
শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তীর কবিতা
ডাইনোসর
মলের প্রতিটি তলায় আজকাল প্রাক ইতিহাসের গন্ধ পাই।
কখনও বনজ হরিণ
তার কস্তুরি রন্ধ্রে নিচ্ছে কোনও কাঁটা ওঠা ডাইনো
ওর রকম সকম দেখে মনে হলো
এখনও পৃথিবীর বুকে অর্ধেক চাঁদ
আর সহস্র প্রজাপতি ডানা মেলে ওড়ে।
লেজ আছড়াচ্ছে এক দাঁতাল
বিভাবহীন নগ্নতা
তাকে লজ্জিত করে না আর
ওরা সবাই বিন্দু জুড়ে জুড়ে
এক জোড়া ভুরু তৈরি করছে তোমার
তার মধ্যে উলম্ব ভরকেন্দ্র হয়ে ভাবি
ঝাঁপ দেব কিনা
অজস্র বিন্দু বিন্দু ব্যথার জোনাকি
মাতাল ছন্দে ওড়ে ঘর থেকে ঘর
ভিতরঘরের ডাইনো
বাইরের বসন্তকানন দেখে মিটিমিটি
তাত্ত্বিক দাঁত কপচায়।
অঝরা
এই এক বহুতল থেকে বহু নীচে
গুটিপোকার মতো জনমানসের দিনযাপন
তাদের বাঘবন্দি বসবার ঘর
তাদের অবষণ্ণ উড়ুক্কু উরুর মধ্যে সেঁধিয়ে চাটতে থাকা সভ্যতার শেষ মাইলফলক
অভুক্ত মা আর সন্তানের রূপোর আর সোনার কাঠি
হৃদস্পন্দনের মধ্যে হঠাৎ চিনতে পারা ঠোঁট
জঙপরা কাস্তে আর চকচকে ধারালো ঈদের চাঁদ
সব দেখি
অঝোরধারার মতো দেখি
নিজেকে সিকান্দার ভাবি
তারপর
রাত বাড়ে
পা ভারি হয়
তাদের ভার
চোখের পাতার মতো নয়।
মধ্যান্তর
ঝড় থেমে যাবার পর
শুকনো শালপাতার ইকাবানা
শীততাপ বিরূপা কটেজে বসে দেখি
ঝড় থেমে যাবার পর
যেটুকু ওলটপালট আর সরীসৃপের ওঠাবসা
জানালাআগুন।
হেমন্ত উষ্ণতা নিয়ে জরাসন্ধ যাপন
আমার দুপারে জমে গুল্মের বন
বিনিদ্র রাতে দেখি নদীর প্লাবন
আমার দুচোখ নয়াচর।
ঝড় থেমে গেলে
আবার তানপুরায় সুর ধরে কেউ
সে সুরে পুলক কথা দেন
আমি ভাবি বিরূপাক্ষ কটেজের কথা।