পার্থজিৎ চন্দ-এর কবিতা
অবাক সফর
৬
বনে যেতে যেতে তস্করে চীবর ছিনিয়ে নিয়েছে। আমি নিশাচর অন্ধ-পাখিটিকে উপহার দিয়েছি পূর্ণ চাঁদের আলো। তবু কেন এই অসীম অরণ্যে ঘুরি? কেন নিজেকে কামড়াই, ক্ষতবিক্ষত করি? কেন মনে হয় এ-বনের ভেতর কঠিন, রুদ্ধ দ্বার আর দ্বার রয়ে গেছে? আমি ঠোক্কর খাই, ছিটকে পড়ি গলিত লাভার মতো রোদ্দুরে। শীতে শুয়ে থাকি সে অদৃশ্য দরজার কাছে। গন্তব্য অজানা, বহুদূর থেকে অলীক ঘণ্টার ধ্বনি ভেসে আসে কখনও-কখনও। আর ভেসে আসে এক খরস্রোতার গর্জন। একদিন তেষ্টায় সে নদীর জল গণ্ডুষে গ্রহণ করেছি। দেখেছি তেষ্টা মেটানো জলে ভেসে আসছে মৃতের শরীর। আমার শরীর
একে-একে খুলে যায় রুদ্ধ দরজাগুলি। শূন্য আলোর মন্দির দুলে ওঠে দিগন্তের কাছে
৭
সেই জেন-সন্ন্যাসীর কথা মনে পড়ে, যিনি স্বপ্নে প্রজাপতি হয়ে ফুলে-ফুলে ঘুরে বেড়াতেন। তারপর ঘুম ভেঙে গেলে অনুধ্যানে ডুবে গিয়ে ভাবতেন, হয়তো তিনি প্রকৃতই প্রজাপতি; পতঙ্গের স্বপ্নের ভেতর মানুষের রূপে, ঘুম থেকে উঠে তিনি একটি ঘাসের শিষের দিকে চেয়ে রয়েছেন
সেই জেন-সন্ন্যাসীর কথা মনে পড়ে, যিনি সমস্ত সম্ভাবনার শেষে অনুভব করেছেন- সে শূন্যতার কাছে মানুষের ঘুম আর প্রজাপতির ডানার স্পন্দন অনুরূপ। আর তাই, মানুষের ঘুমের মধ্যে প্রজাপতি আর প্রজাপতির অলীক স্বপ্নে মানুষের ঘুম সমান সত্য
অভিন্ন, একক
৮
বরফের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা পাখি। বাঁশির ভেতর নিঃশ্বাস যেন সাবলীল হয়ে আসে।
আমার জন্মদিন; জারুলগাছের ছায়া দুপুরে দীর্ঘ
সূর্য উঠেছিল; সূর্য অস্ত যাবে টিলার ওপারে। সন্ধ্যায়।
বরফ-পাখির মধ্যে যেন সাবলীল হয়ে আসে বাঁশির শব্দ