রাম আসলে একটি সরলতম অঙ্ক
সোমা দত্ত
আটের দশকে সন্ধেবেলায় লোডশেডিং-এর সময়, ছেলেমেয়েরা ভুতে ভয় পেলে বলা হত, রাম নাম নিতে। ভুত এবং রামের এই সেতুবন্ধ কেন তৈরি হয়েছিল? ভুতকে যদি রাবণ ধরে নিই তাহলেও তো সেক্ষেত্রে সীতার মতো হরণ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তারপরেও আরো দীর্ঘ পটভূমিকায় যুদ্ধ এবং জয়ের প্রসঙ্গ। তবু যাবতীয় ভৌতিক অপসারণে রামের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। এ ধরনের অনুপ্রবেশ নিয়ে কোনো অসুবিধা হওয়ার কথাও নয়। রাম আমাদের জীবনের প্রাথমিক ন্যারেটিভগুলোতে হিরো ফিগার হয়ে দিব্যি বেঁচে ছিলেন যুক্তি তর্কের বাইরে। এই বেঁচে থাকার নাম বিশ্বাস যার উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে মাইথোলজি এবং লোককথার শাখা প্রশাখা এবং অবশ্যই এটি একটি পৃথকধারার সাহিত্যচর্চা।
রাম আসলে একটি সরলতম অঙ্ক। পাটিগণিত বইয়ের কথা মনে করুন। ক্লাস নাইন টেন পর্যন্ত বাঁদরের লাঠি চড়া থেকে সহজ অংশীদারী হিসেবের সহজপাচ্য চরিত্রায়নে রাম ও শ্যামের একচ্ছত্র বিস্তার। অবশ্য লঘু অংশে রহিম নামটিও পাওয়া যায়। যেমন রামের কাছে বারোটি বেলুন ছিল। রহিম আটটি নিয়ে নিলে রামের কাছে ক’টি বেলুন পড়ে রইল ইত্যাদি। এবার আমরা বলব উদাহরণ হিসেবে এইরকম নামগুলির অন্তর্ভুক্তিকে সাধারণীকরণ বলা হয়।ইংরেজিতে যেমন বলে থাকি এনি টম ডিক অ্যান্ড হ্যারি। এভাবেই জীবনের যেকোনো সাধারণ চর্চার সঙ্গে রাম জড়িয়েছেন অনেকটা প্রতিবর্ত ক্রিয়ার মতো।
ভালো ছেলেটির নাম রাম। রাম একটা কমন স্ট্যান্ডার্ড। যে নাম শোনার পর আমরা কিছুই ভাবব না এরকম একটা ব্যাপার। হ্রস্ব ই কার বা দীর্ঘ ঈ-কার বা কোনো যুক্ত ব্যঞ্জনের জটিলতা নেই। একই কথা একটু পেঁচিয়ে যদি বলি তাহলে বলা যায়, যেখানে নাম খুবই গৌণ একটি বিষয় এবং তার কোনোরকমের পজিটিভ বা নেগেটিভ ইমপ্যাক্টই আমরা চাইছি না সেইসব ক্ষেত্রে রামের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে থাকি। পাটিগণিত অঙ্কের প্রশ্নে রাম না রেখে রবীন্দ্রনাথ রাখলে অঙ্কের তুলনায় নামকরণ ভারী হয়ে যাবে। স্পেসও একটা ব্যাপার। দুই অক্ষরের রাম সবদিক থেকেই ব্যবহারপোযুক্ত। তাই রাম। এবার অন্য কোনো দুই অক্ষরের নামের প্রয়োগ হয়নি তাও নয়। হরি যদু মধুও সমভাবে ব্যবহৃত হয় কিন্তু প্রাথমিকভাবে সবসময় রাম। রবীন্দ্রনাথ সহজ পাঠের প্রথম ভাগের দ্বিতীয় পাঠে রেখেছেন, “রাম বনে ফুল পাড়ে। গায়ে তার লাল শাল।” সরলতম নাম হিসেবে রামের অনুপ্রবেশ এখানে ভীষণভাবে প্রযোজ্য। এর থেকে এও প্রতীত হয় যে যা সরল, যা সহজ অন্য অর্থে যা কোনো গূঢ় অর্থ বহন করে না বা গৌণ ভাবে উপযোগীতা বহন করে, সেই ক্ষেত্রেই রাম নামের আর্ষ প্রভাব। সুতরাং রামের সেন্টিমেন্ট হল সেই সরলতম উপায় যা দিয়ে সহজেই হৃদয়ের তলদেশ পর্যন্ত পৌঁছনো যায়, মস্তিষ্কের ন্যূনতম স্মৃতিতন্তুর ব্যয়ভারে। এভাবে রামের সহজ সম্প্রসারণশীলতায় সাধারণ একটি আলোকপাত করা যেতে পারে।
