বিকাশ
মণিশংকর বিশ্বাস

ধরা যাক গল্পে আমার নাম অম্লান। গল্পটা আমারই, কিন্তু এমনভাবে বলব, যেন আমিই, আমাকে বাইরে থেকে দেখছি। আমার ধারণা, এই অম্লান পয়েন্ট-অব-ভিউ হলে, গল্পটা বলতে সুবিধে হবে। হয়তো বিশ্বাসযোগ্যও হবে। কেননা, উৎপলকুমার বসু একবার আমাকে বলেছিলেন, “অম্লান যে এখন এরকম ভাবছে, তা তুমি কী করে বুঝলে?” উৎপলকুমার বসু যাতে এরকম বেয়াড়া প্রশ্ন না করতে পারেন, তার জন্যই বলে রাখলাম, আমিই অম্লান।

শুরু করা যাক তা’লে। দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশানে নেমে অম্লানদের বাড়ি, হাঁটাপথে মিনিট দশেক। রাত ১১টা নাগাদ স্টেশনে নেমে অম্লান দেখে, সব কেমন অচেনা লাগছে। কয়েক কোটি নিউরন ঘেঁটে অম্লান মনে করে, স্টেশানে নেমে ও-কে প্রতিদিন ওভারব্রিজ পার হতে হয় । অম্লান তাই ওভার ব্রিজ পার হয়। কিন্তু ওপারে, রেলব্রিজ থেকে নেমে এসে দ্যাখে, রিক্সাস্ট্যান্ডটা নেই। অথচ মনে মনে ধরেই নিয়েছিল, আজ রিক্সায় যাবে। অম্লান বুঝতে পারে নিশ্চিত কোথাও বিরাট কিছু একটা গোলমাল হয়েছে। দিব্যি মনে আছে, আজ খুব কম মাল খেয়েছে। তাছাড়া পা টলছে না, জিভ শুকনো হয়ে যাচ্ছে না, এমনকি অস্পষ্ট কোনো যৌনতাড়নাও নেই। তবু এই যে কিছু চিনতে পারছে না, কিছু তো একটা গোলমাল হচ্ছেই। ভেবেছিল রিক্সা নেবে, সেটাই যখন হল না, একটা ভয়ার্ত, কিন্তু মরিয়াভাব চলে এলো অম্লানের ভিতর— সোজা যেতে হবে—রেললাইন ধরে সোজা গেলে হেলথ ইন্সটিউটের ওপাশেও আর একটা রিক্সাস্ট্যান্ড আছে, ওখান থেকে না হয়…

যাই হোক, রেললাইন ধরে এদিকে এসে অম্লান দেখে, এদিকেও সব অচেনা। রিক্সা-স্ট্যান্ডটাও নেই। “শালা, মাদারচোদ…”, বলতে গিয়েও অম্লান চুপ করে যায়। কেন-না বোঝে না, কাকে বলছে। লক্ষ্য করে রাস্তার পাশে অদ্ভুত প্যাটার্নের সব বাড়ি। বেশিরভাগই ত্রিপল বা পলিথিনজাতীয় কিছু দিয়ে ছাওয়া। আর এর ভিতর দিয়েই রাস্তার কঙ্কাল। অম্লানের মাথায় তখন রোখ চেপে গেছে। রেললাইন ধরে হাঁটবার সময় দেখে নিয়েছে, মোবাইলের ব্যাটারি পুরো ডেড। তাছাড়া মোবাইল চালু থাকলেই বা কী? ফোন করে কাকে বলতো? কী বলতো? তাই মরিয়া হয়ে মনে করার চেষ্টা করে, রেললাইনকে ডাইনে রেখে একটা লম্ব আঁকলে ওদের বাড়ি বা তার আশেপাশে পৌঁছানো যায়। অম্লান হাঁটা শুরু করে।

