
বর্ণালী কোলে
কাব্য বিবর্জিত কবিতা
(১)
“আচ্ছা মা,তুমি বসে আছ কেন?খেয়ে নাও।রাত হচ্ছে। ”
“কী করে খাব, বল।তুই কেমন করে আছিস।”
মেয়ে সন্ধে থেকে খাটে শুয়ে।মাথা গুঁজে,চোখ গুঁজে।কষ্টের ছোবল। চাবুকে চাবুকে
তোলপাড়
স্নায়ু।
অদূরে জননী
গর্ভযন্ত্রণা নতুন করে অনুভব করছেন চল্লিশ পার হওয়া মেয়েকে দেখতে দেখতে
(২)
জীবনে আমি এত বোকামো করেছি, এখন ভাবলে আশ্চর্য হয়ে যায়।মানুষ তো অতীত পাল্টাতে
পারে না।ভাবি,মানুষের মোহমুক্ত চোখ পেতে কত যুগ সময় লাগে।
মাঝেমাঝে মনে হয় আমি বোধহয় মৃতই ছিলাম।পাশাপাশি বয়েছিল একটি চেতন সত্তা।
কষ্ট সহ্য করে মাথার মধ্যে কেমন ব্যথা। ইচ্ছে করে নিশ্চিন্তে একটু ঘুমোই।
(২)
একটি খড়্গ।যা দিয়ে জীবন আমাকে কেটেছিল।অদৃশ্যে অনেক
দর্শক।মদ্যপান সহযোগে সেই দৃশ্য উপভোগ করেছিল।ধড়ের ও মুন্ডের নড়ে নড়ে ওঠা।মৃত্যু আজকাল দর্শনীয়।
স্নায়ুর জোর বাড়ায়।
খড়্গ।যা এখনও শূন্য প্রান্তরে পড়ে।তার গায়ে আমার রক্ত।
এখনও তাজা।
(৩)
সবাই ঘাপটি মেরে বসে।কে যে কখন এ কে ফর্টি সেভেনের মতো ফুলের শুভেচ্ছা পাঠাবে।ফুল ভেবে
খুশি হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই অতর্কিতে দেখতে
পাবে বন্দুকের নল।তোমাকে,তোমাকেই হত্যা করবে একটি অট্টহাস্য।
হাসির শব্দ ছিল ঠিক হায়েনার মতো। বদমায়েশি বুদ্ধিতে তার মস্তিষ্ক পোকারা ভনভন। মাছির মতো
হিসেব নিকেশ নষ্ট করে
তাহার হৃদয়
(৪)
অতিরিক্ত কষ্টের মধ্যে থাকলে শরীরের মধ্যে কামনার
কুন্ড তৈরি হয়।ধিকিধিকি জ্বলে। বাকি পেশী সহ্য শিখন
করে ব্যথায় মূক।স্থির হয়ে থাকা শরীরের মধ্যে রাক্ষুসীর
নৃত্য। এত আগুন নিয়ে কী করবে? দহন-ই নিয়তি তার।
প্রেমিকেরা এখন সব অলঙ্ঘনীয় দূরত্বে।
বিজ্ঞাপনের হাতছানি সে দূরে সরিয়ে রাখে।
মনেমনে ভাবে দাহ-এর পর চামড়ার অন্তরালে লুকানো মনের,শরীরের
রঙ পোড়া কয়লার মত হয়?
হয় না,হতে পারে না।
এই আর্তনাদ শুনে নেওয়ার পর হৃদয়ের
মধ্যে দেখে সে গোলাপকানন ।
(৫)
আপনার কথা মাঝেমাঝে ভাবি। দেখার চেষ্টা করি আপনাকে।তেমন তো চিনি না।বুঝতে পারি না।
ভিতরে অপার স্তব্ধতা ।অন্ধকার। ফুল ফুটুক।ছোট,ছোট ফুল।
আপনাকে লেখা সব মেসেজই কবিতা?জানি না।এরপর কী?এরপর।চুপ হয়ে আছি।পাখি ডাকছে।
পাখির ডাক শুনে মনে হচ্ছে আজ হয়তো রৌদ্রকরোজ্জ্বল সকাল। কদমবৃক্ষে অজস্র কদম।ওদের ভীরু
চোখ।
ডিঙি নৌকো
আপনি, কাশফুল..!?