তন্ময় ভট্টাচার্য-র কবিতাগুচ্ছ
নির্মাণ
তোমাকে মিথ্যার শর্তে গড়েপিটে তুলেছি, কবিতা
এবার প্রকাশ্যে এসো, পড়ো গিয়ে ফুলেল নজরে
বলো যে ইঙ্গিতরাত্রি বহুকাল হল স্পষ্ট ফুটেছে জীবনে
‘যে-কোনো ঢোঁকের মাত্রা পরবর্তী সাফল্যকে সুনিশ্চিত করে’—
এমন বাহবাসিদ্ধ বাণী কিছু, ছদ্মবেশ, উপযুক্ত খুনের মহিমা
তোমাকে দুর্বল পেয়ে সম্পাদনা করেছে সে, বলো
এবং, তারপর
অলৌকিক, নেমে এলে, মৃদুমন্দ দেবতা আমার
এখনও জ্যোৎস্নার পায়ে ফুল দিই। গড় করে
প্রার্থনা কুমারী রাখি, ব্রত-অন্তে ঢেউ পাই, জল
তোমাকে নির্দেশ মেনে
কত জন্ম এপার-ওপার
শুধুই প্রণামে ছিলে? ক্রোধ নয়?
জাগাতে না পুষ্করিণী, মঙ্গলাচরণ?
কী অনাথ ভেসে গেলে, অবিশ্রান্ত দেবতা, আমার!
অশুদ্ধ
‘আলোত্ব’ শব্দের কোনো বন্ধু নেই ব্যাকরণ বইয়ে
পবিত্র সরকার কিংবা সুনীতিকুমার পাশে দাঁড়াননি
ঘুষ-টুষ দিয়ে
সে এই লেখায় জাল পরিচয়পত্র পেয়ে খুশি
আমিও, ভাষার মধ্যে আধো-অন্ধকার ছেড়ে দেখি
দুজনে লড়াই করছে, অন্ধকার হেরে যাচ্ছে দ্রুত
আলোত্ব— নতুন ঘর বেঁধেছে রেলের ধার ঘেঁষে
তবু দরজা, টালিছাদ— প্রুফরিডারের ভয়ে কাঁপে
প্রজন্ম
আমাদের ছবিগুলো ছিল রঙিন ও ঝাপসা
দেওয়ালে রং, জানলায় পর্দা, হামা দেওয়া একটা শিশু
চিনিয়ে দিলে চিনতে পারি, নইলে বিশ্বাস করা শক্ত
স্বপ্নের ভিতর থেকে— সংসারের ভিতর থেকে—
এই শতক যাকে স্পষ্ট করতে পারে না, অস্পষ্টও না
আমরা, ঝাপসা ও স্বচ্ছের মধ্যবর্তী, গেরস্থরঙিন
নতুন ক্যামেরা পেয়ে সদ্ব্যবহৃত হয়েছিলাম
অতঃপর, সার্বভৌম কহিলেন
তোমাকে খুঁটিয়ে পড়ে আমার বিস্ময়বোধও চিহ্ন হাতড়ে ফিরে গেছে
ঘরময় ফুটে উঠছে তোমারই নিঃশ্বাস, মন্ত্র, রেখে যাওয়া কীর্তনসুবাস
যুগধর্ম ভুলে যাচ্ছি, হৃদয় কুপিত, কণ্ঠে কী ষড় চলেছে দিবানিশি—
কিছুই জানি না, শুধু পুরুষোত্তম দেখি সচল হয়েছ ভাষাপীঠে
আমার চৈতন্য নাও, খুদ নাও, গৌড়পাখি, দেবশর্মা-সংস্থিতা!
সবকটা কবিতাই অসামান্য ।❤️
চমৎকার