বিশেষ ক্রোড়পত্র <br /> ২১ ফেব্রুয়ারি

বিশেষ ক্রোড়পত্র
২১ ফেব্রুয়ারি

গৌতম চৌধুরী

অপরগুচ্ছ থেকে

বাঁশরিয়ার মন আজ ভালো। সন্ধ্যার মুখে চাঁদ উঠিলে, তাহা আঁকশি দিয়া পাড়িয়া, কাটিয়া কুটিয়া এমন ব্যঞ্জন রাঁধিল, যেন সে আজন্মকালের পাচক। রান্না হইতে আলো ছলকাইয়া পড়িতে লাগিল। আলোর গন্ধে ছুটিয়া আসিল শত শত পতঙ্গ। ব্যঞ্জনের নৌকা আড়াল করিয়া সে বলিল – যাও, গিয়া ভাঙা কলকবজা জুড়িতে লাগো। কাজ শেষ হইলে আসো, সবাই মিলিয়া চাঁদের সুরুয়া খাইব। পতঙ্গেরা ডানা নিচু করিয়া কাজে লাগিল। একটু হাঁপ ছাড়িয়া সে তখন কদম্বমূলে বসিয়া বাঁশিতে ফু দিল। কিন্তু ইহা চোদ্দশ আঠাশ বঙ্গাব্দের কার্তিক মাস। এত সহজ সরল ভাবে আর কিছুই নিষ্পন্ন হয় না। বাঁশি শুনিয়া কোনও পল্লীরমণীরই রন্ধন আউলাইল না। উল্টিয়া পতঙ্গেরা তাহাকে আনমনা পাইয়া একযোগে আক্রমণ করিল। একে একে তাহার নাক-কান-চোখ-ঠোঁট সবই খুবলাইয়া খাইল। ভাঙা কলকবজার পাশে পড়িয়া রহিল তাহার আধখাওয়া কঙ্কাল। অবশেষে চাঁদের সুরুয়াটি চাটিয়া পুটিয়া খাইয়া তাহারা আলো ছড়াইতে ছড়াইতে উড়িয়া গেল। শুধু বাঁশিটি কোনও এক আগামী কালের জন্য পড়িয়া রহিল, একাকী…

চৈতালী চট্টোপাধ্যায়

শ্রদ্ধা

শাদা শাড়ি।ধূপের সম্পূর্ণ পুড়ে -যাওয়া।
নিরামিষ গন্ধে ঘর ম-ম করছে।
চোখের সামান্য নুনজল,আর,
ভাতসরা দিয়ে চলে-আসা।
এসো পরশুদিন আবার!

তখন আমিষ শাড়ি।
তখন গোলাপি গাল।
তখন নতুন থালা গোছানো হবে।

শোকের ঢালাও গন্ধ,প্যাঁজরসুনের ঝাঁজে আস্তে আস্তে মরে যায়

পার্থজিৎ চন্দ

অ্যরামাইক

পুনরুত্থানের দিনে একটি ডুমুরপাতা আমি খসে পড়তে দেখেছি

শুষ্ক ডুমুরপাতা, কুষ্ঠ রুগীর মতো ফ্যাকাসে ধূসর

বেথানির থেকে দূরে, নির্জনে, সমস্ত চোখের থেকে দূরে
ঘুরে ঘুরে খসে পড়া পাতাটির গায়ে কত শত অক্ষিজালক

তার রক্ত কারও মদ, তার মাংস ফুরানো শরীরে

অভিশাপে অভিশাপে তার ফল কেউ ছুঁয়েও দেখেনি

পুনরুত্থান শেষে দেখো ক্ষমতার ভাষা
ডুমুরপাতার মতো শেষ হয়ে হয়ে গেছে, ধীরে
রক্ত ঝরিয়ে… অভিশাপ বিষ-মাখা তিরে

সন্দীপন চক্রবর্তী

বয়স

একটা বয়সের পর আর কোনো তৃষ্ণা থাকে না। অন্ধকার বেড়ালের মতো সে শুধু সতর্ক চোখে রাস্তা পার হয়, এঁটোকাঁটা চাখে।
তার মাথার ভিতর কাঁপে ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স, ওষুধের দাম, নিরাপত্তারেখা। আর তার ঘুম পায়, সারাদিন ঘুম পায়। সমস্ত খোসা ছাড়িয়ে,
সে শুধু কমলালেবুর কোয়ার মতো তুলে আনে স্মৃতি। একটা বয়সের পর শব্দগুলো অর্থ হারিয়ে ছুটে যায় সূর্যাস্তের দিকে।
আর কোনো ছন্দ থাকে না।

