
তন্ময় ভট্টাচার্য-র কবিতা
প্রতিবাদ
…মুখ-অব্দি উঠে এসে, দাঁতের ফোঁকরে
কিছুক্ষণ ঝুলে থাকে, মাড়ি-ভর্তি সমাবেশ, গালের ভেতর
ঘা হয়ে অস্বস্তি তোলে, ঠোঁট কামড়ে জ্বালাভাব, আরও যা হলুদ
ছোপ ও তামাকরঙা, বারবার জিভ যায়, খোঁচা খেয়ে তুরন্ত মলম
অর্থাৎ লালার পট্টি, ফেনাদাগ—এত পুরু, এক্ষুনি থুতু ও ভরা-ক্রোধ
ছিটকে বেরোবে কিন্তু, ঢোঁক গেলো, সরকারি হও
পলিটিক্স
তোমার পদাঙ্ক অনুসরণ করার দিন শেষ
এখন মাস্তানি মেরে নিজেকেই বুঝে নিতে হবে
দুটো-চারটে লাশ আমি ফেলে দেব নিজেরই ভেতর
নিজেকেই ঘিরে ধরব, জনতাপ্রহারে মুখে রক্ত তুলে চেঁচাব—বাঁচাও
ভিড়ের মধ্যে থেকে উড়ে-আসা সপাট, তোমার
পদাঙ্ক বিরাজে যদি তলপেটে, বুকে ও মাথায়
ফুর্তিসে জড়িয়ে ধরব, বলব, পথে এসো গুরু
দেশশুদ্ধু এভাবে শাসাও
‘সংবাদ মূলত কাব্য’
সবাই বলে, এ-রাজ্যের কিস্যু হবে না
মাঝেমধ্যে আমিও যে বলি না, তা নয়
এই না-হতে হতেই একেকদিন
দুর্নীতির খবর সামনে চলে আসে
তাহলে তো ভেতরে-ভেতরে হচ্ছিলই
আমরা জানতাম না মানেই কি সব ঠিক
এ-ও জানি, টিকে থাকা ভূমিকম্পপ্রবণ
যে-কোনো দিন ভেঙে পড়বে হিন্দু-মুসলমানে
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এ-রাজ্যের আগামী উজ্জ্বল—
বর্তমান নয় কেন, সে-প্রশ্নের সুরাহা হল না
আন্দোলন
চিতিয়ে দাঁড়াও। গুলি ছুটে এসে, থমকে, বেঁকে যাক
দক্ষিণী ছবির দৃশ্য
চারপাশে সিটি ও হুল্লোড়
তোমাকে উস্কানি দিচ্ছে, মুঠোবন্দি পরের গুলিটি
পাল্টা ছুঁড়ে মারো, শত্রু নাজেহাল
নায়কের জয় সুনিশ্চিত
দর্শক উত্তাল, দৃশ্য বাণিজ্যসফল
প্রেক্ষাগৃহে ভিড় বাড়ছে রোজ
বিক্ষোভমিছিলে, ধূর্ত, গুলি ছুঁড়ল পেটোয়া পুলিশ
দেশাত্মবোধক
আমার দেশের মাটি, মাথাটি তোমার পায়ে ঠেকানোর আশা
এখনও ছাড়িনি, কিন্তু আমারই দেশের নেতা মাথা গুঁজে বেঁচে থাকতে বলে
যদি প্রশ্ন করে বসি, এই ভয়ে ঘাড় ধরে কুঁজো হতে শেখাচ্ছে, আমাকে
বলো হে দেশের মাটি, ঝুঁকে থাকলে বেশিক্ষণ তোমার সান্নিধ্য পাওয়া যাবে—
এ কি সার্থকতা নয়, নেতাটি তোমার নামে মড়াকান্না কেঁদে-কেঁদে ভোট
জুটিয়ে নিয়েছে ঠিকই, আমাদেরও মুখ রগড়ে দিয়েছে তোমার ধুলোবালি
ও মাটিতে, আয়নায় নিজের চেহারা দেখে বলে উঠছি জিন্দাবাদ, তুমি
পা-জোড়া কোথায় নিয়ে লুকিয়েছ, নাগালে এল না