকা জাঙ্গুর দড়িতে ঠিক মত ফস্কা গেরো দিতে শেখেনি । সর্বদাই গিঁট বেঁধে যেত এবং যখন প্রচন্ড বাথরুম পেয়ে গেছে তখন এই আবিষ্কার, যে দড়িতে গিঁট পড়ে গেছে।
এই ঘটনা তাদের পরবর্তী প্রজন্ম দেখেইনি। দেখেনি ছেলে টিন্টো বা ভাসুরপো অর্চি। দেখেনি অর্চির বান্ধবী সুনন্দনা।
মেয়েটা কবিতা লেখে, নাকি। অর্চি বলে। ইংরিজি অনার্স পড়তে অক্সফোর্ড যাবে। নাকি। অর্চি বলে।
জীবনে, সেই থেকেই স্বস্তিকার সব দড়িতে গিঁট পড়ে যায় । ফ্রয়েড সাহেব তো বলেই গেছেন- যেখানে বাঘের ভয়, সেখানেই সন্ধে হয় , ইত্যাদি ইত্যাদি।
ঠিকঠাক ভাবে বলতে গেলে-ইজেরে ইলাষ্টিক ব্যাপারটি চালু হল, যখন স্বস্তিকাদের বয়স বারো তেরো । এর আগে, হয়ত বা মধ্যবিত্ত জীবনে ইলাষ্টিকময় ইজের ছিল না, ছিল অপেক্ষাকৃত উচ্চবিত্ত মহলে । যেমন ,যাঁরা নিউ মার্কেটে মানে হগের বাজারে রহমানের দোকানে মাসের বাজারটি করতেন ।
সেই সব দুর্লভ মহিলারা ন্যাকড়ার পুঁটলি ফেলে উচ্চ টেকনোলজির স্যানিটারি ন্যাপকিন এবং সন্তানের জন্য গুটিয়ে নেবে আসা অথবা দড়ি বাঁধা সুতির মোজা ও সুতির জাঙ্গিয়ার বদলে, ইলাষ্টিক যুক্ত মোজা, ইলাষ্টিক যুক্ত ইজের- এমনকি পৈতের জন্য পুত্রের জন্য ইলাষ্টিক যুক্ত ধূতির আমদানি করতেন, সে তো নিউ মার্কেট থেকেই।
বাবারে কি তাড়াতাড়ি আমরা ইলাষ্টিকের দুনিয়ায় প্রবেশ করেছি !!!!
ভাবতে ভাবতে স্বস্তিকা রুটিতে দ্রুত হাতে মাখন মাখায়। টিন্টোর রুটিতে। আর সোমদত্তর রুটিতে মেয়োনিজ। কারণ মাখন খেলে কোলেস্টেরল হবে। সর্বত্র পরিবর্তিত হচ্ছে তাদের খাদ্যাভ্যাস, পরিধানের অভ্যাসের মতই।
সে তার চিন্তাকে ফের নিয়ে আসে ইলাষ্টিকের দিকে।
মাকে যদিও সে দেখেছে ইলাষ্টিক বিহীন ব্রেসিয়ার ব্যবহার করতে , কিন্তু স্বস্তিকাদের বড় হবার সঙ্গে সঙ্গে দুরু দুরু বক্ষে প্রবেশাধিকার ঘটেছে ওই আশ্চর্য লোভনীয় বস্তুটির জগতেই। সে অর্থে স্বস্তিকারাই প্রথম ইলাস্টিক পর্যায়ের লোক। হ্যাঁ, তারপর আর ফিরে তাকাতে হয়নি। শুধু নব নব ধরণের ইলাস্টিক বস্তুর সঙ্গে সমঝোতার গল্প তৈরি হয়েছে।
এর পরের সমস্যাটা অন্য স্তরের। সমস্যাটা ঢিলে হয়ে যাওয়া ইলাস্টিকের । সম্পর্কের মতই, ইলাস্টিক বহু ব্যবহারের ফলে ঢিলে হয়ে যায়। তখন তাকে পরিত্যাগ করতে হয়। এই ঢিলে হয়ে যাওয়া আর পরিত্যাগের সময়কালের মধ্যে একটা ফাঁক থাকে, কে টেনে টেনে ফাঁকটাকে কতটা বড় করে তুলতে পারে, কে ইলাস্টিককে টেনে টেনে লম্বা করার মতই , ওই ঢিলে হয়ে গেছে-বোধের দিনটি থেকে আস্তাকুঁড়ে বিসর্জনের দিনটির দূরত্ব ক্রমেই লম্বা করতে পারে, সেটা একটা অন্য হিসেব, অন্য অঙ্ক। নির্ভুল অঙ্ক কষতে শিখে গেলে অনেকবার ভুল করা প্রয়োজন।
