মণিশংকর বিশ্বাস-এর কবিতাগুচ্ছ

মাধবীলতার কবিতা

যে কোনো কবিতাই রাজনৈতিক—
মাধবীলতার বৃষ্টি ধোয়া আকাশ …

এবং কবি মূলত সমাজবিরোধী—
একটা অ্যানিমোমিটার, যার রাতে ভালো ঘুম হয়নি

‘কোনো কোনো কবিতা আছে যা শেষ হয়েও শেষ হয় না।’
—এরকম এক-একটা কবিতা পড়লে মনে হয়
শেষ লাইনটা মিশে গেছে অনন্তে…
ঠিক ওরকম একটা চাঁদ উঠেছে আকাশে—

অনেক রাতের দিকে বিবাহিত প্রেমিকের কথা ভেবে
তোমারও হয়তো মনে হয়—
মার্কসবাদের মতো রোমান্টিকতা আর হল না…

বিষ্ণুপুর

এখানে জঙ্গল খুব সরল এবং মন্থর হয়ে আসে, তারপর—
লতা আর ঝুরি নেমে যায় শান্ত বালি ঘড়ির ভিতর—
এইসব পার করে ছোট এক নদী সিদ্ধান্ত নেয়
কাঠের সেতুর—

কাঠ-পোল পার করে চায়ের দোকান, এই সন্ধ্যা…

সাবিহার হাসি এক ফালি কাচের মতন গেঁথে আছে
আমার মাথায়, যেন চাঁদ—

সত্যিই চাঁদ নয় তো?

জানি মৃত্যু কোনো এক দেবদূত—
ছদ্মবেশে চায়ের দোকানে বসে থাকে রোজ
দূরে, মাঠের ভিতর চর্বির মতো শাদা পথ।

আজই যদি চলে যাই
যাব দুঃখের মহোৎসবে—
ও বাড়ির সামনে দিয়ে যাব—

বাদামী বারান্দা থেকে রাস্তার দিকে ঝুঁকে-পড়া
সাবিহার নিরুত্তাপ গায়ে লাগিয়ে


শিরোনামহীন ১

মৃত্যু যা বয়ে আনে তা-কি বিক্রয়যোগ্য?
পাঁচিলে-ঘেরা কবরস্থানে দাঁড়িয়ে আমি ভাবি জিজ্ঞেস করব—
আমার একদিনের যৌনসঙ্গিনীকে।

ঘাসের গন্ধের মতো ভবিষ্যৎ তিরতির করে বয়ে যাচ্ছে—
কানের লতির নিচে হাত দিয়ে
তাকে আমার একটা লাল পিঁপড়ে মনে হয়

পাউরুটির ভ্যান বা শববহনকারি গাড়ি—
(পিঁপড়েটির কাছে কোনো পার্থক্য নেই)
পিঁপড়েটাকে ধরে কিছু একটার ভিতর ছুঁড়ে দিই আমি—

যেমন বহুকাল আগে আমাকেও একটা বিশাল পাইপের মধ্যে
ছুঁড়ে ফেলা হয়েছিল—

সেই পাইপের ভিতরেই হাঁটতে হাঁটতে
আজ এখানে এসেছি, সস্তা-যৌনতার লোভে—

অসংখ্য বাঁদরে ভরা গাছের নীচে সন্ন্যাসী যেরকম
বা একজন শেরপা, কলকাতায় বাসের রডে ঝুলতে ঝুলতে…


শিরোনামহীন ২

জ্বলন্ত ঘাসের একটা বৃত্তের মধ্যে
গ্রাম্য-চার্চের মতন অপ্রতিভ সুন্দরী মেয়েটি—
এই স্বপ্নে ঘুম তার কোটরের দিকে উড়ে যায়।

মনে হয় ঈশ্বর যেন-বা এক অবদমন—

এইবেলা আমাকেও টেনে নাও— জড়ো করো—
অসংখ্য মীনের বিফল উচ্ছ্বাস, সমবেত উচ্চাকাঙ্ক্ষা
হাতের মোচড়ে তুমি মসৃণ করে দাও—

কালো জলের উপরে ভাসমান শ্যাওলা সরিয়ে
আমিও আবার চোখ মেলে দেখি—
চোখে আর জল নেই কোনো…

কত সহজ ভাবে গাছের পাতারা মরে যায়—
ভেসে থাকে জলের উপরে—

যেন মৃত্যু নেই কোনো

লেখা

অর্থহীন শব্দগুলি যখন ঘিরে ধরছে তুমুল—
বাংলা কবিতা এবং আমাকে
ঠিক তখনই আমি তরুণ কবিকে
কবিতায় নৈঃশব্দ্যের অর্থ সম্পর্কে বলবার কথা ভাবি—
অথচ নৈঃশব্দ্যের অর্থ হয় না লেখার জীবনে।
শব্দে শব্দে অস্থির লেখা—
ভোর থেকে অন্যের বাড়িতে বাসন মাজে
দুপুরের পর থেকে নিজের সশব্দ সংসার ও সন্তান নিয়ে
নাস্তানাবুদ লেখারাণী মণ্ডল রোজ রাতে বেদম মার খায়
নেশাখোর হারুর হাতে—
তবুও যখন অনেক রাতের দিকে
নুসরত আলো আসে জানালা দিয়ে-

লেখা ভাবে, এই আলো, নতুন বাংলা সিনেমার পোস্টার—

হারু যেদিন মদ খাবে না
দুজনে হলে গিয়ে দেখে আসবে

CATEGORIES
TAGS
Share This

COMMENTS

Wordpress (4)
  • comment-avatar
    Anup Sengupta 4 years

    শিরোনামহীন-১ এবং শিরোনামহীন-২ এই দুটি কবিতা অনবদ্য।

  • comment-avatar
    Anuj Majumder 4 years

    একরাশ মুগ্ধতা, অসাধারণ

  • comment-avatar
    প্রীতম বসাক 4 years

    খুব ভালো লাগলো। এটা দিয়ে তৃতীয়বার পড়লাম। প্রথম কবিতাটির বিষয়ে কিছু কথা জমলো। চিঠিতে জানাবো দাদা

  • comment-avatar
    Raju mondal 4 years

    আহা কি অপূর্ব লেখা সব

  • demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes