মণিদীপা বিশ্বাস কীর্তনিয়ার কবিতা
গোঙা গোপাল ও ঘাসের পৃথিবী
পুড়তে পুড়তে ফুরিয়ে যাচ্ছে ছাই
পুড়তে পুড়তে ছাইয়ের পাহাড় বাড়ে
আমার তো এই সাড়ে তিন হাত জল
বোবা এবং অন্ধ মানুষ নাচ দেখাচ্ছি তাকে
অন্ধ দোলে ত্রিতাল ছায়ার বোলে
রঙের কিছু ধারণা দেয় সেও
আলোয় আমি হাত রাখিনি বলে
ছাই আমাকে দখল করে নেয়
আখার পাড়ে আমায় জড়ো করে
গোঙাগোপাল আগুন দিলো শুকনো ঘাসের বীজে
সেদিন থেকে রাত্রি নিয়ে উড়ি
মাথাভর্তি আংরা ঝরে পড়ে
ফুরিয়ে যাচ্ছি জ্বলন্ত ফুলগাছ
ফুরিয়ে যাচ্ছি জলের ইতিহাস
শূন্যদানায় অন্ন তবু ফোটে
মুথাঘাসের আলোরঙের শাঁস
ভাতের থালায় দেখি প্রতিচ্ছবি
জলের এমন বুক ভেজানো সাঁকো
ফিরিয়ে দিচ্ছে ফিরিয়ে দিচ্ছে আমায়
সাড়ে তিন হাত ঘাসের পৃথিবী…
তুসোর মিউজিয়াম ও মোমসংবাদ|
উজ্জ্বল রঙমুকুলের মতো রাণী ছিলো আমাদের
রাগী এক স্ত্রী মৌমাছি ছিলো আমাদের গর্ব
চাকভর্তি অলস পুরুষ শুঁড় নাড়তো পশমের
বিষমেশা ডানা ঘিরে ষড়যন্ত্র কষতো
বলতো হুল বিষয়ক সমস্তে নীলে সামিল হও
জান দিয়ে ভরাট করো ফাঁপা হাওয়া
বলতো ভাইসব!রুখে দাও!
শ্রমিকমাছির দল আমরা চিনতাম মধু ও মোমেরভাঁড়ার
রেণুমাখা প্রসূতিসদন থেকে সর্ষেফুলের রসে
উড়াল দিতাম ঝাঁক ঝাঁক বোয়িং বিমান
বীজ আর আয়ুর মাঝখানে ফোঁড় তুলতাম সময়ের
শূন্যর নৌকো ঘিরে ধবধবে মোম পাহাড়
আমরা গেঁথে তুলতাম লুপ্ত শহরে
আমরাই ছিলাম মানচিত্রের নাবিক ও ক্যাপটেন
শুধু ধারালো ডানায় ছিপছিপে মেয়ে উড়ে এলে
ঘুরে যেতো ব্রোঞ্জের জাহাজ
নতুন রাণীকে ঘিরে উড়তো বেহদ্দ তরুন মাছির দল
পুরনো চাকে তারা ফেলে যেতো গলা মোম
তুসোর মিউজিয়াম ও বিষন্ন প্রাচীন সাম্রাজ্ঞী…