শংকর চক্রবর্তীর কবিতা
পার্বণ
পার্বণের পর সবই যেন কীভাবে নিশ্চুপ হল
সব পথটুকু তুমি পেরোতে পারোনি তাই দেখতে পেলে না
দৈত্যটা মজার ছলে সেদিন উঠোন জুড়ে নৃত্য করছিল
রাস্তায় তখন কত মৃত মানুষের যাত্রাপালা
তোমাদের বাড়ি থেকে দেখা যায় দূরে
অনেকটা দূরে দু’টো বাচ্চা ছেলে কুয়াশায় ঢাকা মাঠ পেরোচ্ছে অবাক-
রাংতায় মোড়ানো ঘোড়া টগবগ করে ছুটছিল
পার্বণ পেরিয়ে আরও কিছুটা দূরের মাঠও ক্রমাগত সরে সরে যায়
আগুনও জ্বলতে থাকে দাউ দাউ হাড়-মাংস খেয়ে
দিনগুলি পার্বণের কাছাকাছি এসে ধুপ করে বসে পড়ে
ফ্যাকাশে ছবিটা যত্নে প্রতিদিন তোমাদের দেয়ালে সাদায় মিশে যায়।
অংশত পোড়া-কাহিনি
সমস্ত ঘুমের শেষে কোনো এক শরণার্থী বন্ধু হয়ে এলো
হয়তো থাকতে চায় গা-জুড়িয়ে চিরদিন পাইন-বাতাসে
এক মুঠো বাতাসার মিষ্টি দিয়ে তাকে ঘরে বসিয়েছো তুমি
তার স্তব্ধ হাহাকার মাথা নীচু করে কিছু বলছিল যেন
পুরনো বর্ষার গল্প শুনে সেও জানালার বাইরে তাকায়
পড়শির মৃত্যু-কথা খবর পেয়েছে কি না বলেনি কখনো
তুমি বিছানায় বসে জকবন সম্পর্কে সস্তা গল্প লিখে গেলে-
তার স্বামী-কন্যা-সুখ পালিয়েছে ভবঘুরে হৃদয় বিছিয়ে
তার মনসামঙ্গল তুমি কমন্ডুল নিয়ে দেখেছিলে ঠিক
চুপিচুপি বলেছিলে-অধরা ধুলোয় মাখা তোমার ধূর্ত পা
সেই শরণার্থী গল্প ছেড়ে উঠে বসে ভাঙা খিড়কির পাশে
কেউ যে কীভাবে পোড়ে-চুপচাপ বসে শোনে সন্তাপের কথা।