কৃষ্ণালক্ষ্মী সেন-এর কবিতাগুচ্ছ

কৃষ্ণালক্ষ্মী সেন-এর কবিতাগুচ্ছ

কথার কথা

এই তো সেদিনের কথা
তবু সব কথা সত্যি নয়, কথার কথা

আমরা দুজনে আলোতে ছায়াতে দেখেছি
সমুদ্রের জলে পড়ে আছে নরম বিষণ্ণ বিকেল

হালফিল গোধূলি শুধু অচেনা লাগে
এক জন্মে হয়তো যেন অনেক জন্ম হল

তোমাকে জড়িয়ে প্রতিটি চিঠিতে ছিল ঢেউ
‘কেউ একজন পাশে আছে এই বোধ কী মধুর’—
এমন বলেছে সকলে, বোঝেনি সবাই

তুমি প্রেম, অপ্রেমে বেশ ভালো আছো ঘরে ও বাইরে

সবাই বাঁচে, বেঁচে থাকে, বাঁচারই তো কথা

‘তোমাকে ছাড়া বাঁচব না’—একটা ক্লিশে বাক্য কেবল
বারবার মিথ্যে হয়ে যায়।

নিজস্ব অন্ধকার, নিজস্ব আলো

কাল সন্ধ্যেয় সকলে কবিতা পড়েছে

আমি দেখেছি দরজার বাইরে এসে চুপিসারে দাঁড়িয়েছেন বোদল্যার

প্রত্যেকে প্যারিস স্প্লিন থেকে তন্ন তন্ন করে প্রেরণা খুঁজতে ব্যস্ত

ফরাসি ক্লাসে পিন পতনের স্তব্ধতা

আমি একটি বর্ণও লিখিনি, মানে লিখতে পারিনি

কেবল ঠাণ্ডা স্রোত আমাকে অনবরত ছিঁড়েছে,
আমি নিজের ফ্যাকাশে মুখ দেখেছি মর্গের টেবিলে শোয়ানো।

এই প্রথম জানলাম কবির চোখ দারুণ শীতল

ওদের কবিতার ভিতর যন্ত্রণা ছিল
দাঁতের যন্ত্রণার মতোই প্রবল ও গভীর

অনেক কিছু খেতে চেয়েও ওরা প্রায় কিছুই খেতে পারেনি।

আমার অক্ষম কলম আমি ছুঁড়ে ফেলেছি

উঠতি কবিরা যখন ইনিয়ে বিনিয়ে কবিতা পড়ছিল

আমি প্রবল ক্ষুধার্ত ছিলাম

আমার নির্বাসন হোক সুদূর দ্বীপে

জরুরি দু’একটা কথা

ফিরে এলে একটা অন্যরকম শুরু
আবার শুরু করা যায় নাকি!

খোলা কপাটের পাশে
অবিন্যস্ত আকাশ করমচার মতো লাল
সূর্য ডুবে গেছে

সমস্ত হিসেব ঠিক কাগজে মেলে না ঠিক ঠিক

নীল কারুকাজে হাওয়ায় অন্ধকারে
হাওয়া এসে মেশে

তুমি কি আর ফিরবে না কোনওদিন
হেমন্ত রোদে শীত রোদে পদচ্ছাপ ফেলে?

শুধু ফেলে রেখে যাবে লক্ষ লক্ষ জমানো পথ,
অজস্র ঘাস, পুরোনো মেসেজ
এবং নিরিবিলি রাতের নিকটবর্তী চাঁদ?

স্মৃতিদের উঠোনে বহু
ধুলোময় হলুদ জামপাতা ঝরেছে
স্মৃতি মিত্র আমার পড়শি সেই কবে থেকে
মনে হয় উনিশ’শ অষ্ট আশি

তুমি আর ফিরো না কোনওদিন
আষ্টেপৃষ্টে থেকে যাও বিউটি বিশ্বাসের কাছে
যে তোমাকে ঝর্না দেখাবে বলে
বিস্তৃত জলপথে অনেক জল মেপেছিল

তুমি ওর সঙ্গে
চা খাও, গান শোনো, সোফায় বসে গল্প করো

আর ফিরো না কোনওদিন
বিকেলের খোঁজে

আমি জানি ছেড়ে গেলে
কী বেদনা হৃদয়ের আভোগে বাজে

ধ্বংসাবশেষ

একটা প্রিয় মুখ শুধু পড়ে আছে
আমার মুখের পাশে
ভাঙা আয়নার মতো

যে অবসর উৎসব হতে পারে

শোওয়ার ঘরটা এখন দুঃস্বপ্নের মতো।

সাইক্লোন আসবে শুনে জেলেরা কেউ সমুদ্রে যায়নি
আজও ওদের বাড়িতে মাছের ঝোল রান্না হয়েছে

শহর কখনও ঘুমোয় না

দার্জিলিংয়ের ম্যালে তুমি মানুষ দেখতে ভালোবাসো
অথবা পর্বতচূড়ার শূন্যতা

অনলাইন ক্লাস, ল্যাপটপের স্ক্রিন আমার আর ভালো লাগছে না। ইচ্ছে করছে তোমার কাছে গিয়ে কিছুক্ষণ বসি।

প্রেমের কবিতা

হয়তো আরও অন্য কিছু হতো

কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছে গেলে পুনর্জন্ম হয়

একমাত্র শিল্পী পারে রাতের রং দিয়ে আদর আঁকতে

চণ্ডীদাস বিদ্যাপতি ছাড়াও
অন্ধকার জানে মানব মানবীর অনন্ত পদাবলী

সিগারেট ছাড়ার প্রস্তাব যে দিয়েছে
চুমু দেওয়া তারই একান্ত কর্তব্য

পাহাড়ে আকাশ নারীর মতোই সুগন্ধী

জানো, পল গগ্যাঁ কার জন্যে প্যারিস ছেড়েছিলেন?

তিস্তা একবার ভিজিয়ে দিলে আমাদের আর শহরে ফেরা হবে না

প্রেমের কবিতা, অতএব, এই ক্যাকোফোনির দেশে।

.
ঝড়ের কবিতা

কখনও ঝড় এলে ছাদে গিয়ে দেখেছিস আকাশ বাতাসের কাটাকুটি খেলা?

এক এক দিন আমরা কী আপ্রাণ চাই
অনুভূতির ডালপালাগুলো দারুণ ভোঁতা হয়ে যাক

মানুষ কথা দিয়ে না রাখলে সেই খেলার নাম কী হয়
আমি সহজপাঠে পড়িনি

মধ্যরাতের কবরখানার স্তব্ধতা আজ নেমে এসেছে খাতার উপর।
কোন বর্ণের পর বর্ণ সাজালে শব্দ ছন্দোময় হবে?

আমার ভিতরের আমি হারিয়ে গিয়েছে

মেসেজ–এ তোর অদ্ভুত আবদার— ‘ঝড়ের কবিতা পড়তে চাই।’

CATEGORIES
Share This

COMMENTS

Wordpress (0)
demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes