
হিন্দি ভাষার কবি সুশীলা পুরীর কবিতা
অনুবাদ – অমৃতা বেরা
হিন্দি ভাষার কবি সুশীলা পুরীর জন্ম ও শিক্ষা উত্তরপ্রদেশে। দৈনিক জাগরণ থেকে শুরু করে হিন্দি ভাষার প্রথম শ্রেণির পত্রপত্রিকায় নিয়মিত লিখে আসছেন। তাঁর কিছু কবিতা অনূদিত হল। অনুবাদ করেছেন অমৃতা বেরা
প্রেম
১
প্রেম বক্রোক্তি নয় বটে,
কিন্তু অবশ্যই অতিশয়োক্তি
যেখানে অজস্র শব্দ লাটিমের মতো
ঘুরে ঘুরে, ঘুরতেই থাকে
কল্পনা দিয়ে বোনা স্বপ্ন আর
তিলমাত্র স্বস্তির জন্যে
২
প্রেম সেই মহাদ্রুম
যাতে চড়া যায়না
কেবল প্রতিক্ষা করে যাওয়া,
প্রতিক্ষা এক পাখির জন্যে
যে ঠুকরে খেয়ে
হয়তো বা নীচে ফেলবে
মিষ্টি এক ফল।
আর যখন হাতে আসবে না সেই ফল!
সম্পূর্ণ নয়, আধ খাওয়া………
যখন
৩
প্রেম
পাহাড়ের মাঝে অবস্থিত
মৌন এক ঝীল
সেখানে জলজল অর্থে অশ্রুজল
সেখানে স্থিরস্থির জলে
পলায়মান মাছমাছ
সেখানে একান্ত একান্তের ডুবুরী
খুঁজে চলে, খুঁজে চলে, এক আঁজলা হাসি
এক চোখচোখ আকাশ।
৪
প্রেম, ভগ্নস্তূপের অন্দরে
ঝোপ ঘেরাঘেরা এক অতল কুয়ো
যার মধ্যেমধ্যে আমরাআমরা ধ্বনিধ্বনি হয়ে বেজে চলি
যাই, ফিরে আসি
শতাব্দীর চুপ কথায় নিথর সেই জলে
ডালপালা, সবুজ কিছু পাতা, আর আকাশ
নিজের মুখ দেখে
জলের আত্মা তার অমলিন যৌবন
আর ধনিস্পন্দনধ্বনিস্পন্দনে বারবারবার কেঁপে-কেঁপে ওঠে।
৫
প্রেম, অগ্নিঅগ্নি, আঁধি, বাণ, বর্ষণ
থেকে মাথা বাঁচানো, টালির ঘর, মাটির।
মনের নুন-হলুদ, দেহের চাল গুঁড়ো দিয়ে
তৈরি হয় আলপনা
চৌকাঠে শ্রীমই ছাপ, আঁকা
যেখানে আগল আর আঁখিজল
কিন্তু দরজায়ে খিল থাকে না।
৬
প্রেম, এক ছোট্ট কাঠবেড়ালিকাঠবেড়ালি
বটগাছের ছালে – লাফিয়ে-ঝানপিয়েঝাঁপিয়ে চলে
বেড়ালির পায়ে-পায়ে আঁকা হয়হয়ে অদৃশ্য একটানা আলপনা
আর কাছে গেলেই
টুপ করে লুকিয়ে পড়ে, দৃশ্য সমেত
ওই উঁচুতে, অদেখা অজানা কটোরে।
৭
প্রেম, খিদেখিদে, অগ্নি ও
উনান, রান্না-বান্না আর স্বাদের মধ্যবর্ত
কড়াইয়ে ফুটতে থাকা
এক চিমটে চুপকথা, আর অনেকটা বাষ্প………
৮
প্রেম, একটা একটা খরগোশ
কচি দুব্বার খিদে নিয়ে
জঙ্গলে-জমিতে ঘোরে, লাফায়,
ভয়ে কম্পমান, লুকিয়ে পড়তে চায় মনের
সঘনেমনের সঘনে অন্দরে-কোটরে। ও
ওর নরম তুলতুলে ত্বকের
ব্যাপারী এই দুনিয়া
কোনওদিন জানেনা মুল্য
ওই তিলমাত্র অমল প্রাণের। মনের সঘনে