রাজু দেবনাথ-এর কবিতা
আড়াল
নীরবতা দিয়ে শুরু হয়ে ,যা একদিন-
স্তব্ধতায় এসে স্থায়ী হয় ,
সেই মৌনতা অন্তর্বাসের মতো
সবাইকে দেখাবার নয় !
এই অন্ধকারে
মানুষের কাছ থেকে মানুষ সরে যা নিঃশব্দে –
চেনা চেনা মুখগুলো -অচেনা লাগে,
এই অন্ধকারে আমি একা
ছায়া গুলো খুঁজে বেড়াই !
শেষ বারের মতো
এক স্তব্ধতার বাড়ি বানিয়েছি –
নিজের ভেতর !
সেই বাড়িতে নিশ্চিন্তে থাকবার কথা
নিজের মতো করে,
তবু এই বাসা বদলের আগে
শেষ একবার বাইরে তাকিয়ে দেখি-
যদি কোনও আর্দ্র হাত পিছু ডাক দেয়
যদি বলে: এসো
এই সব দুপুরগুলো
এইসব দুপুরগুলকে মাথায় করে
নিঃশব্দে তোমার কাছে এসে দাঁড়াই ,
লেজ নাড়ি , কাছে ডাকবে ভাবি –
ঢেউ গুলো তোমার কাছে এসে লুটিয়ে পড়ে
তুমি ভিখিরি ভেবে –
দরজা বন্ধ করে, ভেতরে চলে যাও !
সাদা নির্জনতা
নীরবতা জমে জমে
একদিন স্তব্ধতার পাহাড় হয়ে যাবে।
কোনও দিন সেই পাহাড়ে বেড়াতে এলে
আমার ঠাণ্ডা সাদা নির্জনতাগুলো মুঠোয় নিয়ে –
বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে বেশ মজা পাবে তুমি !
ঝাউবন
ঝাউবনের ভেতর মন পড়ে আছে।
এলোমেলো হাওয়ায় –
নীরব একাকিত্বের আর্তি শোনা যায় !
একাকিত্বের গান
দুপুরের বুক জুড়ে স্তব্ধ হাহাকার
নীরব সে-গান গায় একাকী প্রান্তর;
গোপন- গহীন থেকে যেন বার বার
ঢেউ আসে ,মুছে যায় সব চরাচর !
অতল গভীরে যত দুঃখ গুলো আছে
ডুবোপাথরের মতো জলের ভেতর
নির্জনতা নিয়ে আজ সব গাছে গাছে
একাকী সে-গান গায় , নিবিড় শেকড় ।
শ্রাবণ
প্রতিটা বৃষ্টির ফোঁটা – আগুনের মতো,
পুড়ে যায়, পুড়ে ছাই হয়ে যায় যত
শরীর ভিজেছে সেই অঝোর ধারায়
পতঙ্গ আগুনে তবু ঝাঁপ দিয়ে যায় !
প্রতিবিম্ব
এখন আয়নার সামনে দাঁড়ালে –
একটা ধুধু প্রান্তর দেখা যায় শুধু !
একাকিত্ব
এক জীর্ণ পরিত্যক্ত বাড়ির মতো একা !
গৃহিণী
প্রজাপতির ডানার সব রঙ
এলোমেলো অবিন্যস্ত ছড়িয়ে আছে
তার ঘুমের ভেতর!
বহুদিন বৃষ্টিহীন চোখ জানালায় ——-একা !
প্রাত্যহিক শ্যাওলা ভরা সংসার সামলাতে সামলাতে –
ফুল ফোটাবার সময় বয়ে যায় !