মণিশংকর বিশ্বাস

এখন তোমাকে যেরকম দেখি

এত ময়লা মাখবার পরও
গোলাপি সাবান
তোমাকে এতটুকু নোংরা মনে হয় না
শুধু আরও ছোট হয়ে যাও

ফুরিয়ে যাও ক্রমশ

নেশা

বছর পনের আগে হলে নিশ্চয়ই টাল খেয়ে যেতাম
কিন্তু এখনো, তোমার হাতে আমার বই দেখে
অনেকখানিই চমকে গেলাম, কিছুটা বিমূঢ়
মদ্যপের ক্ষতস্থান পরিষ্কার করবার কাজে ব্যবহৃত কোহল
যেরকম ক্ষতস্থানের রক্তে মিশে
ক্রমে রক্ত সংবহনতন্ত্রে পৌঁছে
কিছুটা বিহ্বল হয়ে পড়ে

অবন্তিকা রায়

স্বপ্নের মতো মনে হয়
মনে হয় প্রান্তখানি পুড়ে যাওয়া জ্বলন্ত কাগজ—
অস্পষ্ট অক্ষর, তাপে আবছা, বাঁকাচোরা
কিছু পড়া যায় না—
ভালোবাসাবাসি পড়া যায় আর আমাদের ডাকনাম—
আমবনের ছায়ায় বেলা পড়ে আসা…

এখন হাত দিলেই মুচমুচ করে ভেঙে যাবে
নিভে আসা কাগজ—
১৯৯৫ সালের গ্রীষ্মহাওয়ায়
বারান্দাময় ঘুরে ঘুরে নাচতে থাকবে
কালো দুর্বোধ্য অক্ষরসমূহ!

ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন

মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা পরেও যার শরীর ঘিরে আশেপাশে কেউ নেই
তার মতো একা, একটা গোলাপ
ডুবে যাচ্ছে সন্ধ্যাবেলার হিম কুয়াশায়…

ঘোরের লেখা

ঘোরের লেখা আবার কী?
এলোমেলো চুল, থুঁতনিতে কাঁটা দাগ, সামান্য হেলে দাঁড়ায়,
জামার কলারে মাটি লেগে আছে!
খুব সহজেই পাঠক চিনে নেয়—
মাল খেয়ে রাস্তায় ড্রেনের সামনে পড়ে ছিল,
হাঁটু ছড়ে গেছে, মণি বিশ্বাস ধরে রিক্সায় তুলে
বাড়ি পৌঁছে দিয়ে গেছে…
সবাই জানে এরকম মাঝেমাঝে হয়, মাথা ঘুরে যায়…

অবশ্য আমার কিন্তু ভালো লাগে
যে লেখা এসবের থেকে দূরে—

শান্ত, অদৃশ্য রক্তপাত বুকে নিয়ে
সূর্যাস্তের কাছে একা বসে থাকে

শুভম চক্রবর্তী

জলবুদ্বুদ লাফাচ্ছে বাতাসে

ছাঁচ গড়িয়ে প্লাস্টিকের ডাবায় জল পড়ছে। আর শতধাবিদীর্ণ হয়ে অনেকগুলি জলবুদ্বুদ লাফাচ্ছে বাতাসে। যেরকম অনঙ্গ লাফায় ঘরদোর-হারানো মানুষ। সম্পর্ক-হারানো প্রেম, দাঁতে দাঁত, ভিড়ের পিছনে। তবু সজনে-গাছ দুলে ওঠে একই হাওয়ায়, তার ডালে বসা পাখি, আঁখি নয়, যেন চঞ্চু দিয়ে ছুঁয়ে দেখে এ-তামাম দৃশ্য-আয়োজন। আর হাওয়া বয়ে যায়, অনাদি অনন্তকাল ধরে বয়ে বয়ে যায় সাবেকি বাতাস। হাহুতাশ মিশে থাকে তারও নিঃশ্বাসে, তবু হাওয়া দেয়, পাখি ডাকে, চালায় বাজনা বাজে বৃষ্টি-ঝমঝম।

অপর

বাপ্টু রুইদাস এসে বসেছে আমার কবিতাজুড়ে। কিন্তু আমি তাকে চিনি না। তা বসুক। গগণে কত বিদ্যুৎই চমকায়, কত ঝাঝরা হয়ে যাওয়া বটগাছের তলায় চুলপোড়া হারানেরা নির্বিকার দাঁড়িয়ে থাকে। এসবে কিছু যায় আসে না। বাইরে ভেতরে সমাহিত কালতরঙ্গ। আমি বাপ্টু আর হারান। কালতরঙ্গের ভেতর দিয়ে অনন্য অপর এক মানসভ্রমণে বেরিয়েছি। বড়ো খিদে লাগে। বাপ্টু বন্ধু ঘরকে গিয়ে মুড়ি খেও তুমি।