সামনে কোনো ঝোপঝাড় বা পলিথিনের ‘ইগলু’ চলে এলে পাশ কাটিয়ে যায়। আকাশে চাঁদ নেই, ল্যাম্পপোস্টে আলো নেই, অথচ অদ্ভুত একটা আলো, যেন কোথাও অদৃশ্য একটা সিঙ্গলডোর ফ্রিজ, সামান্য খোলা। সেই আলোয়, আলোর উৎস-সম্পর্কে কৌতূহলহীন অম্লান, হাঁটতে থাকে। এভাবে মিনিট দশেক হাঁটবার পর শাখানদী থেকে মুল নদীর মতো, অপেক্ষাকৃত বড় একটা রাস্তায় এসে পড়ে। এতক্ষণ পর খেয়াল হয়, শাখা-রাস্তায় এ পর্যন্ত একটাও মানুষ দেখেনি অম্লান । বড় রাস্তায় এসে, ওর সিক্সথ সেন্স বলে, বাড়ি আর বেশি দূরে নয়। সঙ্গে সঙ্গে অবশ্য ওর বাকি পাঁচটা ইন্দ্রিয় এবং মোস্ট লাইকলি সেভেন্থ বা এইটথ সেন্স বলে, কারো সাহায্য ছাড়া আজ আর অম্লান বাড়ি পৌঁছতে পারবে না। লাকিলি, দু একটা অদ্ভুত-দর্শন যান চলতে দেখে এই বড় রাস্তায়। তাদেরই একটাকে অম্লান হাত নেড়ে থামায়। উপরে অদ্ভুত একটা কমলা রঙের বাতি ঘুরতে ঘুরতে জ্বলছে নিভছে। ভিতরে কেউ আছে কি-না বোঝা যায় না। তবে ড্রাইভারের সিটের পাশে, প্যাসেঞ্জার সিটে কেউ নেই। সেই ফাঁকা দিয়েই, যেভাবে রিক্সাওয়ালার সঙ্গে কথা বলে, অনেকটা ওই একই সুরে চালকের সিটে যে বসে আছে তার দিকে, কিছুটা রোয়াব মিশিয়ে শুকনো গলা ভারী করে অম্লান বলে
—এই, যাবে?”
—হ্যাঁ, কোথায় যাবেন?
—চাঁদসিভবন।
—এইটুকু যাবেন, তার জন্য বিকাশ নেবেন?
অম্লান বোঝে এই যানগুলিকে ‘বিকাশ’ বলে। কিন্তু ওর অজ্ঞতা ও বুঝতে দেয় না ড্রাইভারকে। তারপরেই ভেঙে পড়ে। প্রায় যুক্তিহীনভাবে বলে,
—দেখতেই তো পাচ্ছ অনেকক্ষণ ধরে হাঁটছি, আর পারছি না, শিরায় টান ধরেছে।
—যেতে পারি, কিন্তু খুচরো দিতে হবে।
অম্লান খুচরো আছে কিনা চেক না করেই, কিছুটা মরিয়া হয়ে বলে,
—হ্যাঁ হ্যাঁ চলো চলো।
বিকাশের ভিতরটা কিন্ত দিব্য, অন্তত তখন ফাঁকা বিকাশে চেপে তাই মনে হয় অম্লানের। গাড়ি স্টার্ট দিতে না দিতেই চাঁদসিভবনের মোড় চলে এলো। ড্রাইভারের কথা মতো মোড়ে নেমেই পকেটে থেকে অম্লান খুচরো বের করে। ড্রাইভার তৎক্ষণাৎ যার-পর-নাই ভঙ্গিতে রে রে করে ওঠে।
—শোনেননি পরশু রাত দশটায় প্রধানমন্ত্রী কী বলল?
অম্লান আক্ষরিক অর্থে হতচকিত হয়ে তাকাতেই, ড্রাইভার বলে,
—এইজন্য ওঠার আগেই বলেছিলাম খুচরোর কথা।
—খুচরোই তো দিচ্ছি। অম্লান মিনমিনে গলায় বলে।
—ধুর্বাল (অস্পষ্ট), কোত্থেকে যে এলো মালটা! ( অস্পষ্ট স্বগতোক্তি)…এগুলো এখন থেকে আর খুচরো নয়। এক টাকার কয়েন মানে এখন থেকে ১০০ টাকা, পাঁচ টাকার কয়েন ৫০০ টাকা আর ২০০০ টাকার নোট মানে ২০ টাকা…। এই দেখুন চার্ট দেখাচ্ছি, বলে একটা কাগজ বের করে ড্রাইভার, গোলাপি রঙের, ল্যামিনেশান করা, প্রায় রেট চার্টের মতো।

অম্লান ফ্যাল ফ্যাল করে ড্রাইভারের দিকে তাকিয়ে থাকে। সবটা যে বোঝে এমন নয়। তবে এটুকু বোঝে যে ওর সর্বনাশ হয়েছে। বাড়িতে খুচরো কয়েনের যে পিগিব্যাঙ্কটা ছিল, ওটা থেকে তো গত সপ্তাহেই সব কয়েন বের করে পাড়ার মুদির দোকানে দিয়েছে!

চাঁদসিভবনের মোড় থেকে বাড়ির গেট ১০০ মিটার (কখনো মেপে দেখেনি) রাস্তা, অম্লানের আবার খুব অচেনা মনে হতে থাকে! বুঝতে পারে না, সত্যিই আজ ও বাড়ি পৌঁছবে তো!

CATEGORIES
TAGS
Share This
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes
Just a moment...

Checking your browser

This process is automatic. Your browser will redirect to your requested content shortly.

Please allow up to 5 seconds…

DDoS protection by Cloudflare
Ray ID: a8844955f9d8ad29