এই সারল্যের সূত্রের অন্যভাগে রয়েছে রামের জীবনচরিত, যা জানার জন্য, মনে রাখার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠকে কিছু পড়তে হয় না। গল্পে গল্পে সরলীকরণে রাম আপামর ভারতবাসীর পুঁথিহীন প্রথমপাঠ হয়ে বেঁচে আছে বহুদিন থেকেই। আর কিছুটা কৃতিত্ব রামানন্দ সাগরের যিনি সিরিয়ালের মাধ্যমে অরুণ গোভিলকে আজীবন রাম হয়ে বেঁচে থাকার অশান্তি উপহার দিয়েছেন। সুতরাং রামের প্রভাব দেশবাসীর এমন রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে আছে যে রাম থেকে নাথুরাম পর্যন্ত যাত্রাটা যে একদিন সুঁচ হয়ে বুক ফুটো করে মাথা ফুঁড়ে বেরোবে সেটা খুব অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সেই স্বাভাবিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে আজ এত ধোঁয়া চারদিকে। এত কথা, এত বিতর্ক, এত প্রসঙ্গ। অথচ এর আগে রাম যে আসলে যে কোনো টম ডিক অথবা হ্যারি তা কিন্তু সকলেই ভুলে গেছিলেন।
ঠিক সেই সহজ ভুলে যাওয়া দ্রব্যটিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করলেন, কোনো একজন প্রবল ধর্মাচারণের কান্ডারী যিনি দেখলেন ভারতের মতো সংস্কারাচ্ছন্ন দেশের সেন্টিমেন্টে রামের মতো আদর্শ চরিত্র অন্য কিছু নেই। এই সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে তিনি একজন সর্বজনস্বীকৃত মাইথো ফিগারের স্ট্যাম্পকে আশ্রয় করে ভক্তের ভগবান হয়ে উঠতে চাইলেন। রামের সাধারণীকরণকেই তিনি বরণ করলেন, প্রাণ প্রতিষ্ঠা করলেন এবং পক্ষান্তরে জলজ্যান্ত দেবতা হয়ে উঠতে চাইলেন।
উৎসটা অনেক আগেই প্রথিত হয়েছিল আদবানির মাধ্যমে। নাহলে সহজ স্বাভাবিক রাম দিব্যি ছিলেন। কোথাও কোনো অসুবিধা হয়েছিল কী তার? আদবানিজি জীবনধারণের ঐশী শর্তগুলোর দাবি থেকে জনগণের চোখ সরাতে রথযাত্রা করে সেক্যুলারিটিকে কাঠি করার বিষয়টিকে অক্যুলার(Ocular)করলেন। নাহলে আমরা অরুণ গোভিলের স্মৃতি নিয়ে বেশ ছিলাম।
হিন্দিতে একটা কথা আছে, মানো তো ভগবান না মানো তো পাত্থর। বর্তমানে সেই আদলেই মানো তো রাম না মানো তো মোদী ধরনের একটা তাপপ্রবাহের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। যারা পাথর অথবা ভগবান কোনোটাকেই পছন্দ করছেন না তারাও আসলে একটি বিকল্প তৃতীয় শক্তি খুঁজে চলেছেন। এমন একটি পেল্লায় অস্ত্র যা রামের জনপ্রিয়তা খন্ডন করে দেবে। কিন্তু সে তো অত সহজ নয়। রামের বিকল্প খুঁজতে অপোজিশনকে ঢের কষ্ট পোহাতে হবে। যাই হোক না কেন আপনাকে ধর্মে টিকে থাকতে হবে তো। শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন জয় ধর্মেরই হয়। অতএব রামের যা ইমেজ সেই অনুযায়ী সঠিক বিকল্প খুঁজে পাওয়া সত্যিই কঠিন। ওই ভাঙাচোরা মহুয়া মৈত্র টপিক দিয়ে ভগবানকে ভোলানো সম্ভব নয়। আর বাকিদের কাছে আছেটা কী? পাপ্পু কান্ট ডান্স সে তো বহু আগেই প্রতিষ্ঠিত। পাপ্পু পায়ে হেঁটে কী আর রামচন্দ্রের সঙ্গে পেরে উঠবেন?