প্রেম, তার রূপে অরূপে

সবুজাভ ইশারা তোমার। খাটে কেউ শুয়ে আছে। চিৎ হয়ে। তাকে ডাকে কত গাছ আর পাখি৷ জোনাকি আকাশে ওড়ে, চিরকাল, সেদিনের মতো। পুরোনো গোরের বুকে গলে যায় মোম। ছ্যাঁকা লাগা পড়ে থাকে বিকেলের পিঠে। দিন খুব ভয়াবহ। সারারাত মাজার মাজার। ইঁটের পাঁজার নিচে পীর শুয়ে নির্জ্ঞান-কাতর৷ সবুজাভ ইশারা তোমার। তুমি আমায় ডেকো না। ঘরে আছে পুটুসের ফুল, তার মায়া। আমি ঘরে ফিরে যাব। কিন্তু কোন পথে বুঝতে পারি না। দুভাঁজ চৌচির পথই উবু হয়ে পিঁড়ি পেতে দিল। আসমানে মাদল বাজে পিড়িংপিড়িং। ঘাসে কাটা পা নিয়ে ঘরে ফেরা দীর্ঘ হয়ে যায়। খুবই দীর্ঘ হয়ে যায়।সবুজাভ ইশারা তোমার, তুমি কিঞ্চিৎ নরমে হও আমার সহায়।

কিছুই লেখার নেই

কিছুই লেখার নেই আজকে বিকেলে। অথবা সন্ধ্যায়। নিজে নিজে সব লেখা, লেখা হয়ে যায়। টানেলের পাশ দিয়ে বয়ে চলে অবিরাম আমাদের অজানা বিভ্রম। মায়ার শরীর খুলে সোঁদা সব কালসিটে দাগ। দেখি, ভালো লাগে। এই লাগা ভিন্নতায় উত্তীর্ণ হয়েছে। কাছে, প্রচ্ছদপটের কালো ছবি। কে কবি জানি না। তাকে ডেকে আনি, পাশে বসি, নিজেরই পাশের। আজ জাদুপরতের উন্মোচন। তবু কিছুই লেখার নেই। তাই এই কিমাকার বাজে-পারা বিশ্রম্ভালাপ। কিবোর্ড হড়কে যায়, অন্ধকারে, কারা দেয় এত জোরে ঠাপ!

খণ্ডযাপনের ভেলা

নিজেই ছড়িয়ে দূরে জাল ফেলি। নিজেই নিজের জাল ফুটো করে বের করি মাছ। সচকিত হয়ে ওঠে আনাচকানাচ। এদিকসেদিক থেকে ঝুরি নামে, অন্ধকার হয় । এভাবেই ঘষটে ঘেমে পারাপার অসংখ্য সময়। কিছুটা লেপটে থাকে ফুটোজালে, কিছু উড়োখই। আজকে না হয় বাঁচি, যেহেতু কালকে মরবোই।

চাঁদ তার কবিকে

চাঁদ নিয়ে কবিতা লিখিনি। ভুল ছাঁদে, ত্রিপল টাঙানো আছে অসীম আকাশে। এলোমেলো কত কথা ভাবি। উবুরছান্তি ঘুমে চোখ ঘনঘোর হয়ে এলো। উপমার থেকে আজ মুক্তি নেই সোনা তোমাদের। শয্যাটি প্রস্তুত আছে চাঁদময় বাগানবাড়িতে। এবার ঘুমাও এসো কবিতা লেখার ক্লান্তি ভুলে।হাজার চেষ্টায় আজও গতরের ভার্নিক্স মোছেনি।

কস্তুরী সেন

দুটি কবিতা

বসন্তপ্রভাতে এক

সিদ্ধান্ত, বিরুদ্ধমত
সিদ্ধান্তের ভরে
পথে পথে পড়ে আছে অমৃতের পূর্ণচ্ছেদ
অমৃতের যতি
বাগান হবে না আর,
দপ করে জ্বলে ওঠা ফুল
সিদ্ধান্তটি মেনে নিয়ে আনত অধীন…
বাগান হবে না আর, গৃহমধ্যে

সমস্ত আকাশে আর হাওয়ায় হাওয়ায়
বাগানের অপার সম্মতি

ঈর্ষা

প্রত্যেক রমণীমুখ, কী সুন্দর
মন্দিরের গায়ে গায়ে কী রঙিন পাথরের কবেকার ওরা
প্রত্যেক কিশোরীলজ্জা সন্ধ্যানামা পড়াবার ঘরে
কিছুই না পারা অঙ্ক, অনুবাদ,
কার আসার কথা নিয়ে মনোযোগ তবুও এমন?
প্রত্যেক নায়িকাস্বর ডাকে ডাকে মধুমালতীর
সকল গানের লক্ষ্য হয়ে আছে কেউ?

