সহ সাঁতারুদের প্রতি উপদেশ
কমলা দাস
ভাষান্তর: অনিন্দিতা গুপ্ত রায়
কমলা দাস (৩১ মার্চ ১৯৩৪--- ৩১ মে ২০০৯) জন্মসূত্রে মালয়ালাম, এবং মালয়ালি ভাষায় মাধবীকুট্টি নামে সাহিত্যচর্চায় খ্যাত, বিবাহসূত্রে দাস ও পরবর্তীতে ইসলাম ধর্ম গ্রহন করে কমলা সুরাইয়া নামেও সমধিক পরিচিত। জীবিতাবস্থায় অজস্র বিতর্ক ও সম্মানের শিরোপায় ভূষিত এক প্রবল ভারতীয় কন্ঠস্বর যিনি একই সঙ্গে নিজ ভাষা ও ইংরেজিতে লেখালেখি করে অর্জন করেছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। স্পষ্ট চিন্তা ও উচ্চারণের দ্বিধাহীন স্বচ্ছতা তাকে বহু বিতর্কের কেন্দ্রে টেনে এনেছে বারবার। লিখে গেছেন নিজ অস্তিত্ব, নারীস্বর ও যৌনতার অকপট চাহিদা ও অবদমন যা ভারতবর্ষের নারীলেখকদের পক্ষে সেসময় উচ্চারণ করা সহজ ছিলনা ততটা। মাত্র ১৫ বছর বয়সে বয়স্ক পুরুষের স্ত্রী হিসেবে জীবন বেছে নেওয়ার পাশাপাশিই কলম তুলে নিয়েছিলেন হাতে। কবিতা, উপন্যাস,ছোটোগল্প, ফিচার, আত্মজীবনী--- অজস্র লেখার মধ্যে কমলা দাস রেখে গেছেন সম্পূর্ণ ভারতীয় এক স্বর যা ভাবনা ও আঙ্গিকে পাশ্চাত্য প্রভাব মুক্ত। উগ্র নারীবাদের তকমায় কেউ কেউ তাকে বাঁধার চেষ্টা করলেও কমলা দাস আসলে স্বাধীনতা ও সাহসিকতায় যুগের থেকে এগিয়ে থাকা এক অদম্য লেখক। তাঁর আত্মজীবনী পৃথিবীর পনেরোটি ভাষায় অনুদিত। পঁচিশটি কবিতার বই এবং অসংখ্য ছোটগল্প, উপন্যাস ফিচার তাকে এনে দিয়েছে দেশেবিদেশে অজস্র সম্মান। তাঁর কবিতা সুখপাঠ্য নয়, তা পাঠককে তাড়িত ও বিব্রত করে, ভাবায়।পেন এশিয়ান পোয়েট্রি প্রাইজ, সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার ইত্যাদি ছাড়াও নোবেল পুরস্কারে বাছাইতালিকাভুক্ত হয়েছে তাঁর একাধিক লেখা।)
সাঁতার শিখে যাবার পর
এমন কোনও নদীতে যেও না
যার পৌঁছনোর জন্য কোনও সমুদ্র নেই
যে জানে না তার গন্তব্য কোথায়
শুধু বয়ে যাওয়াকেই যে নিয়তি বলে জানে।
ক্লান্ত রক্তস্রোতের মত সে কেবল প্রাচীন স্মৃতির ফেনা বয়ে চলে।
বরং যাও, সমুদ্রে সাঁতরাও
আদিগন্ত নীল সমুদ্রে সাঁতার কাটো
সেখানে প্রথম যে ঢেউটির সঙ্গে তোমার দেখা হবে, সে তোমার শরীর,
সেই চেনা আপদবালাই।
কিন্তু যদি তাকে পেরোতে শিখে নাও
তুমি নিরাপদ, হ্যাঁ, এর বাইরে তুমি নিরাপদ।
কারণ এমনকি ডুবে যাওয়াও আর কোনও তফাত করবে না তখন…
Khub bhalo kobita ebong anubad