কিন্তু যুগ যুগ ধরে রামের এই আগ্রাসী জনপ্রিয়তার কারণ কী? শুধুই রাবণের হাত থেকে সীতার উদ্ধার? মোটেই নয়। আরো অন্যান্য সেন্টিমেন্টাল সুড়সুড়ি রয়েছে।
রাম ভালো ছেলে। কেন? না সে বাবার কথা শোনে। বনে যায়। ত্যাগের জীবন নির্বাহ করে। বউয়ের কথা শোনে না। প্রজার কথা শোনে অর্থাৎ সর্বগুণ সম্পন্ন। সেন্টিমেন্টাল ভারতবাসীর জীবনে উদাহরণ এমন হবে যা আপনি ফলো করতে থাকবেন এবং ফলো করতে করতেই মরে যাবেন কিন্তু তার সমকক্ষ হতে পারবেন না। কারণ সমকক্ষ হলে তো উদাহরণই বদলে যাবে।
তাছাড়া একই অঙ্গে এত গুণ যার থাকে, তার কোনো বাস্তব উদাহরণ থাকতেও পারে না। To err is human। তাই মানুষ যখন উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে না বা হওয়ার মতো কাউকে দেখতে পায়না বা দেখতে চায়না তখন রামেরা পাথর থেকে ভগবান হয়ে ওঠেন। অর্থাৎ রামেদের বাস্তব অস্তিত্ব ইনভ্যালিড।
এবার বাস্তব বর্জিত চরিত্র হিসাবে তাহলে রামের ভ্যালিডিটি খোঁজা যাক। সেক্ষেত্রে অনেকগুলো বাস্তব চরিত্রের সমন্বয়ে একটি রামের নির্মাণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। রাম নামের একাধিক রাজা বা প্রজা থাকতে পারে। সেইসব রামসকলের গুণাবলী একত্রীকরণ করে একটি হাই ভ্যালু দেবতা সদৃশ মানুষ কল্পনা করতেই পারেন বাল্মীকি। একটি আদর্শ পুরুষের উদাহরণ হিসেবে হয়ত তুলে ধরতে চেয়েছিলেন রামকে। বাকীটা গল্পের প্রয়োজনে অনুধাবিত। এভাবেই পরবর্তীকালের মানুষ সহজ রামায়ণের হালকা রসায়নে রামের প্রতি মুগ্ধ থেকেছেন। রামলীলা এগিয়ে চলেছে যুগ অতিক্রম করে। অবশেষে একজন যোগ্যতম বাহক সেই লীলার উপযুক্ত ব্যবহার করতে চেয়েছেন একটি দেশের মৌলিক মর্যালিটি অভিযোজিত করে রামলালার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। হ্যাঁ, তিনি রিস্ক নিয়েছেন বটে, আর এটুকু নিতেও হত। কারণ এছাড়া অন্য কোনো এক্স ফ্যাক্টর তার নেই যা দিয়ে, তিনি নিজেকে অন্ধের রাজত্বে রাজা হিসেবে খুব বেশিদিন টিকিয়ে রাখতে পারতেন। এটুকু না নিলে ইতিহাসও তৈরি করা সম্ভব ছিল না। এই প্রাণ দেওয়া নেওয়ার কর্মটি করে, মন্দির ভেঙে মসজিদ গড়ার নজিরে যারা ইতিহাসভুক্ত হয়েছেন তাদের পাশে বিপরীত ক্রিয়ায় ইতিহাস হয়ে উঠতে চলেছেন তিনি। ধর্মের কবচ পড়ে দখল নিয়েছেন। চেয়েছেন দেশের মানুষের বিশ্বাসকে হরপ করতে। কারণ বিশ্বাসে আস্কারা এবং আঘাত দুরকম অস্ত্রেরই প্রয়োগ চলে।
কিন্তু এতো সেই একই ধর্মের রাজনীতি যা আগেও হয়েছে। কী আর নতুন বিষয়? সেই সাবেক আমল থেকে এই রেকারেন্স ঘটে চলেছে। সেটা তিনি জানেন বলেই নতুন করে একটা ভয়ানক হট্টগোল না বাঁধালে মানুষ এখন আর প্রভাবিত হয়না তাও জানেন।
পাবলিসিটির আগে নেগেটিভ রাখলেও যে বিক্রেতার লাভ সে তো আমাদের রাজ্যের দিকে তাকালেই দেখতে পাওয়া যায়।
ভয়ের সঙ্গে ভক্তি মেশালে পুরোহিতের লাভ এবং মাইথোলজির সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা রাখতে পারলে রাজার লাভ। এছাড়া এখন কমেডি থ্রিলার সমভাবে জনপ্রিয়। বিষয় সিরিয়াস কিন্তু ভরপুর হাস্যরসের উপাদানসামগ্রী পূর্ণ।