স্বস্তিকাকেও বহুবার ফিতে ঢিলে হয়ে জামা বা ব্লাউজের থেকে ফসকে গেছে, স্ট্র্যাপ বেরিয়ে থাকা ব্রা-এর কী ভীষণ নিষিদ্ধতা, আকর্ষণ এবং বিষণ্ণতা, তা যারা ঐ বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে তারাই জানে।
আর একটা নতুন উপদ্রব ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। স্যানিটারি ন্যাপকিনের মতই , ওয়াশিং মেশিনও মধ্যবিত্তীয় উপমাউপমানের মধ্যে ঢুকে পড়েছে তাদের যৌবনকালেই। যদিও হাতে গোণা পরিবারের স্বামীরাই, স্ত্রীর “আমার একটা ওয়াশিং মেশিন চাই, কাজের মেয়েটা বার বার অ্যাবসেন্ট করলে হাতের নড়া ছিঁড়ে যায় কাপড় কাচতে” জাতীয় বচন শুনে ওই ফাঁদে পা দিয়েছেন, এবং ঘর জোড়া জিনিসটি কিনেও শেষমেশ কাজের লোকের দয়ার ওপরেই মূলত নির্ভরশীল থেকেছেন, কারণ দেখা গেছে শাড়ি ব্লাউজ এবং ব্রেসিয়ার জাঙ্গিয়া ওয়াশিং মেশিনে ঢোকালেই ছিঁড়ে ফর্দাফাঁই।
আঁট আন্ডারগারমেন্ট এবং আঁট দাম্পত্যকে ভুল করে ওয়াশিং মেশিনের যাবতীয় হট কোল্ড হাই স্পিড নর্মাল বিবিধ সাইকেলের মধ্যে দিয়ে চালিয়ে দিলেই ইলাস্টিকের বারোটা বেজে গিয়েছে এবং সবকিছু ঢিলে হয়ে গেছে।
এই সমস্ত ঘটনাই স্বস্তিকাদের দিদার জীবনে ছিল না। দিদা বা মা চল্লিশ বছর বয়সে প্রৌঢ়া বা মধ্যবয়সিনী আখ্যা পেতেন এবং তাঁদের জীবনে আঁট আর ঢিলে নিয়ে মাথা না ঘামালেও চলুত। এখন আর চলে না। এখন সর্বদাই আঁট থাকতে হয় কিন্তু এই নিয়ে টেনশনে থাকতে থাকতে তাদের সবকিছুই ঢিলে হয়ে যাচ্ছে।
সাহিত্যিকদেরও অব্যাহতি ঘটেছে , সদ্য ঘুম থেকে ওঠা বৌদিদের শরীর কতটা আঁট আর বেশবাশ কতটা বিস্রস্ত এই নিয়ে আলোচনা থেকে। উলটে , সরাসরিই, বলে দেওয়া যায়, একটা মেয়ের শরীরের গড়ন, মেয়েটা ডবকা বলে ইশারায় সারতে হয়না। মেয়ে লেখকগুলোও তো দিব্যি লেখে আজকাল, দেখে স্বস্তিকা, আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে মেয়েরাই নাকি নিজের বালিঘড়ির মত ফিগার চেক করে নেয়। লেখে, স্তনের গড়োন ভাল রাখতে কী কী করা উচিত। মেয়ে পত্রিকা নামে যে সেমি পর্নোগ্রাফিক পত্র পত্রিকাগুলো বেরোয়ে, সেগুলোও এসব লেখে অবিশ্যি, আর তাদের পেটোয়া মেয়ে ও পুরুষ সাহিত্যিকরাও।
খাবার ঘরে এবার অর্চি আর টিন্টোকে ব্রেকফাস্ট দিয়ে দেয় স্বস্তিকা, সসেজ, ডিমপোচ, পাঁউরুটি। ডাক দেয় কড়া গলায়, এসে যাও, অর্চি। এসো টিন্টো।
তারপর , তার বুকের দিকে টানা একদৃষ্টে তাকিয়ে থাকা গদগদ চেহারার প্রৌঢ় প্রিয়নাথের সামনে দিয়ে অলস মন্থর পদক্ষেপে বেডরুমে ঢুকে যায়। মনে মনে বলে, না আমি কুঁকড়ে যাব না চতুর্দশী মেয়ের মত, সদ্যযৌবনবতী ছুকরির মত, পাড়ার ছেলেদের টিটকিরি আর তাকানোর সামনে যেমন যেতাম।
আমি ইলাস্টিকের ভাল মন্দ দুইই জানি।
সকালগুলো আমার। তাই আমি ইলাস্টিকের প্রবেশ নিষেধ করেছি সকালে।
সে আপনি যতই তাকান। চোখ দিয়ে চাটুন।