সুতনু হালদার-এর কবিতা
আগুনের ভাষা
মরমি বাতাসে চিনে নাও নিজেকে
এই দোয়াতভর্তি গোলোকধাঁধায় নিজেকে দ্যাখো
পৃথিবীর তোমাকে আলিঙ্গন করতে আসার
একমাত্র কারণ চিৎশক্তি
হে সচ্চিদানন্দ
অল্পস্বল্প ফল্গু মিশে থাক হৃদকমলে
বিচ্যুতিও দংশন করে
পাতা বোঝে
তুমি বোঝো না
রাইকিশোরীর থেকেও উপবাসী হও সংসারে
এসো নকশিকাঁথায় শিবের চোখ আঁকি
আগুন হয়ে উঠি…এই পৃথিবী শুধু আগুনের ভাষা বোঝে
ভাবনা
সেই অভিমান আজও গোধূলির আলোকেই প্রেমিক ভাবে
নিতান্ত সহজ না হ’লে
গাছের ছায়া মাখো
জটিলতা এক সরীসৃপ সংক্রমণ
তুমি শেকড়ে চুমু খেলে
অস্তিত্ব ক্রমশ তালুবন্দী হয়
এই খিদেই তাহলে প্রকৃত যৌন-সন্ন্যাস
ভালোবাসা
সিগারেটের নিঃস্ব ধোঁয়া পোড়া তামাককে
আজীবন নিজের প্রেমিকা ভাবে
ক্ষুধার্ত স্বপ্ন
স্পর্শের মতো হলেও ক্ষতি নেই
দু’চারটে বর্ণ যখন নিজেই যুক্ত হয়
সেটাও তো সহবাস
গাছ বা পাতার মতো
জোটবদ্ধ অবস্থান
কাঠুরের দৃষ্টিতে তবুও সেই প্রদীপের সলতে…
ক্ষণজন্মা আলোতে চেঁছেপুঁছে
নদী হতে চাও
অস্পৃশ্য ভাবাবেগের ক্ষুধার্ত স্বপ্ন
চলো
পাখিদের কাছে একটা মায়াবী সকাল ধার করি;
শিশির ভেজা ধানের শীষে প্রজাপতি বসুক ঘুমের বেশে;
এসো
শিশুর মতো ছুঁয়ে দেখি…
একটা সাজানো ষড়যন্ত্র
যেখানে এখনও মৃত জ্যোৎস্নারা জীবন্ত হয়ে যায়
বাইরে গান হচ্ছে ‘কতদিন দেখিনি তোমায়…’
কয়েকটা বীজধান উপহার দিলাম তাঁকে
সঙ্গে দিলাম দু-একটা মেঘ
গানটা থামলে মন গেয়ে ওঠে
‘মেনেছি গো হার মেনেছি…’
আমাদের গা বেয়ে গড়াচ্ছে রক্ত, শুধু রক্ত।
ওরা বদ রক্ত নয়, একেবারে তাজা;
হারতে হারতে জীবন কখন যেন ম্যাজিশিয়ান হয়ে
অবিকল জিততে শিখে যায়…
আর একটু তর্জমা হোক মরুঝড়ে
চলো, কিছুক্ষণ ধাত্রী হয়ে পৃথিবীকে আদর করি
আর দেরি করে লাভ নেই
শুধু একলব্যই দ্রোণের ভিক্ষাপাত্রের
দৈন্যতাকে গোগ্রাসে চিনতে পেরেছিল…
আটকে থাকাও প্রবঞ্চনা
নদীর স্রোতও প্রেম খুঁজে যায়
পিছিয়েছ তো কয়েকটা পা
এগোও এখন প্রবাহ কালের
ঘাই হরিণীর ছদ্মবেশে
স্মৃতি মাঝে মশাল জ্বেলে
মেঘ মোছা ওই আঁচলখানি
বৃষ্টি ঝরাক অগোছালো
আপন খেয়াল নির্নিমেষে
ত্রিশঙ্কুর এই মায়াজালে
আটকে থাকাও প্রবঞ্চনা