সুতরাং এমন একটি ঐতিহাসিক হাস্যরসাত্মক প্রক্রিয়া চলুক যা নিয়ে মিডিয়া মোটামুটি দুতিনমাসের কভারেজ টেনে রাখবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ জনজাতি ইতিহাস পড়েন না। জনশ্রুতি তাদের বিশ্বাসের পরিকাঠামো। সেক্ষেত্রে রাম-রাবণের জাগতিক অস্তিত্ব “বেটা শো’জা নহি তো গব্বর আ জায়েগা” থিমের সঙ্গে খুব বেশি পার্থক্য রাখে না কারণ আমরা বিশ্বাসে মেলে বস্তু তত্ত্ব মানি। এই বিশ্বাস প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় একটি আলোচনায়
রোমিলা থাপার রাম প্রসঙ্গে বলেছিলেন,
“ঐতিহাসিক হিসাবে কথা বললে, রামের ব্যক্তি অস্তিত্বের ঐতিহাসিকতার পক্ষে কোনও প্রমাণ নেই। রামের উপাসকেরা রামের বহু সংস্করণগুলির মধ্যে যে কোনো একটিকে বিশ্বাস করতে পারেন কারণ এটি সম্পূর্ণ ভাবে বিশ্বাসের বিষয়৷ ঐতিহাসিকতা বা ইতিহাসের উপর এর কোনো প্রভাব নেই।”
কিন্তু এই বিশ্বাসের উপরেই এখন দেশের নির্বাচন ঝুলছে। অতএব তাকে ঘোরতর করতে নাটকীয়তার আশু প্রয়োজন। এগারো দিনের নাটকীয়তায় যৌক্তিকতা ভাসিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন। জোয়ার জাগলে তাতে কুটো, মুঠো সবই মোহনার দিকে যাবে।
এবং মনে রাখতে হবে, সেনসিটিভ ভারতবাসী চিরকাল কনফিউশনে বাঁচে। যাব কি যাব না? মানব কি মানব না? হ্যাঁ কি না? তারপরেই পাশের খাতায় উঁকি। কপি অ্যান্ড পেস্ট। হয়ে গেল। আমার পাস করা নিয়ে কথা। যা মেজরিটি করছে আমি তাই করব। নিরাপত্তা আমার বেসিক ইমিউনিটি।
খাব, ঘুমাবো, পয়সা বাঁচিয়ে সিলিন্ডারের রেস্ত জোগাব। ভাতা খুঁজব ত্রাতার কাছে। আমার অত কথায় কী যায় আসে। অযোধ্যা যাব ভ্যাকেশনে। ফটোশ্যুট করব। কপালে হলুদ চন্দন চর্চিত শ্রী রাম লিখে ছবি পোস্টাব। কী যায় আসে! এখন রাম সব অ্যালাউ করে। দিনে পূজা, রাতে খাজা। অতএব দেখার প্রয়োজন নেই যে ধর্মান্ধ অগ্রসরতা প্রকারান্তরে অনগ্রসরতাকে বহন করে। সাময়িকভাবে আমরা হিপনোটাইজড থাকছি। এই সাময়িক আচ্ছন্নতা লোকাল অ্যানেসথেসিয়ার মতো। সেই মুহূর্তের কাঁটা ছেড়া ঘা থেকে অভিব্যক্তি উধাও।
আমার দেখার দরকার নেই দেশের অর্থনীতি, অভাব অনটন। মুহূর্তে বাঁচ। এই মুহূর্ত তোমাকে কতখানি ফুটেজ দেয় সেটাই আসল খবর।
“Is Ram Mandir the real issue or unemployment and inflation?”
শ্যাম পিত্রোদার এই অভিব্যক্তি কংগ্রেসের অফিসিয়াল বয়ান না হলেও আনঅফিসিয়াল শিক্ষিত সম্প্রদায়ের স্বাভাবিক স্বগতোক্তি। যদিও কোনো উক্তিতেই তেমন কিছু যায় আসেনা। কারণ তারা বলেছেন, বাইশে জানুয়ারি এখন থেকে পনেরোই আগস্ট এর মতোই গুরুত্বপূর্ণ। অত সূক্ষ্মভাবনার তো দরকার নেই। সেভাবে দেখতে গেলে স্বাধীনতা দিবসের তখ্ত-এও হাজার ছিদ্র। বরং সেন্ট্রাল গর্ভনমেন্ট চাকুরেদের জীবনে একটা ছুটি বাড়ল। বাইশ থেকে ছাব্বিশে একটা শর্ট ট্রিপ তো হয়েই যায়, নাকি?