বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতা
যমুনা
বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়
আমি তাকে যমুনা করিনি।
অথচ সে পথ হয়ে শুয়ে আছে,ভাঁড় ও নকল
পেট্রলের কটু গন্ধ শরীরে জড়িয়ে..
মন্দিরে যাবার পথে
লোকে তার টব থেকে ফুল নেয়, নমস্কার করে।
আমি আর অরুণাভ গতকাল আদ্দ্যাপীঠ গিয়ে
দেখে আসি টব ভর্তি ফুল
আর পথের সমাধি।
আমি তাকে যমুনা বলিনি।
সেও ছিল পিপাসার্তা নদী।
আদ্যাপীঠ ও পুরস্কার
ত্রিকোণমিতির অঙ্কে ভুল হলে সমাধান আছে/
সংশোধিত তালিকার সংখ্যাতত্ত্বে ভুল থেকে যায়।/
এটাই দস্তুর তাই ভুলের প্রাসাদে দিন/
বাতাসা ও ফুল, বেলপাতা।
আদ্যাপীঠ মন্দিরের দ্বাররক্ষী, বেহায়া কুকুর/
এই সব জানে,তাই ভাগ পায় ভোগের প্রসাদে।/
সাহিত্যের আদ্যাপীঠে অনুরূপ ভোগলুট চলে/
একটি মানুষ শুধু লাঠি হাতে একা একা হাঁটে/
মহানির্বাণের পথে তার হাতে থেকে গেছে নিরক্ষর চাবি/
যে তালাটি আদৌ খোলে না।
ভিলানেল
তুমি হে ছলনা, ছায়াপথচারী ভিলানেল
আগুন ছিলনা পুড়ল আঙুল দোটানায়
তবু ভাবলাম যিনি মেলাবার মিলাবেন।
ফিডার রোডের রোডম্যাপ ছেড়ে ফিলাডেল-
-ফিয়া থেকে আমি কিনেছি নতুন রোটাম্যাক
একটি কলম তোমাকে দিলাম ভিলানেল।
শরীর দেখেছি,সঠিক চিনিনা ভিলানেল
যখন ছুঁয়েছি,পড়েছি অকুল দোটানায়
‘কিছুই হয়নি’ এই বলে স্যর ফিরালেন।
রোখ চেপে গেল,চিনব তোমাকে,ভিলানেল
আগুনটিলায় কারা ঝাঁপ দিল?ঘটনার
বিবরণ পড়ি,দেখি ওমা একি, টিলা নেই।
বিশদ জানতে পাঁচিল টপকে শীলাদের
বাড়ি ঢুকি।ওরা গুজরাতি তবে মোটা নয়
এভাবে হবেনা, স্পনসর চাই–‘লী লা বে ন’!
সনেট লিখতে স্পনসর লাগে।ফিলাডেল-
-ফিয়া থেকে আমি কলম এনেছি রোটাম্যাক
না’ই লেখা হল উনিশ পঙক্তি ভিলানেল
স্যর যা বলুন, যিনি মেলাবার মিলাবেন।
সোনালী সেডনা
কে শেখাল আত্মহত্যা মানে এক আত্মরতি সমাধিসঙ্কট?
মৃত্যুনেশাখোর যারা শিখিয়েছে শুদ্ধতম জারজ সঙ্গম
জন্মদিন মানে এক মৃত্যুপণ, লেখা আছে সমাধি গুহায়
বৃক্ষের কোটরে বসে আদিকীট গেয়ে চলে নরকসঙ্গীত।
কে তুমি পুড়িয়ে দিতে চেয়েছিলে লজ্জাহীন সোনালীসেডনা?
অথচ অক্ষর থেকে ধার নাও,বস্তুতন্ত্র চেতনার বীজ
যে তুমি গিলেছ নিজে নিজেকেই এ খোলস সর্পদেহ জেনে
সচিত্র মুগ্ধতা আমি বিষ সহ লিখে রাখি শনির বাথানে।
কে বলেছে অর্কপ্রভ বৃষ্টিধারা থেকে শুধু লৌহপাত হয়
কে শেখাবে আরণ্যক কথামালা?মর্ষকামী ব্যাধের উল্লাস
কার ছবি,গহনায় গুপ্তকাম,অনুপেয় তীব্র হেমলক
সমস্ত শরীর জুড়ে নেশাগ্রস্ত ছুতারের ব্যর্থ নিকোটিন।
লেট নাইট মনার্কির ক্ষুধার্ত সম্রাট আজ রোমন্থনজীবী
তোমার প্রতিভা আজ অন্ধ;তবু লক্ষ করে আমার পৃথিবী।