শ্যামশ্রী রায় কর্মকারের কবিতা
চাঁদিপুরে একদিন
একটি বিরলতম সমুদ্রের নুন মাখা দিনে
জেলে নৌকার জালে শেষতম রশ্মির মোহর
ঝিকমিক করে ওঠে, অহেতুক এক ফাল্গুন
ঢেউয়ের উচ্ছাসে মুঠো ভরে নেবে বলে
ছুটে আসে, আশ্চর্য যুবক
লেখায় বসবে বলে ঘনঘন ছায়া বদলায়
কিবোর্ডে হাওয়ার ছল করে
আচমকা ছুঁড়ে দিলে পলাশ-বিস্তার
আমি বেঁধে রাখি তার ছায়ার স্থিরতা
একশো বছর ধরে সমুদ্র সরে সরে যায়
ডুবে যাওয়া মধুকর প্রাচীনের সোনা উগরায়
সোনার আড়ালে বসা স্মৃতি এক আলবাট্রস
নাবিকের অশ্রু তার দূরঘেঁষা ডানার পালক
কতদিন পরে আজ বালি মাখি, ডানা ঝাপটাই
মরতে মরতে বাঁচি, আরও যারা আসে, ঢেউ খায়
কারো প্রেম চন্দন , অঙ্গার-জাতক কেউ, পোড়ে
বালুতটে লিখে রাখে প্রেমিক বা প্রেমিকার নাম
ঢেউ মুছে দেয় সব
ঢেউয়ের শরীর গড়া অনন্তের অশ্রু ও লবণে
একমাত্র সেই তো জানে
যত উঁচু হয় প্রেম
তত সে ধ্বস্ত হয় নিরুদ্ধ কান্নায়
শ্রাবণী মেয়ের গল্প
না হওয়া কথার মতো পাকে পাকে জড়ানো দুপুরে
বিষণ্ণ শহর দেখে বড় মায়া হয়
গা এলিয়ে পড়ে আছে, আলুথালু
মা যেমন পড়ে থাকত বাবার ফিরতে দেরি হলে
রানীকুঠি বাসস্টপ, নীল স্কার্ট, কাঠের বোতাম
ছুটন্ত ঘোড়াদের ক্ষুরের ধূলোর মতো শার্ট
একলাটি হেঁটে যাচ্ছে
পিঠে হৃত কৈশোরের ভার
মানুষ যেমন চায়, অথচ পায় না
একটু দূরের কিছু, কাছে আসলেই ভেঙে যাবে
এমন একটা রঙ লেপ্টে আছে তার চোখেমুখে
এমন একটা মেঘ ঠিক তার মাথার ওপর
বাবা-ছায়া হয়ে ভেসে ভেসে যাচ্ছে
যেমনটি যায়
পৃথিবীর সমস্ত বাবা-হারা মেয়ের মাথায়
বদল
তোমার ওপাশ ফিরে শুয়ে থাকা ডৌলের মতো
ক্রমশ বদলে যাচ্ছে কবিতার ভাষা,এই দেশ
হাঁটুর ভাঁজের মতো স্থূল হয়ে আসছে, পার্থিব
ভাবতে আশ্চর্য লাগে
প্রকৃতি শাশ্বত আছে, জীবনের পর্বগুলি একই
আমাদের কথ্যভাষা বদলে গেছে, ধারণাসমূহ
ভালো কবিতা
ধন্যবাদ। আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা নেবেন।
শেষ দুটি কবিতা বেশি ভালো লাগল।
ধন্যবাদ