বিশ্বদেব মুখোপাধ্যায়ের কবিতা
আবির্ভাব
শীতের দুপুর পেরিয়ে
বিকেলের দিকে গড়িয়ে যাচ্ছে কুয়াশার মার্বেল।
ঘুমের ভেতরে
একটু একটু করে নড়ে ওঠে পোকাটির হলুদ আলস্য।
মাঘ শেষ।
কীটযুগের প্রান্তে দাঁড়িয়ে মানুষ দেখছে
খোলস বদলের এই আশ্চর্য খেলা।
হাওয়ার উষ্ণতা বাড়ছে। এবার পক্ষী যুগ শুরু।
বর্ণাভ খোলস ছেড়ে পেলব লালায় বিজড়িত
তখনো শাবক তিনি। ছোট ছোট চঞ্চু দু’টি ক্রমে
খুলে যেতে দেখি গাঢ় রক্ত লাল মুখের ভিতরে
প্রবল জলের তোড়ে ঢুকে যাচ্ছে দীর্ঘ কীট যুগ।
স্মৃতি
এখানে অস্পষ্ট… শুধু মনে পড়ে ভাত-ঘুমের আগে
তাঁর সে অনন্ত হাই… ভিতরে বিশ্ব তিরোহিত।
হুল
দিন শেষ।
জঙ্গলের প্রায়ান্ধকার খোলস ছেড়ে
ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে যে অতিকায় মৌমাছি
রাত্রিকে
এক সময় তার পুঞ্জাক্ষি ব’লে চেনা গেল।
চাঁদ ছিল কিনা মনে নেই-
চিৎ হয়ে শুয়ে আছি দু’কোটি বছর আগেকার
কোনো এক নারকেল গাছের নিচে।
মাথার ভেতরে
চুঁয়ে চুঁয়ে ঢুকছে
সুতোর মতো
তার অদৃশ্য গুঞ্জন।
ওদিকে
রহস্যের জটিল কোটর থেকে গুটিগুটি উঠে আসছে
মধুসন্ধানী
এক গন্ডারে-পোকা।
খড়গের মতো
তার পিঠের ঠিক মাঝখানে তখনো আমূল বিদ্ধ হয়ে আছে
ছোট্ট একটা হুল।