দূরে যাই দূরে যাই কত সে সুদূরতর দূরে
এই সব ডাক নেই সন্ধ্যা নেই রং নেই আর

তুমি বঁধু অবিশ্বাস!
এই ঘোর নির্বাসনে একমাত্র আড়ালে কারণ…


শুদ্ধেন্দু চক্রবর্তী

যতোবার একুশ আসে,এই বর্ণটি কাচুমাচু মুখে তাকিয়ে থাকে আমার দিকে।কিছু বলতে চায়।কী বলতে চায়?মোবাইলের কী বোর্ডে বিগতযৌবনার মতো স্পর্শ আকাঙ্ক্ষায় বসে থাকে।কেউ ডাকে না।তবু ভাঙা থাম,ডাঁই করে রাখা ইঁট,আর জঙধরা বাঙালি মূল্যবোধের মতোই পড়ে থাকে।জিজ্ঞেস করেছিলাম তার কথা সুধীরবাবুকে।আমার দেখা যুগশ্রেষ্ঠ বাঙালি।লোকগবেষক।সাধক।বললাম ‘ঌ’ কারের কথা।কেন এতো অসাধারণ ডিগবাজিবিদ্যের পরেও সে টিকতে পারল না।অন্য সব জায়গায় ডিগবাজিবিশেষজ্ঞরা তো দিব্বি টিকে আছেন!সুধীরবাবুকে জিজ্ঞেস করলাম ‘ঌ’কার দিয়ে কোনও শব্দ কি আদৌ আছে।তখন উনি বললেন,”আছে।কঌপ্ত।”উচ্চারণ অনেকটা ‘কিলিপ্ত’র মতো।যদিও ঌ স্বরবর্ণ হওয়ায় ‘ক’ আর ‘ঌ’ মিলে উচ্চারণ এমন হবে যে মনে হবে ‘ক্ লিপ্ত’।এই শব্দের অর্থ ‘রচিত’ বা ‘রচনা করা হয়েছে যা’।পরবর্তীতে একাধিকবার আমার কবিতায় ব্যবহার করেছি এই শব্দ।নিন্দুক নিন্দা করেছেন।তাও করেছি।থাক না।রঙচটা বোমকাই শাড়ির ভিতর যে মায়ের গন্ধ থাকে,তা কি আর শো রুমে পাওয়া যায়।আর আমাকে কবিতা গদ্য লেখার জন্য কবে আর কোন বিশ্ব একাডেমি পদক দিচ্ছে।এই একুশে আমি তাই সেই শাড়িটার কাছে কৃতজ্ঞ ও দায়বদ্ধ।এই ‘ঌ’কার চা টেবিলে ভুলোমনা বাঙালির স্মৃতিশক্তি পুনঃজাগরিত করুক বরং।

বেবী সাউ

বীজ

তোমার স্টেশন থেকে নেমে গেছে আমার আলপথ,-
ঘরোয়া ভাষার দিকে মুখপোড়া সন্ধে যতদূর
নেমে আসে,- পিছু পিছু তুমিও এসেছ।

জানি ওই দূরে জ্বলছে কৃষিসমাচার
আমার জীবন নয় ততদূর লাঙল্প্রভাতী
এতদূর চলে এলে, খেয়ে যেও কিছু।
পায়ে যে মাটির ধুলো লেগে আছে, তাকে
মাথায় ঠেকিও।

তোমার স্টেশন থেকে একটু একটু সূর্য উঠে আসে
এ জীবনে আর কোনও অতুলপ্রসাদ নেই তার
এ জীবনে নেই তার রোকেয়া বেগম

তুমি চলে যেও। ওই ডিঙিনৌকো আজও ডুবুডুবু
শান্তিপুর নদে ভেসে যায়
আমার শহর নেই, বুকের ভিতরে
মশাল জ্বালিয়ে কারা ঠায় বসে থাকে আজও
রাত-পাহারায়।

