ঋভু চট্টোপাধ্যায়-এর কবিতাগুচ্ছ
ছায়াদের অন্ধকার
১
ঠিক যেটা ভাবা ছিল
অসম্ভব এক খুনে রক্ত প্রতি মুহূর্তে পাল্টে দিতে চায়(ই)ছে
শরীরের কনফুসিয়াস, অবশ্য সেই নীতি শিক্ষা নেই,
তাও দু’কানে ‘খোং’ গুরু নাম শুনলেই খিস্তি মনে হয়,
গর্তের মালকোশে নতুন রাগ গালাগালির দেবীকে
স্বপ্নে টেনে আনে। শরীরটা চ্যাংদোলা করে ছেড়ে
দেবার মত কেউ থাকলে সুপারি দেওয়া যেত।
তারপর দিব্যি আত্মার পায়ে পা তুলে গণপরিবহনের
ভরতুকিতে একটা মহাকাশ বানাতাম।
না, কোন ছাদ নয়, মাছ ধরতাম তীরের ধুলোবালি মেখে
২
কৈশোরের ঘড়ি
ঘরের ঠিক বাইরেই প্রতিদিন নৌকা আসে।
কে পাঠায়? অর্ধেক উপোসের পর জেনেছি
‘নহুষ’, ‘নহ বা ন’ এবং ‘নো- আহ’ তিনটি
একজনেরই নাম। বাকি অর্ধেকের পর জানা যাবে
শরীর ও যৌন উপোস এক কিনা।
এখন অন্ধকার ছায়ার সাথে বিছানায় সঙ্গমের
উপায় থাকলেও স্বমেহনেই সংসার। অথচ মুখ বন্ধ
করেই এই শতাব্দী গ্রাম ছেড়ে শহরের রাস্তায়।
এবার চা কফি সন্ধের মোমো মুখে খুঁজতে হবে
সুলভ শৌচালয়। তখনই সেই নীলচে কালো
আকাশ ও অন্ধকার দু’হাতে জাপটে ধরে বলে উঠবে
‘আয় বৃষ্টি ঝেপে ঝেপে আয়।’
৩
চলাচল
যখনই পাশ ফিরছি কেউ ‘হুপ’ অথবা ‘ভুক’ বলে
জানান দিচ্ছে উপস্থিতি। হাসব না কাঁদবো
এই ঢেঁকি না বাঘের পিঠ বুঝতে মাঝ মাঠ।
একটা মুখোশ বানিয়ে এবার ভিক্ষার শ্রেণিতে
তাহলে আর কোন শ্রেণি সংগ্রাম থাকবে না।
একটা আস্ত শরীর শুধু দাঁড়াবার অভাবে
শেষ হবার আগে একটা ছাপ, তাতেই
সাত সমুদ্র আঠারো নদী। মুখোশ রাস্তায় বসবে,
রাস্তা মুখোশে, জমে ক্ষীর ভোট যন্ত্রের দেশ।
৪
ঘুড়ি মানে যেটা
গোত্তা খেতে খেতে দেশের শেষ সীমানাও
এবার উল্টোপথ। ঢুকে যাবো বিপরীত অনুপ্রবেশে।
ঘাড়ের ঘাম মুছে দেবার নামাবলি ও ছেঁড়া চটিটা
চুরির ভয়ে শামিয়ানা ও নৌকার বন্ধুত্ব পাতায়।
যার সাথে দেখা করা বাকি তাদের সব ধার
মিটিয়ে দেবে আলো আর বৃষ্টির গণমাধ্যম।
পেটে ক্ষিধে বুঝবে না কিভাবে রচনা লেখে।
অথচ প্রতিদিন তাক থেকে বই পেরে অক্ষরের
ঘরবাড়ি খুঁজি, এবার শুধু পা দুটো হাতে রাখা রাস্তায়।
আস্ত জ্যোৎস্না অথচ বাচ্য পরিবর্তনটাতেই শূন্য পেয়েছি।
৫
মাঝ রাতের সাথে
অনেকটা চেষ্টার পর বাঁক বদল, ভাষার পেট
থেকে জন্ম নিল চারাগাছ। বড় হয়ে ফুল ফল।
কাকে দেব এই নৈবেদ্য? প্রতিদিন পেটরোগ
মাঝরাতে ঘুম ভেঙে যায়। পাশে শুয়ে থাকা
ছায়া কমোডের স্বরলিপি দেখি। মুহুর্তের স্রোত
পাল্টে দেয় ঘুমের ঘরবাড়ি। এখন এক্কেবারে একা।
রোদ রঙের অপেক্ষায় খোলা জানলার এপাশে ওপাশে
পাখি ও বৈধব্যের হাওয়া। কানে কানে কিছু বলবার
আগেই শুনলাম, গত সকাল একটা মন্দারমনি
কবিতা লিখেছে, আগামীকাল পাবে জ্যান্ত অলিভ পাতা।
৬
সূচিপত্র
এবার শুধু সূচিপত্র দেখাটাই বাকি,
মধ্যবর্তী তাকিয়ার বাঁমদিক মানে
যদি বামপন্থা হয় আমি তবে নৌকার ছয়ে
শুয়ে শুয়ে মানিকবাবুর স্বপ্ন দেখি।
ডান হাতে চিরাচরিত কংগ্রেসি হাওয়ায়
কেঁপে যায় গণ্ডূষের গঙ্গা,
শুধু হৃৎপিণ্ড ছুঁতে গেলেই মহাকাল ডাকে।