সুরঞ্জন রায়-এর কবিতাগুচ্ছ
মুক্তি সূর্যের দেশ
রোববার
কত ধুলো ওড়ে স্বপ্নের মেঘলা পথ ,একলা রোববার
একে একে ঢাকে সব মুখ,যৌবনের প্রান্ত সজ্জায় ।
লঘু-গুরু
লঘু-গুরু বোধী সত্তায় ভিন্ন রাগ সূর্য বদলায়
মানুষে-মানুষে এই ভয় উল্টো শোক গাঁথবে শংকায় !
কাটামুণ্ড
কেটে নিয়ে গেল সস্তায় মুণ্ডু তোর ,ছিন্ন রাস্তায়…
ভ’রে দিয়ে গেল এক-দেশ লজ্জা ভয়-দৃষ্টি মজ্জায়…
দেশ
বেরিয়ে পড়েছে লাল দিন,ছিটকে যায় কষ্ট ঘরময়
আগুনে খেয়েছে সব লোভ — বস্তু ,দেশ মুক্তি সূর্যের…
(২)
পাথর-খামার
পাথরের ধুলো উড়ছে শীতের সকাল জুড়ে দূর রুক্ষ মাঠে
পাহাড়ের বিকৃত কঙ্কাল প’ড়ে আছে
রেল লাইনের পাশে পাশে…
কোথায় হারিয়ে গেছে সবুজ যৌবন মায়াপুরী
পাহাড়ের সমত্থ শরীর কেটে কেটে
পাচার হয়েছে কত কালো কালো সুখের প্রহর !
পাথরের ধুলোর ঐশ্বর্য উড়ছে আজ
তিন পাহাড়ের কোলে
মানুষের পাথুরে সকাল মুখ গুঁজে প’ড়ে আছে —
অনন্ত লোভের সূর্য ঢেকে গেছে পাথর-খামারে…
*
(৩)
মুছে যাওয়া ডিসেম্বর
হাতের মুঠোয় ভ’রে রাখতে চায়ছো পুরো কায়ানাৎ
আঙুলের ইশারায় নামাতে চেয়েছো
আকাঙ্ক্ষার বজ্র-গর্ভ মেঘ।
ডিসেম্বর ফুরিয়ে গিয়েছে বন্ধু আবার নতুন ক্যালেন্ডার
আবার নতুন রাস্তা খুলে যাচ্ছে আয়ু কেটে কেটে
সেজে উঠছে ফেসবুকের রঙিন দেয়াল…
শুধুই শুভেচ্ছা-সূর্য হেঁটে যাচ্ছে অকারণ বোবাদের পাড়া—
ধ্বনিহীন হ’য়ে পড়ছে আমাদের বুকের সোহাগ
দুঃখের বিকেলগুলো গিলে খাচ্ছে নির্মোহ আবেগ মাখা সেল্ফি !
হাতের তালুতে রাখছো ডুবে যাওয়া সম্পর্কের আঁচ
শব্দশূন্য বাঁজা প’ড়ে আছো দীর্ঘ দীর্ঘ হাহুতাশ —
সহিষ্ণু-রক্তের মধ্যে গুলে যাচ্ছে
মুছে যাওয়া পরিত্যক্ত শীর্ণ ডিসেম্বর !!
(৪)
প্রতীক-জীবন
মৃত্যু-বিষ ব’য়ে ব’য়ে
বেড়িয়েছি সকাল-বিকেল
চোখের আড়ালে বুনে গেছি
বিন্দু বিন্দু অসহ্য যাপন…
তোমার দু’চোখ মনে রেখে
এগিয়েছি অন্ধকার পথে ,অসহায় —
কী আশা জীবন থেকে আর ?
তোমার রহস্য ছুঁয়ে ছুঁয়ে
তোমার অবজ্ঞা ভালোবেসে
প্রতীক-জীবন কেটে যাবে — ।
..