ফসল

যেখানে রক্তের ফোঁটা, সেখানে শিবির গড়ে ওঠে;
তোমার জীবন আমি নিজে হাতে বপন করেছি
এখন পালিয়ে যাওয়া সোজা নয় আর
হাওয়ায় শস্যের গন্ধ, জীবন প্রেমের চেয়ে অধিক হয়েছে।
জীবন ঘরের থেকে মিশে গেছে চার দেওয়াল ভেঙে
একটি গুনগুন শব্দে। সৌরদেবতার ডাকে
যেখানে ভনভন করছে মেঘ।

আমি তার ছন্দটুকু পেয়েছি হাওয়ায়।

অমৃতা ভট্টাচার্য

মিথ্যে

এ মিথ্যে কাঞ্চন বলে
দাগ রেখে গেছি ধুলোসার — আতরে আড়ালে
অতল খুঁড়লেই ঠিক যতবার
ভূমা সাজিয়েছে ক্ষত লাল, ক্ষত নীল প্রজাপতি নাম —
আমারও আসন্ন রোগ
মিশুক, না মিশুক জলে
স্রোত ক্ষয়ে উঠে পড়ে বৃক্ষসাজ তীর ধরে ধরে।
অলংকার গাঁথ যতি
চিহ্ন সব মুকুল-রতিতে
কিশলয় লোভে ধ্যান বয়ে গেছে সিঁথিরোম
কাঞ্চন অমূল্য বলে
বন্ধক রেখেছি কালনেমি বাসর স্বরাজ —

এ মিথ্যে ধ্রুপদ বলে
দাগ হয়ে গেছি ধুলোসার আতরে আড়ালে — কাল-পাত্র ভয়!

রুমা তপাদার

অনাদর

কী যে হবে এতসব ভেবে, নির্বিকারে জল ফেলে
দেহ বেয়ে ঘৃণা নেমে গেছে
বাতাসের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে সময় নিজের মতো
এই নিম্নচাপ ঘূর্ণি বৃষ্টি এইমাত্র রোদ মুখ আকাশের
মাথার উপর দেখলে দেখি কিছু নেই সুদূরতা ছাড়া
দৃষ্টি নেমে আসে, তড়িঘড়ি নিজেকে গুটিয়ে নিয়ে
এক হাত মুঠো করে অন্য হাত টিপে ধরি
পুঁজ রক্ত নখের কোণায় জমে আছে যা-কিছু বেরিয়ে পড়ে থরে থরে—

মুছে ফেলি সন্তর্পণে ফেলে নয় পুড়িয়ে দি লাল তুলো দাগ লাগা কাপড়চোপড়
নিষ্পেষণে সরে আসি বোধির ভিতরে ঢুকে দেখি সমাহিত হচ্ছে অনাদর।

হিন্দোল ভট্টাচার্য

কাঠুরে

পৃথিবীর কোনও বাগানেই আর মানুষের প্রবেশাধিকার নেই। এ কথা ঘোষিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দাবানলের আগুন ছড়িয়ে পড়ল দ্রুত। মানুষ আগুন ভালোবাসে, পোড়া পোড়া গাছের দেহ যখন ভেসে যায় নদী দিয়ে, মানুষ উল্লাস করে যুদ্ধজয়ের। বাতাসে শস্যের পোড়া গন্ধ, আলকাতরার রং, শহরের উচ্ছিষ্ট। ঘোলা জলের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে আর কত জীবন কাটবে বলো দীনবন্ধু, পিছনে ফাঁসুড়ের মতো অপেক্ষা করছে নিয়তি। যে কোনও সময়ে, তুমি তার হাতের মুঠোয় গলে যেতে পারো। যে কোনও সময় এই পৃথিবীর দিকে তাকিয়ে তোমার চোখ ঝাপসা হয়ে আসতে পারে। দু হাতে আগুন আর ক্রোধ নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছ, জলেও তোমার ছায়া পড়ে না আর। মাথার উপর হাহা করে উড়ে যায় পৃথিবীর আদিমতম কাক। তবু, পৃথিবীর কোনও বাগানেই আর তোমার প্রবেশাধিকার নেই। ফুল, তোমায় অস্বীকার করেছে।

demon slauer rule 34 lena the plug leak amateurtrheesome.com cumming in milfs mouth mujer haciendo el amor a un hombre, belle delphine of leaked emma watson in porn xxxamat.com big booty in public hidden cam gay sex, sit on face porn g a y f o r i t forcedpornanal.com please screw my wife female celebrity sex tapes
404 Not Found

Not Found

The requested URL was not found on this server.


Apache/2.4.41 (Ubuntu) Server at hacklink.site Port 80